<p>রোজায় খাদ্যাভাস নিয়ে মানুষের মনে কিছু ভ্রান্ত ধারণা আছে, যেগুলো সঠিক নয়। লিখেছেন ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টার, বাড্ডা শাখার পুষ্টিবিদ <strong>উম্মে সালমা তামান্না</strong></p> <p> </p> <p><strong>ভুল ১ : সাহরি শেষে তাড়াহুড়া করে বেশি পানি পান করা।</strong></p> <p>দিনের বেলায় পানির পিপাসা না লাগার জন্য অনেকেই সাহরি শেষ করে আজান দেওয়ার আগে তাড়াহুড়া করে অতিরিক্ত পানি পান করে পেট ভরিয়ে ফেলেন। এতে পরে বমি বমি ভাব, পেশি দুর্বল ও ক্লান্তি লাগে।</p> <p>তাই সম্ভব হলে ফজরের আজানের আধাঘণ্টা আগেই সাহরি খাওয়া শেষ করুন। এরপর পেট সামান্য খালি রেখে আজানের আগ পর্যন্ত অল্প অল্প করে পানি পান করুন। এই সময় দই খেলে সারা দিন পিপাসা লাগে না বা শরীর পানিশূন্য হয় না।</p> <p> </p> <p><strong>ভুল ২ : রোজা রেখে ওয়ার্ক আউট বা ব্যায়াম করা যায় না।</strong></p> <p>এ কথা মোটেও ঠিক নয়। আমরা যখন রোজা রাখি তখন আমাদের মেটাবলিক ফুয়েল আসে শরীরে যে ফ্যাট জমা থাকে সেখান থেকে। তাই যাঁরা ওভার ওয়েট বা ওবেসিটিতে ভুগছেন, তাঁরা রোজার অ্যাডভান্টেজ নিতেই পারেন।</p> <p>এ জন্য ইফতার বা সাহরির আগে হালকা ওয়ার্ক আউট বা ব্যায়াম করুন। তবে ভারী ব্যায়াম নয়। এতে ফিট থাকা যাবে।</p> <p> </p> <p><strong>ভুল ৩ : ঋতুস্রাবে রোজা রাখতে না পারলেও না খেয়ে থাকা।</strong></p> <p>মাসিক চলাকালীন অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে সাহরি খান এবং সারা দিন রোজা রাখেন। এই সময় খাওয়াদাওয়া ঠিকমতো করা উচিত। না খেয়ে থাকলে বরং রক্তশূন্যতা, পানিশূন্যতা, ভিটামিন, মিনারেলের অভাব ইত্যাদি দেখা দিতে পারে।</p> <p>ঋতুকালীন রোজা রাখা নয়; বরং অন্যান্য দিনের মতো স্বাভাবিক খাওয়াদাওয়া করুন। বেশি বেশি শাকসবজি, ফলমূল খান ও প্রচুর পানি পান করুন।</p> <p> </p> <p><strong>ভুল ৪ : রোজা রাখলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়ে।</strong></p> <p>শুধু পেপটিক আলসারের রোগীদের রোজা রাখতে একটু সমস্যা হতে পারে। তবে নন-আলসার ডিসপেপসিয়ায় ভোগা রোগীদের রোজা রাখতে বাধা নেই। কয়েক দিন খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কারণে বুক, গলা জ্বলা, পেট ফাঁপা, বমি বমি ভাব হতে পারে। কিন্তু আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে, যদি স্বাস্থ্যসম্মত আহার করা হয়। সারা দিন পাকস্থলী খালি থাকার পর ইফতারে ভাজাপোড়া, তৈলাক্ত, মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে পাকস্থলীতে এসিড উৎপন্ন হয়, এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়ে।</p> <p>তাই ইফতারে ভাজাপোড়া যেমন—বেগুনি, পিঁয়াজু, চপ ও অতিরিক্ত মিষ্টিজাতীয় খাবার নয়। আবার খুব ভারীও নয় অথবা হালকা খাবারও নয়। ফল বা ফলের জুস, সবজি খেলে সমস্যা হয় না।</p> <p> </p> <p><strong>ভুল ৫ : অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, মিষ্টি শরবত বা সফট ড্রিংকস দিয়ে রোজা ভাঙা।</strong></p> <p>অনেকেই ইফতার শুরু করেন অতিরিক্ত ঠাণ্ডা, মিষ্টি শরবত বা সফট ড্রিংকস দিয়ে। এতে বরং হিতে বিপরীত হয়। সারা দিন পাকস্থলী খালি থাকায় শুরুতেই অতিরিক্ত ঠাণ্ডা বা মিষ্টিজাতীয় কিছু খেলে দ্রুত পেট ভরে যায়। পরে অন্য কিছু তেমন খেতে ইচ্ছা করে না। অন্যদিকে ঠাণ্ডা শরবত বা সফট ড্রিংকস অনেক সময় হজমের ক্ষমতা কমিয়ে পেটে ব্যথার অনুভূতি তৈরি করে।</p> <p>তাই ইফতারের শুরুতে খেজুর ও নরমাল পানি পান করা উচিত। অন্যান্য খাবার খেয়ে এরপর  শরবত পান করলে ভালো। তবে খুব বেশি ঠাণ্ডা এমন শরবত নয়।</p> <p> </p>