<p>ইয়েমেনের দুর্গম এবড়োখেবড়ো দীর্ঘ রাস্তা পাড়ি দিয়ে অবশেষে মানুষগুলো এসে থামল এক নির্জন পর্বতমালার পাশে। বছরের পর বছর ধরে চলা দেশটির গৃহযুদ্ধকে পেছনে ফেলে দেশটির বাস্তুহারা নাগরিকরা এ জায়গাকেই নিজেদের স্বর্গ বলে মেনে নিল। তিন বছর আগেই তারা তাদের আশ্রয় হারিয়েছিল দেশটির সরকারি বাহিনী ও হুতি বিদ্রোহীদের সঙ্গে চলা সংঘর্ষে। ইয়েমেনের সাদা প্রদেশের সৌদি সীমান্তে চলা এ যুদ্ধ তাদের সর্বস্বান্ত করে ছেড়েছে।</p> <p>ইয়েমেন মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম দরিদ্র একটি দেশ। দেশটিতে কয়েক বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে ঘরবাড়ি হারিয়ে কয়েক ডজন পরিবার গাধার পিঠে নিজেদের শেষ সম্বলটুকু তুলে নিয়ে দেশটির আরো উত্তরে নিরাপদ জায়গার সন্ধানে ছুটেছে। স্নাইপার ও বোমা হামলার ঝুঁকির মধ্যেই তারা পথ পাড়ি দিয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত হামলার ন্যূনতম আওয়াজ পাওয়া গেছে, ততক্ষণ পর্যন্ত যাত্রা থামায়নি তারা। দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার পর যখন তারা নিশ্চিত হলো আর কোনো হামলার আওয়াজ নেই, তখন তারা নিজেদের দেখতে পেল আল-আজহার সীমান্তে। সেই উপত্যকাই হলো তাদের নতুন ঠিকানা।</p> <p>ইয়েমেনের সাদা প্রদেশের রাজেহ জেলার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘যুদ্ধের কারণে তাদের পালিয়ে আসতে হয়েছে। একটি নিরাপদ জায়গা তাদের খুঁজতে হয়েছে। এই উপত্যকাকে তারা তাদের সেই নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নিয়েছে। যদিও জায়গাটি বসবাসের জন্য একেবারেই অনুপযুক্ত। কঠিন পরিস্থিতিই তাদের এখানে থাকতে বাধ্য করছে।’</p> <p>অস্থায়ী তাঁবু তৈরি করে এ উপত্যকায় নারী-শিশুসহ সাত শরও বেশি ঘরহারা ইয়েমেনি নাগরিক বাস করছে। পাশের নোংরা পানিভর্তি ডোবাই এখন তাদের খাবার পানির একমাত্র উৎস।</p> <p>২০১৪ সাল থেকে ইয়েমেনে এই যুদ্ধ পরিস্থিতি চলছে। যুদ্ধে নিহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ। আর দেশটির লাখ লাখ মানুষ দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। সংঘাতে ঘর ছেড়েছে দেশটির ৪০ লাখ নাগরিক। দেশটির মোট তিন কোটি জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশই মৌলিক চাহিদা মেটাতে নির্ভর করে অন্যান্য দেশের সহায়তার ওপর। সূত্র : এএফপি।</p>