ভারতের কংগ্রেসশাসিত রাজ্য রাজস্থানের উদয়পুরে হিন্দু সম্প্রদায়ের দরজি কানাইলালকে (৪৮) হত্যার নিন্দা করেছেন দেশটির মুসলিম নেতারা। এ হত্যাকাণ্ডকে ‘ইসলামবিরোধী’ ও ‘দেশবিরোধী’ আখ্যা দিয়েছেন তাঁরা।
ঘটনার নিন্দা জানিয়ে জমিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা হাকিমুদ্দিন কাশমি বলেন, ‘যেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটাক, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। এটি দেশের আইন ও ধর্মের (ইসলাম) বিরুদ্ধে।
বিজ্ঞাপন
ইসলামের মহানবীকে (সা.) নিয়ে কটূক্তি করায় ভারত ও ভারতের বাইরে বিজেপির সাময়িক বরখাস্ত মুখপাত্র নূপুর শর্মার তুমুল সমালোচনা হচ্ছে। উদয়পুরের ওই দরজি তাকে সমর্থন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়েছিলেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ জন্য তাঁকে আটকও করা হয়েছিল। এমন প্রেক্ষাপটে খদ্দেরের বেশে দোকানে আসা দুই ব্যক্তি মঙ্গলবার বিকেলে তাঁকে ছুরিকাঘাতে খুন করেন।
হত্যাকাণ্ডের পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায় স্বীকার করে ভিডিও পোস্ট করা দুই ব্যক্তি রিয়াজ আক্তারি ও মোহাম্মদ গউসকে ঘটনার পরদিন গতকাল বুধবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, দায় স্বীকারের ভিডিওতে তাঁরা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও হুমকি দেন। এর বাইরে আরো তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছেন। বিষয়টিকে সন্ত্রাসী হামলা বিবেচনা করে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে (এনআইএ) এ ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সমালোচনা করে আজমির শরিফ দরগাহর প্রধান জয়নুল আবেদিন আলি খান বলেন, ভারতের মুসলিমরা কখনোই দেশে ‘তালেবানি মানসিকতাকে’ গ্রহণ করতে পারে না। অন্যদিকে রাজধানী দিল্লির শাহি জামে মসজিদের ইমাম সৈয়দ আহমেদ বুখারি এই হত্যাকে ‘কাপুরুষোচিত’ ছাড়াও ‘ইসলামবিরোধী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।
অল ইন্ডিয়া মজলিসে ইত্তেহাদুল মুসলেমিন (এআইএমআইএম) দলের নেতা আসাদউদ্দীন ওয়াইসি হত্যার নিন্দা করে বলেছেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া ঠিক নয়। তিনি সব ধর্মেরই চরমপন্থা ঠেকানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, এ ক্ষেত্রে জয়পুরসহ রাজস্থানে অতীতের ঘটনাও বিবেচনায়ও নেওয়া উচিত।
এদিকে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলতের মন্ত্রিসভার সদস্য রাজেন্দ্র সিং যাদব দাবি করেছেন, গউছ মোহাম্মদ পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী সংগঠন থেকে ২০১৪-১৫ সালের দিকে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন। রাজস্থান পুলিশের দাবি, গউস পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন ‘দাওয়াতে ইসলামের’ সঙ্গে যুক্ত।
সূত্র : এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া