<p>মাত্র ৩০ বছর বয়সে ডেলাওয়ারের সিনেটর হিসেবে হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুই ছেলের পাশে দাঁড়িয়ে শপথ নেন জো বাইডেন। তিনি ওই দুর্ঘটনাতেই হারিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী ও এক বছর বয়সী কন্যা নাওমিকে। কিন্তু এই আঘাত বাইডেনকে থামিয়ে দিতে পারেনি। তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, দুই দফায় ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দুবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রার্থিতায়। এবারও আছেন তিনি তৃতীয়বারের মতো। হাল না ছাড়া এ বান্দা শুরুতে পিছিয়ে পড়লেও এখন প্রার্থিতার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে।</p> <p>হোয়াইট হাউসের লড়াইয়ে মঙ্গলবার প্রতিদ্বন্দ্বী ভারমন্টের সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সকে আরেক দফা নাকানিচুবানি খাইয়েছেন তিনি। পাঁচটি রাজ্যে প্রাইমারি ছিল মঙ্গলবার। এর মধ্যে তিনটি রাজ্য মিসৌরি, আইডাহো ও মিসিসিপিতে জয় পান বাইডেন। বাকি দুটি নর্থ ডেকোটা ও ওয়াশিংটনে জিতেছেন স্যান্ডার্স।</p> <p>বাইডেন অবশ্য শুরু থেকেই ডেমোক্রেটিক পার্টির এস্টাবলিশমেন্টের পছন্দের প্রার্থী। স্বঘোষিত সমাজতন্ত্রী স্যান্ডার্সকে নানা কারণেই দল মনোনয়ন দিতে চায় না। যদিও বাইডেনের এ যাত্রার শুরুটা খুব সুখের হয়নি। আইওয়া, নিউ হ্যাম্পশায়ার ও নেভাডায় স্যান্ডার্সের কাছে ধরাশায়ী হন তিনি। সে সময় ধরে নেওয়া হয়, এ যাত্রায়ও আর সফল হচ্ছেন না বাইডেন। কিন্তু সাউথ ক্যারোলাইনার প্রাইমারিতে রীতিমতো গর্জন করে ফিরে আসেন তিনি। গত ৩ মার্চ সুপার টিউসডেতে ১৪টি রাজ্যের মধ্যে ১০টির সমর্থনই আসে তাঁর ঝুড়িতে।</p> <p>মঙ্গলবার জয় নিশ্চিত হওয়ার পর দেওয়া এক ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘যাঁরা এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বের হয়ে গেছেন, হেরে গেছেন, পিছিয়ে পড়েছেন তাঁদের জন্যই এই প্রচার। আমরা এখন মূল প্রতিযোগিতার আরো কাছে। হোয়াইট হাউসের হারানো মর্যাদা ও সম্মান উদ্ধার করব আমরা। আমাদের লক্ষ্য একটাই, একসঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পরাজিত করা।’ স্যান্ডার্স অবশ্য পরাজয়ের পর এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।</p> <p>বাইডেনের পথচলা কখনোই মসৃণ ছিল না। ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থিতার ইচ্ছা ছিল তাঁর। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এর আগের বছর তাঁর বড় ছেলে বিউ বাইডেন মাত্র ৪৬ বছর বয়সে ব্রেন ক্যান্সারে মারা যান। পুত্র শোকে প্রার্থিতার ইচ্ছা প্রত্যাহার করেন তিনি। আর এবার তাঁর সম্মানে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান ইন্ডিয়ানার সাউথ বেন্ডের সাবেক মেয়র পিট বুটিজাজ। সম্মান দেখাতে কার্পণ্য করেননি বাইডেনও। এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘বুটিজাজকে দেখলে আমার ছেলে বিউয়ের কথা মনে পড়ে।’</p> <p>বাইডেনের আরেক ছেলে হান্টারও অবশ্য অত্যন্ত আলোচিত চরিত্র। সম্প্রতি ইউক্রেনকাণ্ডের মূলেই ছিলেন তিনি। বিষয়টি প্রেসিডন্টে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিশংসনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায়। ১৯৪২ সালে জন্ম নেওয়া বাইডেন ১৯৭৭ সালে আবারও বিয়ে করেন। সেখানে তাঁর একটি মেয়েও রয়েছে। ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে তিনি ইউক্রেন ও ইরাকবিষয়ক পররাষ্ট্র সংকটগুলো নিয়ে কাজ করেন। সমকামী অধিকার ও সেমসেক্স বিয়ের ব্যাপারে প্রকাশ্যে সমর্থন জানান তিনি। সূত্র : এএফপি।</p>