<p>ভারতের নয়াদিল্লিতে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) দপ্তরে রাহুল গান্ধীর নেমপ্লেট থাকা ঘরের সামনে বসেছে সোনিয়া গান্ধীর নাম। দপ্তরে এখন রাহুলের কোনো ঘর নেই। তবে সভাপতি থাকার সময় রাহুল যা যা করতে চেয়েছিলেন, সে কাজে হাত দিলেন সোনিয়া।</p> <p>শনিবার কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির সভার সিদ্ধান্ত মতে রাহুলের জায়গায় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন সোনিয়া গান্ধী। তবে তা ‘আপাতত’। ওয়ার্কিং কমিটির বিবৃতিতে জানানো হয়, এআইসিসি নতুন সভাপতি নির্বাচন না করা পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে কাজ চালাবেন সোনিয়া।</p> <p>লোকসভা ভোটে বিপর্যয়ের পর ২৫ মে কংগ্রেস সভাপতি পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন রাহুল। এরপর আড়াই মাস ধরে দলের বড়-মেজো-সেজো-ছোট নেতারা তাঁর মত বদলের চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। রাহুল রাজি হননি। শুধু তা-ই নয়, জানিয়ে দিয়েছেন—সভাপতি হবেন না তাঁর বোন প্রিয়াঙ্কাও। তখন সোনিয়াকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। তিনিও সাড়া দেননি। তবে শেষ পর্যন্ত দলের প্রবীণ-নবীন সব পর্যায়ের নেতাদের চাপে দলের এই সংকটকালে সোনিয়া দলের হাল ধরতে রাজি হন। হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন নেতারা।</p> <p>কংগ্রেসের এক সূত্র জানাচ্ছে, রাহুলের ইচ্ছাকে গুরুত্ব দিয়ে এরই মধ্যে দলে দায়িত্ব পর্যালোচনা শুরু করেছেন সোনিয়া। কংগ্রেসে ‘এক ব্যক্তি, এক পদ’ প্রথা চালু করা নিয়েও ভাবনাচিন্তা করছেন। সভাপতি হওয়ার পর রাহুল চেয়েছিলেন তরুণদের নিয়ে দল গড়তে। কিন্তু কয়েক মাস পরেই তাঁকে বলতে হয়েছিল, কাজে লাগানো হবে প্রবীণদের অভিজ্ঞতাও। লোকসভা ভোটের বিপর্যয়ের পর রাহুলের কাছে স্পষ্ট হয়, দল এখনো প্রবীণদের দখলেই। কংগ্রেসের একাধিক নেতার মতে, ইস্তফা দেওয়ার পর রাহুল দেখেন, প্রবীণদের একাংশ দলের রাশও হাতে নিতে চাইছে। শেষ মুহূর্তে সনিয়ার হাতে দল যাওয়ায় সেই চেষ্টায় আপাতত জল ঢালা গেছে। যদিও সনিয়া অন্তর্বর্তী সভাপতি হওয়ায় কংগ্রেসে প্রবীণদের মুখে ফের হাসি ফুটেছে।</p> <p>কংগ্রেসের খবর, প্রথম বৈঠকেই সোনিয়া স্পষ্ট করে দিয়েছেন, দলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে। কোনো অবস্থায়ই দলের ভেতরের খবর যেন বাইরে না যায়। এর জন্য বৈঠক চলাকালে মোবাইল ফোনও বাইরে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। এর পরই এমন নেতাদের নাম নিয়ে তিনি বসেছেন, যাঁদের একাধিক দায়িত্ব রয়েছে। যেমন—গুলাম নবি আজাদ রাজ্যসভায় বিরোধী দলনেতা, আবার সাধারণ সম্পাদকও বটে। হরিয়ানার দায়িত্বও রয়েছে তাঁর। কমল নাথ মধ্য প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যের সভাপতি। দলের এক নেতার মতে, ‘সচিন পাইলটও রাজস্থানের উপমুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সভাপতি। স্বয়ং সোনিয়াই সংসদীয় দলের প্রধান এবং দলেরও সভানেত্রী। তবে দলে সোনিয়ার দায়িত্ব সাময়িক। ফলে পর্যালোচনা করে তিনি কী সিদ্ধান্ত নেন, সেটাই দেখার।’</p> <p>কংগ্রেসের এক নেতা আবার জানান, কোনো আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব না থাকায় এখন খোলা মনে কাজ করতে পারবেন রাহুল। কেরালায় নিজের কেন্দ্রে বন্যার ত্রাণব্যবস্থা খতিয়ে দেখেছেন। এবার রাজীব গান্ধীর মতোই কর্মীদের চাঙ্গা করতে পদযাত্রায় বেরোবেন। প্রথমে ঠিক ছিল, তা শুরু হবে ২ অক্টোবর। কিন্তু রাহুলের টিম এখন রাজীবের জন্মদিন, ২০ আগস্ট থেকে পদযাত্রা শুরুর কথা ভাবছে। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।</p>