<p>রাজধানী ঢাকার বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে মৃত ব্যক্তিদের বেশির ভাগেরই ‘এক্সটার্নাল বার্ন’ (বাহ্যিক দগ্ধ) কম ছিল। কার্বন মনোক্সাইডের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রোগীদের শারীরিক অবস্থা বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. তানভীর আহমেদ এ তথ্য জানান।</p> <p>স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেনও গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, বেইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে মারা যাওয়া প্রত্যেকের কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া হয়েছিল। একটা বদ্ধ ঘরে যখন তারা বের হতে পারেনি তখন ধোঁয়া তাদের শ্বাসনালিতে চলে গেছে। যাদের বেশি হয়েছে, তারা বাঁচতে পারেনি। আবার জীবিতদের কেউই শঙ্কামুক্ত নয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায়, কার্বন মনোক্সাইড হলো বর্ণহীন, গন্ধহীন, স্বাদহীন গ্যাস, যা বাতাসের তুলনায় হালকা। মানুষসহ সব মেরুদণ্ডী ও অমেরুদণ্ডী হিমোগ্লোবিক প্রাণীর জন্য এটি বিষাক্ত। কার্বন মনোক্সাইড মানুষের অজান্তে খুব সহজেই শ্বাসের সঙ্গে ফুসফুসে চলে যায়। সেখানে গিয়ে ব্যাপন প্রক্রিয়ায় রক্তে ঢোকে। এরপর রক্তের হিমোগ্লোবিনের সঙ্গে একটি জটিল যৌগ তৈরি করে। এর ফলে অক্সিজেন বহুরূপে কাজ করতে পারে না, শ্বাসকষ্ট হয় এবং হৃদরোগে আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।</p> <p>ডা. তানভীর আহমেদ বলেন, ‘আমাদের এখানে ১০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে একজন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি। বাকিরা ‘পোস্ট অপারেটিভ সেন্টারে’ রয়েছে। তাদের এক্সটার্নাল বার্ন মারাত্মক নয়। তবে সবার শ্বাসনালি পুড়ে গেছে এবং ‘ইন্টার্নাল বার্ন’ হয়েছে। সবার অক্সিজেন সেচুরেশন ভালো রয়েছে। তবে ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পার না হলে বোঝা যাবে না। তারা প্রত্যেকে কার্বন মনোক্সাইড ‘ইনফেল’ (গ্রহণ) করেছে। এটি মারাত্মক বিষাক্ত। এটি ইন্টার্নাল অর্গানগুলোকে (অভ্যন্তরীণ অঙ্গ) নষ্ট করে দেয়। অক্সিজেন গ্রহণে বাধা দেয়। ফলে যতক্ষণ না এই গ্যাস বের হচ্ছে রোগীরা শঙ্কামুক্ত নয়। আমরা স্পটে যাদের মৃত পেয়েছি তাদের এক্সটার্নাল বার্ন খুব বেশি ছিল না।’</p>