<p>যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের নতুন ভোট আইনকে পাশবিক উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আইনটি যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ওপর আঘাত। বর্ণবাদী একটি পুরনো আইনের সঙ্গে এই আইনের মিল রয়েছে এবং এটি কৃষ্ণাঙ্গদের উদ্দেশ করেই প্রণয়ন করা হয়েছে। গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।</p> <p>এর আগে গত বৃহস্পতিবার জর্জিয়ার রিপাবলিকান নিয়ন্ত্রিত হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ও সিনেট—দুই চেম্বারেই নতুন কিছু বাধা-নিষেধ অন্তর্ভুক্ত করে ভোট আইনটি পাস হয়। ‘দ্য ইলেকশন ইন্টিগ্রিটি অ্যাক্ট অব ২০২১’ নামের ৯৮ পৃষ্ঠার এই আইনে অঙ্গরাজ্যের আইন প্রণেতাদের আরো বেশি ক্ষমতা দেওয়া এবং ভোটকেন্দ্রে লাইনে দাঁড়ানো ভোটারদের পানি ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করার মতো বেশ কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।</p> <p>শুক্রবারের বিবৃতিতে নতুন আইনকে ১৯ শতকের শেষ এবং ২০ শতকের শুরুর দিকে আফ্রিকান-আমেরিকানদের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার খর্ব করতে প্রণীত ‘জিম ক্রো’ আইনের সঙ্গে তুলনা করেন বাইডেন। তিনি বলেন, নতুন আইন একই সঙ্গে অসুস্থ ও ঘৃণ্য। যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে রিপাবলিকানদের পাস করা অন্য আইনগুলোর মতোই সংবিধানের ওপর নির্লজ্জ আঘাত এটি। একই সঙ্গে আইনটি নৈতিকতার ওপরও আঘাত হেনেছে। জর্জিয়ার নাগরিকদের ভোটাধিকারকে সম্মান জানানোর বদলে অঙ্গরাজ্যটির রিপাবলিকানরা এমন একটি আইন নিয়ে এনেছে, যা একেবারেই আমেরিকানসুলভ নয় এবং মানুষের ভোটাধিকার খর্ব করে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ২০২০ সালেই সবচেয়ে বেশি মানুষ ভোট দিয়েছে উল্লেখ করে বাইডেন বলেন, জর্জিয়ার এই আইনের ব্যাপারে বিচার বিভাগ ‘দৃষ্টি দিচ্ছে’।</p> <p>জর্জিয়ার কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের একত্রিত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে প্রশংসিত স্টেসি আব্রামসও নতুন আইন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, আইনটি জিম ক্রো আইনের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়। অলস লোকেরাই শুধু দমননীতির মাধ্যমে ভোটে জেতার চেষ্টা করে। সত্ভাবে জিততে না পারলে তারা নিয়ম পাল্টে দেয়, মানুষকে নিয়ে খেলে। তবে নতুন আইন স্বাক্ষরের পর বৃহস্পতিবার জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প বলেছেন, এসব বিধি-নিষেধ ভবিষ্যতের নির্বাচনগুলোকে নিরাপদ, নিরপেক্ষ ও সহজ করবে। </p> <p>গত বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে প্রায় তিন দশক পর জর্জিয়ায় ডেমোক্র্যাট প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করেন বাইডেন। সিনেট নির্বাচনেও দুই রিপাবলিক প্রার্থীকে হটিয়ে দুই ডেমোক্র্যাট জন ওসোফ ও রাফায়েল ওয়ার্নক জয়লাভ করেন। কিন্তু ট্রাম্প অভিযোগ করেন, করোনা পরিস্থিতিতে মেইলের মাধ্যমে ও আগাম ভোটের যে ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল, তাতে জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। সে জন্যই জর্জিয়ায় হারতে হয়েছে তাঁকে। সূত্র : এএফপি।</p>