কক্সবাজারের চকরিয়া পৌর এলাকায় এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের জমি দখলে নিয়ে দোকান নির্মাণের অভিযোগে পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চেয়ারম্যান পাড়ার প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার পুত্র আবু জহির মোহাম্মদ খাইরুল বাশার বাদী হয়ে উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে গতকাল বুধবার মামলাটি দায়ের করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দিতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) কক্সবাজারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এদিকে মামলার পর ক্ষিপ্ত হয়ে একটি কিশোর গ্যাং ওই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের হয়রানি-হেনস্তা করছে বলে অভিযোগ করে গতকাল চকরিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার।
এতে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী সেলিনা চৌধুরী। এ সময় সঙ্গে ছিলেন মামলার বাদী বড় পুত্র এবং ছোট পুত্র খাইরুল আবরার নাবিল।
লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়েছে, পৌরকাউন্সিলর মুজিবুল হক দীর্ঘদিন ধরে তাদের পৈতৃক জায়গা দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। সেই চেষ্টার অংশ হিসেবে পরিবার সদস্যদের নানাভাবে হয়রানি করা হয়।
এমনকি তাদের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন কাউন্সিলর। সেই চাঁদা দিতে না পারায় তাদের দোকানঘরসহ জায়গাটি দখল করে নেয় গত ২২ মার্চ বিকেলে। খবর পেয়ে সেখানে ছুটে গেলে লেলিয়ে দেওয়া কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা পরিবার সদস্যদের মারধর করে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় দোকানঘরের অন্তত ২০ লাখ টাকার মালামাল নষ্ট করে। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করায় কিশোর গ্যাং লেলিয়ে দিয়ে পথে-ঘাটে হেনস্তাও করা হচ্ছে তাদের। এই কারণে পরিবার সদস্যরাও বাইরে বের হতে সাহস করছেন না।
সংবাদ সম্মেলনে প্রয়াতের বড় পুত্র ও মামলার বাদী বলেন, এ নিয়ে সম্প্রতি চকরিয়ার ইউএনও এবং থানার ওসিকে লিখিতভাবে অবহিত করলেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। এ জন্য গণমাধ্যমের শরণাপন্ন হতে বাধ্য হয়েছি।’
পৌর কাউন্সিলর মুজিবুল হকসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে চকরিয়া জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট ইলিয়াছ আরিফ।
তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চাঁদা না পেয়ে জায়গা দখল, বীর মুক্তিযোদ্ধার পরিবার সদস্যদের মারধরসহ নানাভাবে হয়রানির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য সিআইডি-কক্সবাজারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।’
তবে অভিযুক্ত কাউন্সিলর মুজিবুল হক দাবি করেছেন-তাঁর ক্রয়কৃত জায়গায় দোকান নির্মাণের কাজ করছেন। সেখানে অন্য কারো এক ইঞ্চি জায়গাও দখল করেননি। শুধুমাত্র উল্টো হয়রানির উদ্দেশ্যে এসব অভিযোগ, মামলা করা হচ্ছে।’