জো বাইডেন
ইউক্রেনে হামলা চালানো থেকে রাশিয়াকে নিবৃত্ত করার বিষয়ে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে ‘সম্পূর্ণ’ ঐক্য ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে পেন্টাগন বলেছে, ন্যাটোর শক্তি বাড়াতে সম্ভাব্য মোতায়েনের জন্য তারা সাড়ে আট হাজার সেনা প্রস্তুত রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সেনা প্রস্তুত রাখার বিষয়ে রাশিয়া গতকাল মঙ্গলবার অভিযোগ করে বলেছে, ইউক্রেন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলছে। প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, এরই মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
এদিকে রাশিয়ার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গতকাল তারা ৬০টি যুদ্ধবিমান ও ছয় হাজার সেনা নিয়ে ইউক্রেন সীমান্ত ও মস্কো অধিভুক্ত ক্রিমিয়ার কাছে মহড়া চালিয়েছে। যুদ্ধের প্রস্তুতি পরীক্ষার জন্য তারা এ মহড়া চালিয়েছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, লড়াইয়ের এ মহড়া চলবে। বিমান, ক্ষেপণাস্ত্র ও নৌ—সব বিভাগের মহড়া অনুষ্ঠিত হবে রাশিয়ার অধিভুক্ত ক্রিমিয়া এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় রস্তভ ও ক্রাসনোদার অঞ্চলে। প্রতিরক্ষামন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে রুশ বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, গতকাল যুদ্ধবিমান নিয়ে বিমান সেনারা আকাশপথে সর্বোচ্চ দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার অনুশীলন করেছে।
ইউক্রেন গতকাল জানিয়েছে, তারা তাদের সীমান্ত এলাকায় রাশিয়ার নিয়ন্ত্রিত নাশকতাকারীদের ধারাবাহিক হামলার পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছে। ইউক্রেনের নিরাপত্তা সংস্থা এসবিইউ এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা শহরের স্থাপনাগুলোতে ‘ধারাবাহিক সশস্ত্র হামলার’ পরিকল্পনা করেছিল। এসবিইউ ইউক্রেনের দুই নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের একজন রাশিয়ার নাগরিক। এ ছাড়া আগ্নেয়াস্ত্র, বিস্ফোরক ডিভাইস ও গোলাবারুদ জব্দ করা হয়েছে।
বাইডেন গত সোমবার ইউরোপ ও ন্যাটো জোটের নেতাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা ২০ মিনিটের ভিডিও কনফারেন্স শেষ করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘অত্যন্ত ভালো বৈঠক হয়েছে। ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আমরা সম্পূর্ণ একমত। ’ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের কার্যালয় বলেছে, নেতারা রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান শত্রুতামূলক আচরণের মুখে আন্তর্জাতিক ঐক্যের গুরুত্বের বিষয়ে একমত হয়েছেন।
গতকাল বরিস জনসন বলেন, ‘ইউক্রেনে আক্রমণ চালালে রাশিয়াকে এমন পশ্চিমা অবরোধ মোকাবেলা করতে হবে, যা অতীতে কখনো হয়নি। ’ তিনি বলেন, ‘আমরা একমত হয়েছি যে ইউক্রেনে হামলা হলে আমরা তীব্র ও সমন্বিত অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করব, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যা আমরা আগে কখনো করিনি। ’
ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গ ইউক্রেনে মস্কোর আর কোনো আগ্রাসন হলে ‘গুরুতর মূল্য’ দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে চরম উত্তেজনার মধ্যে বাইডেন গত সোমবার ইউরোপীয় মিত্রদের সঙ্গে কথা বলার উদ্যোগ নেন। এর আগে সোমবারই যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে বলেছিল, যেকোনো সময় রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করে বসতে পারে।
পশ্চিমা নেতারা ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সেনা মোতায়েনের বিষয়ে কিভাবে সাড়া দেওয়া যায়, তা নিয়ে আলোচনা করেন। সূত্র : এএফপি