<p>সরকারের আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফল বাগান থেকে আপেল তোলা বন্ধ করে দিয়েছেন ভারত অধ্যুষিত কাশ্মীরের কৃষকরা। ফলে বাগানে পচে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার আপেল। এসব আপেল রপ্তানি করে প্রতিবছর ভারত প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে থাকে।</p> <p>কাশ্মীরের জমি উর্বর হওয়ার কারণে এখানে প্রচুর আপেল হয়। আপেল উৎপাদনের সঙ্গে এ অঞ্চলের অন্তত অর্ধেক জনগোষ্ঠী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িত। কাশ্মীরের কেন্দ্রীয় শপিয়ান জেলার এ রকম একটি আপেলবাগানের মালিক গোলাম নবী। তিনি জানান, তিনি ও তাঁর ভাই মিলে ভারতজুড়ে বছরে সাত হাজার বাক্সের মতো আপেল বিক্রি করে থাকেন। এর বাজারমূল্য প্রায় এক লাখ রুপি। কিন্তু এ বছর পাকা আপেলের ভারে গাছ নুইয়ে পড়লেও বাগান থেকে আপেল তুলছেন না তিনি।</p> <p>এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘এগুলো গাছেই পচুক। আমি এই ত্যাগটুকু করতে প্রস্তুত আছি। বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিবাদের এই একটি হাতিয়ারই আমাদের আছে।’</p> <p>তিনি আরো বলেন, ‘যদি আমরা অন্যান্যবারের মতো আপেল তুলে বিক্রি করি, তাহলে ভারত সরকারের কথাই সবাই বিশ্বাস করবে। বিশ্ববাসী ভাববে যে কাশ্মীরে সব কিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে।  কিন্তু এখানে কিছুই স্বাভাবিকভাবে চলছে না।’</p> <p>এদিকে ফল বাগানের মালিকদের আপেল উৎপাদন বা বিক্রি না করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি বিলি শুরু করেছে বিদ্রোহীরা। বিভিন্ন মসজিদের দেয়ালেও এসংক্রান্ত পোস্টার সাঁটিয়ে দিয়েছে তারা। স্থানীয় বিদ্রোহী নেতার স্বাক্ষর করা এ রকম একটি পোস্টারে লেখা ছিল, ‘আপেল উৎপাদনকারী ও ছাত্ররা এই বছর ত্যাগ স্বীকার করার জন্য প্রস্তুত আছে। তাদের কেউ শহীদদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে না।’</p> <p>আপেল চাষের সঙ্গে যুক্ত বেশির ভাগ কৃষকই এ ব্যাপারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে একমত বলে জানিয়েছেন। যাঁরা একমত হচ্ছেন না, তাঁদের অনেক ক্ষেত্রে বিদ্রোহীদের তোপের মুখে পড়তে হচ্ছে। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার কারণে এক ফল বাগান মালিকের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। তবে বাগান থেকে আপেল না তোলার কারণ বিদ্রোহীদের ভয় নয় বলে এএফপিকে জানিয়েছেন বাগান মালিকরা।</p> <p>এদিকে আপেল বিক্রির পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত সরকার। তারা আপেল চাষিদের নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করার ও সরাসরি তাদের কাছ থেকে আপেল কেনার  আশ্বাস দিয়েছে। সরকারের দাবি, তাদের এ আশ্বাসে কাজ হচ্ছে। সূত্র : এএফপি।</p> <p> </p>