<p>গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা একটি পরিচিত সমস্যা। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি চারজনের মধ্যে তিনজন গর্ভবতী নারী কোমর ব্যথায় ভোগেন। সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষ দিকে, বিশেষ করে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। মায়ের জরায়ুর যে পাশে বাচ্চা অবস্থান করে, সেদিকে ব্যথা বেশি অনুভূত হয়।</p> <p>গর্ভাবস্থায় কোমরে এ ধরনের ব্যথা অনেকের জন্য মারাত্মক সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে।</p> <p>করণীয়</p> <p>গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথায় বড় কোনো ক্ষতি না হলেও মা ও অনাগত সন্তান উভয়ের জন্য চরম বিরক্তিকর। তাই অবহেলা না করে নিয়ম মেনে চলা উচিত। এ জন্য কিছু করণীয় হতে পারে—</p> <p>►  গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা দূর করার কার্যকর উপায় হলো ব্যায়াম, যা নিজের পেশি শক্তিশালী করার পাশাপাশি গর্ভস্থ সন্তানকে বহন করার শক্তি জোগায়। গর্ভবতী নারীদের শ্রেষ্ঠ ব্যায়াম হলো হাঁটা, সাঁতার কাটা এবং সম্ভব হলে ধীরে ধীরে সাইকেল চালানো। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন।</p> <p>►  স্ট্রেচিং ব্যায়াম করলে কিছুটা ভালো ফল পাওয়া যেতে পারে। তবে এ ধরনের ব্যায়াম যেন দ্রুত এবং বেশি করা না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ব্যায়ামের সময় ব্যথা বা অন্য কোনো অসুবিধা মনে হলে ব্যায়াম বন্ধ করে দিতে হবে।</p> <p>►  ব্যথার স্থানে গরম ও ঠাণ্ডা সেঁক দিলে কিছু সময়ের জন্য ব্যথা থেকে পরিত্রাণ মেলে। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রথমে দু-তিন দিন ব্যথাযুক্ত স্থানে ২০ মিনিট করে ঠাণ্ডা কম্প্রেস, এরপর কয়েক দিন একই স্থানে গরম কম্প্রেস প্রদান করতে পারেন। তবে গর্ভাবস্থায় পেটে কখনো এ ধরনের কম্প্রেস করবেন না।</p> <p>►  গর্ভাবস্থায় মেরুদণ্ডের ওপর বেশি চাপ পড়ে এবং অতিরিক্ত ওজন বহন করতে হয়। তাই যখন বসে বসে কাজ করবেন, তখন একটি ছোট তোয়ালে বহন করুন এবং তা ব্যথার স্থানে লাগিয়ে রাখুন। যতক্ষণ বসে থাকবেন ততক্ষণ সোজা হয়ে থাকার চেষ্টা করুন। এতে ভালো চড়ংঃঁত্ব বজায় থাকবে, যা ব্যথা উপশমে কাজে দেবে।</p> <p>►  গর্ভবতী মায়েরা সাধারণত ঝুঁকে থাকেন, এতে মেরুদণ্ডের ওপর আরো চাপ পড়ে। মাঝে মাঝে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন, যাতে ঘাড় পেছনের দিকে থাকে। বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না; কিছুক্ষণ পর পর বসে বিশ্রাম নিন।</p> <p>►  বাঁ পাশ ফিরে শোয়ার চেষ্টা করুন। এতে মেরুদণ্ডের ওপর চাপ যেমন কমবে, তেমনি দেহে রক্তপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে না। ঘুমানোর সময় দুই পায়ের মাঝে বালিশ ব্যবহার করতে পারেন, যাতে ওপরের পায়ের ভর বালিশে পড়ে। পেটের নিচেও বালিশ ব্যবহার বা পিঠের দিকে বালিশ দিয়ে সাপোর্ট দিতে পারেন।</p> <p style="text-align: right;"><strong>লেখক : চিফ কনসালট্যান্ট</strong></p> <p style="text-align: right;"><strong>ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতাল</strong></p> <p style="text-align: right;"><strong>ধানমণ্ডি, ঢাকা।</strong></p>