পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি রয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা ইমরান খান। তিনি জেলবন্দি অবস্থায় দেশটির সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে দলের নেতাদের উদ্দেশ করে বলেছেন, জেলে তাঁর বা তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবির কিছু হলে সে জন্য দায়ী করতে হবে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরকে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে একটি পোস্টে এমন অভিযোগ করেছেন ইমরান খান।
ইমরান খান বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাবন্দি।
এক্স-এ পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, ‘গত কয়েক দিনে আমার সঙ্গে জেলে যে আচরণ করা হচ্ছে, তা আরো তীব্র হয়েছে। আমার স্ত্রীর ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। তাঁর টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের সব মৌলিক অধিকার স্থগিত করা হয়েছে।’
ইমরানের দাবি, আসিম মুনির এসব কিছুর নেপথ্যে রয়েছেন। তাঁর নির্দেশেই জেলের মধ্যে অত্যাচারের শিকার হচ্ছেন সস্ত্রীক ইমরান। ইমরানের বক্তব্য, ‘প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন আইএসআই প্রধানের পদ থেকে আমি মুনিরকে সরিয়ে দিয়েছিলাম। এর পরেই পিটিআইয়ের জুলফি বুখারির মাধ্যমে বুশরা বিবির সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করলেও তা প্রত্যাখ্যান করে দিই আমি।
বুশরা বিবির মাধ্যমে আমাকে চাপ দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মুনির। ইমরানের দাবি, এর পর থেকেই মুনিরের ক্ষোভ গিয়ে পড়ে বুশরা বিবি এবং তাঁর ওপরে।’
তিনি পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আমি সারাজীবন জেলে কাটাতে পারি, কিন্তু কোনোভাবেই অন্যায় এবং অত্যাচারের কাছে মাথা নত করব না। পাকিস্তানের নাগরিকদেরও বলছি, অন্যায়কে মাথা নিচু করে মেনে নেবেন না কোনো অবস্থাতেই।’
এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) কেন্দ্রীয় তথ্যসচিব শেখ ওয়াকাস আকরাম বলেছেন, ইমরান খানকে দিনে ২২ ঘণ্টা একা একটি ছোট কক্ষে আটকে রাখা হচ্ছে।
তাঁকে কোনো পত্রিকা, টেলিভিশন বা বই পড়তে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি তাঁর আইনজীবী ও পরিবারের সদস্যরাও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ইমরান খানের সঙ্গে এই আচরণকে অমানবিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন ওয়াকাস আকরাম। তিনি বলেছেন, এটা এক ধরনের মানসিক নির্যাতন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ছয়জন নির্ধারিত ব্যক্তির সঙ্গে ইমরান খানের দেখা করার অধিকার থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি ও বোন আলিমা খানও তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না বলেও জানান তিনি। আদালতের নির্দেশনা লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে আকরাম বলেন, এভাবে আদালতের আদেশ উপেক্ষা করা মানে বিচারব্যবস্থাকে অবমাননা করা। সূত্র : ডন, এনডিটিভি