পুষ্টিতথ্য, ক্যালরি-৭৫
উপকারিতা
ডাবের পানিকে বলা হয় পটাসিয়াম, সোডিয়াম, গ্লুকোজ, বিভিন্ন ভিটামিন ও অন্যান্য খনিজ লবণের ভাণ্ডার। ডাবের পানি দেহে পানিশূন্যতা রোধ করে, ইলেকট্রলাইট ব্যাল্যান্স ঠিক রাখে, ক্রিমিনাশক হিসেবে কাজ করে, প্রস্রাবজনিত রোগ, ডায়রিয়া, আমাশয় ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বেশ উপকারী। এই শরবতে রয়েছে ডাবের পানির সব গুণ। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ফলের এন্টি-অক্সিডেন্ট গুণ, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজমশক্তি বৃদ্ধি করে, ত্বক সুন্দর ও মসৃণ রাখে এবং চুলের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে। এ শরবতটি বাচ্চা, বৃদ্ধ ও বিশেষভাবে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বেশি উপকারী।
অপকারিতা
অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে রক্তের সুগার লেভেল ও ওজন বৃদ্ধি পায়। তা ছাড়া স্ট্রোক রোগীদের জন্য এই শরবতটি উপযুক্ত নয়।

গাজর বিটের শরবত
উপকরণ
গাজর ১টি, বিট ১টি, আদা কুচি ১ চা চামচ, লবণ আধা চা চামচ, পুদিনা পাতা কুচি ১ চা চামচ, বিট লবণ ১ চিমটি, লেবুর রস ২ চা চামচ, কাঁচা মরিচ ছোট ১ টুকরা, পানি ১ কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. গাজর ও বিট ভালোভাবে ধুয়ে, খোসা ফেলে ছোট ছোট টুকরা করে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভাপিয়ে নিন।
২. এরপর ব্লেন্ডার জগে একের পর এক ভাপানো গাজর ও বিট, পুদিনা কুচি, কাঁচা মরিচ, আদা কুচি ও পানি একসঙ্গে ব্লেন্ড করে নিন।
৩. মিশ্রণটি ছেঁকে নিয়ে তাতে লবণ, বিট লবণ, গোলমরিচ ও লেবুর রস দিয়ে তৈরি করে নিন ব্যতিক্রমী এই শরবত।
পুষ্টিতথ্য, ক্যালরি-৬৫
উপকারিতা
বিটে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’, ‘বি’, ফলিক এসিড, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ক্যান্সার প্রতিরোধ করে, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বাড়ায় এবং দেহের ক্লান্তি ভাব দূর করে। অন্যদিকে গাজর দেহে ভিটামিন ‘এ’ তৈরি করতে সহায়তা করে। লিউকেমিয়াসহ অন্যান্য ক্যান্সারের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। এ শরবতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং দেহে পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে।
অপকারিতা
অতিরিক্ত পরিমাণে এ শরবত গ্রহণ করলে মল ও প্রস্রাবের রং গোলাপি বা লাল হয়ে যেতে পারে। কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।

টমেটোর কুদরতি শরবত
উপকরণ
মাঝারি আকারের টমেটো ২টি, রসুন ৪ কোয়া, গোলমরিচ গুঁড়া এক চিমটি, লবণ ১ চা চামচ, পানি আধা কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. টমেটো ভালো করে ধুয়ে ছোট করে কেটে নিন।
২. একটি পাত্রে কাটা টমেটো, রসুন ও পানি দিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সিদ্ধ করুন। সিদ্ধ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন। এরপর ব্লেন্ড করে তা ছেঁকে নিন।
৩. ছেঁকে নেওয়া রসে স্বাদমতো লবণ ও গোলমরিচ দিয়ে তৈরি করে নিন টমেটোর কুদরতি শরবত।
পুষ্টিতথ্য, ক্যালরি-৬০
উপকারিতা
টমেটোতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ লাইকোপিন, এন্টি অক্সিডেন্ট, ভিটামিন-‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘কে’। চোখ, পাকস্থলী, ত্বক, কিডনি, হৃৎপিণ্ড ও মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে, কোলেস্টেরল লেভেল কমায়, বিষাক্ত পদার্থগুলো দেহ থেকে বের করে দেয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। রসুনেরও এন্টি অক্সিডেন্ট গুণ রয়েছে। রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
সতর্কতা
অতিরিক্ত মাত্রায় এ শরবত গ্রহণ করলে এসিডিটি, কিডনিতে পাথর, ডাইভারটিকুলসিস, ভিটামিন অভারডোজ, অ্যালার্জি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বাঁধাকপির শরবত
উপকরণ
বাঁধাকপির কচি পাতা ১ কাপ, ব্রকলি আধা কাপ, ধনেপাতা কুচি ১ টেবিল চামচ, কাঁচা মরিচ ১টি, লবণ সিকি চা চামচ, গোলমরিচের গুঁড়া ১ চিমটি, লেবুর রস ১ চা চামচ, চাট মসলা আধা চা চামচ, বিট লবণ ১ চিমটি, পানি দেড় কাপ।
যেভাবে তৈরি করবেন
১. প্রথমে বাঁধাকপির কচি পাতা ও ব্রকলি ভালো করে ধুয়ে একটি পাত্রে নিয়ে নিন।
২. এর সঙ্গে লবণ ও পানি মিশিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট সিদ্ধ করুন।
৩. বাঁধাকপি ও ব্রকলি সিদ্ধ হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ঠাণ্ডা করে নিন।
৪. এবার সিদ্ধ বাঁধাকপি ও ব্রকলি পানিসহ ব্লেন্ডারের জগে ঢালুন। এরপর তাতে একের পর এক ধনেপাতা কুচি, কাঁচা মরিচ দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন।
৫. ব্লেন্ড করা হয়ে গেলে মিশ্রণটি ছেঁকে একটি পাত্রে নিয়ে তাতে বিট লবণ, লেবুর রস, চাট মসলা ও গোলমরিচ দিয়ে দিলেই তৈরি হয়ে গেল সুস্বাদু বাঁধাকপির শরবত।
৬. ফ্রিজে রেখে ঠাণ্ডা অবস্থায় পরিবেশন করুন।
পুষ্টিতথ্য, ক্যালরি-৩৫
উপকারিতা
বাঁধাকপি ও ব্রকলি লৌহ, ফলেট, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ‘বি’, ‘কে’ ও ‘সি’র অনেক ভালো উত্স। এই লো-ক্যালরি শরবতটি দেহের প্রয়োজনীয় খনিজ লবণের চাহিদা পূরণ করে, হাড় গঠনে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করে ও চোখ, চুল, মস্তিষ্ক ও হৃৎপিণ্ডের স্বাস্থ্য রক্ষা করে। বাঁধাকপি ডায়াবেটিস, আলসার ও বাতজনিত রোগের জন্য উপকারী। ব্রকলি ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে।
অপকারিতা
ব্রকলি রক্তের ইউরিক এসিড লেভেল বাড়িয়ে দেয়, পেটে গ্যাস সৃষ্টি করে এবং হাইপোথাইরইডিজমের রোগীদের থাইরয়েডের কার্যক্ষমতা আরো কমিয়ে দেয়। অন্যদিকে গর্ভবতী মহিলা ও ল্যাক্টেটিং মায়েদের জন্য অতিরিক্ত বাঁধাকপি গ্রহণ করা ভালো নয়। তা ছাড়া যেকোনো অপারেশনের ২ সপ্তাহ আগে ও পরে বাঁধাকপি না খাওয়া ভালো।