<p>কাপ্তাই হ্রদে পাঁচটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মধ্যে খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র অন্যতম। এই কেন্দ্র থেকে সরকারের রাজস্ব বেশি আয় হওয়া সত্ত্বেও জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা এতোদিন ন্যূনতম সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকেও বঞ্চিত ছিলেন। সমপ্রতি বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশনের উদ্যোগে উচ্চ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন একটি বরফকল চালু করায় খুশি হয়েছেন স্থানীয় জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।</p> <p>পাহাড়ি জেলা খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার বেশ কিছু এলাকা কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে যায়। ফলে এ স্থান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের সুবিধার জন্য ২০০৬ সালে মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন একটি বরফকল স্থাপনের উদ্যোগ নিলেও আলোর মুখ দেখেনি। ফলে মাছের আহরণকালে মহালছড়িতে বরফের চরম সংকট দেখা দেয়। খাগড়াছড়ি সদর, চট্টগ্রাম ও ফেনী থেকে বরফ এনে মাছ প্যাকেজিং করতে জেলেদের খরচ বেশি হয়।</p> <p>তাই জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি, মহালছড়িতে একটি বড় বরফকল স্থাপন করা। অবশেষে স্থানীয়দের সহায়তায় বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন বরফকল চালু করার উদ্যোগ নিয়েছে। দৈনিক ৪৫০টি বরফ খণ্ড উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বরফকল চালু করায় খুশি স্থানীয় জেলে ও ব্যবসায়ীরা।</p> <p>মহালছড়ি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম জানান, এতদিন বরফের অভাবে ঢাকা, চট্টগ্রাম বা ফেনীতে মাছ পাঠাতে সমস্যা হত। কখনো কখনো মাছও পচে যেতো। বরফ কল স্থাপনের মধ্যদিয়ে জেলেদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে।</p> <p>সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে বরফকল উদ্বোধন করেন কাপ্তাই হ্রদ মৎস্য উন্নয়ন ও বিপণন কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক লে. কমান্ডার আসাদুজ্জামান। এ সময় তিনি জেলে, মৎস্য ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলেন। জেলে ও ব্যবসায়ীদের নানা অসুবিধার কথা শোনেন এবং পর্যায়ক্রমে সমাধানের আশ্বাস দেন।</p> <p>গত অর্থ বছর এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৬২ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এই অর্থ বছরে (৩০ এপ্রিল পর্যন্ত) আদায় হয়েছে ৮০ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। এ উপজেলায় মোট জেলে ১ হাজার ৭৭২ জন। এর মধ্যে প্রায় ১৬০০ জনই সরকারি নিবন্ধিত জেলে।</p> <p>মহালছড়ি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের বহু সমস্যার মধ্যে বরফের সংকটটি ছিলো অন্যতম। সেটি পূরণ হওয়ায় অন্যান্য সমস্যাও পর্যায়ক্রমে সমাধানের আশা করছে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।</p> <p> </p>