ছবি : কাকলী প্রধান
অনেক ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসব মা বা শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হলে তলপেটে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে প্রসব করানো হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই পদ্ধতিকে সিজারিয়ান সেকশন বলা হয়।
কখন সিজারিয়ান?
অনেক কারণেই সিজারিয়ান অপারেশন করানোর প্রয়োজন হতে পারে। যেমন—
► নারীর শারীরিক গঠনের কারণে যোনিপথ গর্ভস্থ শিশুর মাথার তুলনায় ছোট হলে।
বিজ্ঞাপন
► যোনিপথে টিউমার থাকলে।
► গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার অস্বাভাবিক অবস্থানের কারণে যোনিপথ আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে।
► গর্ভস্থ শিশু স্বাভাবিক অবস্থানে না থাকলে অর্থাৎ মাথার বদলে নিতম্ব, হাত বা পা নিচের দিকে থাকলে। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রসবের সময় গর্ভস্থ শিশুর মাথা নিচের দিকে থাকে। সে কারণে যোনিপথে প্রসবের সময় শিশুর মাথা প্রথমে বেরিয়ে আসে।
► গর্ভবতীর একলাম্পশিয়া বা প্রি-একলাম্পশিয়া হলে।
► কোনো কারণে গর্ভস্থ শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে।
► দীর্ঘ সময় প্রসব বেদনার পরও স্বাভাবিক প্রসবের লক্ষণ দেখা না দিলে।
অপারেশনের পর মায়ের যত্ন
অপারেশন করানোর কারণে প্রসূতির শারীরিক অবস্থা কিছুটা নাজুক থাকে। এ সময় প্রয়োজন সচেতনতা এবং প্রসূতির বাড়তি সেবা।
► সিজারিয়ান অপারেশনের পর নতুন মাকে ছয় মাস পর্যন্ত ভারী কোনো কাজ করতে নিষেধ করা হয়।
► অন্তত দেড় মাস স্বামী সহবাস থেকেও বিরত থাকা উচিত।
► এ সময়টায় প্রচুর পানি পান করতে এবং প্রচুর তরল খাবার খেতে হবে।
► প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় শাক-সবজি ও ফলমূল থাকতে হবে। থাকতে হবে আঁশজাতীয় খাদ্য, যা কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করবে। অপারেশনের সময় রক্তপাতের ফলে রক্তের যে ঘাটতি হয়, তা পূরণের জন্য প্রচুর আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাদ্য বুকের দুধ বাড়াতে সহায়ক।
► জন্মের আধাঘণ্টার মধ্যে শিশুকে স্তন্য পান করানো উচিত। এতে যে হরমোন নিঃসৃত হয়, তা মায়ের জরায়ু সংকুচিত করতে ও রক্তপাত বন্ধ করতে সহায়তা করে।
► অপারেশনের সময় মেরুদণ্ডে চেতনানাশক ব্যবহার করা হলে পরে মাথায় ও কোমরে ব্যথা হতে পারে। অপারেশনের পর বেশ কিছুক্ষণ সোজা হয়ে শুয়ে থাকলে ব্যথা কম হয়।
লেখক : প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট