<p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">অনাবৃষ্টি, মিঠাপানির উৎস ছড়াখালগুলো সামুদ্রিক জোয়ারের তোড়ে লবণ পানিতে সয়লাব হয়ে পড়ায় মিঠাপানির অভাবে কক্সবাজারের চকরিয়ায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছিল বোরো ধানের আবাদ। দিগন্তজোড়া ধানক্ষেতের সেচ দেওয়া নিয়ে কৃষকের মাথায় দুশ্চিন্তা ভর করছিল। কখন বৃষ্টি নামবে সেই আশাতেই ছিলেন প্রান্তিক কৃষকেরা। অবশেষে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাতের দেখা মিলেছে গত রবিবার সকাল থেকে। সেই বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল গতকাল সোমবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত। এতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে ধানক্ষেতসহ রকমারি সবজি ক্ষেত।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তবে মৌসুমের প্রথম এই বৃষ্টিপাত প্রান্তিক কৃষকের জন্য আশীর্বাদ হলেও উপকূলজুড়ে লবণ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে মারাত্মকভাবে। রবিবার সকালে আধঘণ্টা এবং গতকাল সোমবার দুপুর একটা থেকে তিনটা পর্যন্ত ঝড়ো হাওয়াসহ মাঝারি বৃষ্টির কারণে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলায় লবণ উৎপাদন একেবারেই বন্ধ হয়ে পড়েছে। একই অবস্থা লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজার জেলার অন্যান্য উপজেলায়ও। বৃষ্টিপাতের কারণে মাঠে মাঠে বিছানো পলিথিন মুড়িয়ে রাখতে দেখা গেছে লবণ চাষিদের। বৃষ্টিপাতে আধুনিক পদ্ধতির (পলিথিন পদ্ধতি) চাষিদের তেমন ক্ষতি না হলেও সনাতন পদ্ধতিতে (সরাসরি মাটিতে) যাঁরা লবণ উৎপাদনে নেমেছেন তাঁরা আর্থিকভাবে বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এই বিষয়ে বিসিক কক্সবাজার লবণশিল্প উন্নয়ন প্রকল্পের মাঠ পরিদর্শক মো. ইদ্রিস আলী গতকাল বিকেলে কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘চলতি মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ জন্য লবণ উৎপাদন কয়েকদিন ব্যাহত হবে। যদি আবহাওয়া অনুকূলে থাকে এরপর থেকে আবারও লবণ উৎপাদন করতে পারবেন চাষিরা।’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে দেশের একমাত্র লবণ উৎপাদনকারী অঞ্চল কক্সবাজারের ৮ উপজেলা যথাক্রমে চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার সদর, ঈদগাঁও, উখিয়া ও টেকনাফ এবং চট্টগ্রামের বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলার (একাংশ) সিংহভাগ চাষি আধুনিক পদ্ধতিতে লবণ উৎপাদন করে থাকেন। এজন্য আধুনিক পদ্ধতির চাষিদের তেমন ক্ষতি হবে না। তবে সংখ্যায় কম হলেও সনাতন পদ্ধতির চাষিদের আর্থিকভাবে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। কারণ তাদেরকে নতুন করে মাঠকে লবণ উৎপাদনের উপযোগী করে তুলতে হবে।’ তবে সেই সমস্যাও কেটে গিয়ে ফের লবণ উৎপাদন আগের অবস্থায় ফিরবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">বিসিক কক্সবাজার কার্যালয় জানায়, প্রতিবছর ১৫ ডিসেম্বর থেকে মে মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত (পাঁচ মাস) লবণ উৎপাদনের মৌসুম ধরা হয়। এবার ভোক্তা ও শিল্পখাতে ব্যবহারের জন্য সরকার ৬৬ হাজার ২৯১ একর জমিতে লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ২৩ লাখ ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। ইতোমধ্যে (গতকাল পর্যন্ত বিসিকের জরিপ অনুযায়ী) উৎপাদন হয়েছে ১২ লাখ ৬২ হাজার ৮৮১ মেট্রিক টন। </span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">কক্সবাজার লবণ চাষি সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মকছুদ আহমদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃষ্টিপাতে লবণ উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হবে, সেটাই স্বাভাবিক। তবে এখনো চাষিদের হাতে আরো দেড়মাসের বেশি সময় রয়েছে। এই সময়টাই হচ্ছে প্রচণ্ড দাবদাহকাল। যদি আবহাওয়া পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে এই সময়ে দাবদাহের তাপেই প্রচুর লবণ উৎপাদন হবে।’</span></span></span></span></p> <p><span style="font-size:11pt"><span style="font-family:"Calibri","sans-serif""><span style="font-size:14.0pt"><span style="font-family:SolaimanLipi">এদিকে চকরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এস এম নাসিম হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এই বৃষ্টিপাত যদি আরো কিছুটা সময় ধরে হত তাহলে ধান, সবজির আবাদকারীরা আরো বেশি উপকৃত হত। কারণ কৃষকেরা মিঠাপানির জন্য হাহাকার করছিলেন। তাই মৌসুমের প্রথম এই বৃষ্টিপাত কৃষকদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে।’</span></span></span></span></p> <p> </p>