

মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলির জীবনের স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত

১৯৬৫ সালে হ্যাভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লড়াইয়ে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করেছেন মোহাম্মদ আলি

১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি রাজ্যে জন্মগ্রহণ করেন মোহাম্মদ আলি। ১২ বছর বয়সেই তিনি মুষ্টিযুদ্ধ শুরু করেন এবং ১৯৬০ সালে রোম অলিম্পিকে লাইট-হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জয় করেন।

১৯৬০ সালের অক্টোবরে ১৮ বছর বয়সে মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি প্রফেশনাল মুষ্টিযুদ্ধ শুরু করেন। ১৯৬৩ সালে তিনি লন্ডন সফরে যান। সেখানে তিনি স্থানীয় পরাক্রমশালী মুষ্টিযোদ্ধা হেনরি কপারকে নকআউট করেন।

ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে ৫৫ হাজার মানুষের সামনে মুষ্টিযুদ্ধরত মোহাম্মদ আলি

১৯৪২ সালের ১৭ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি। ৩ জুন ২০১৬ তারিখে ৭৪ বছর বয়সে তিনি মারা যান।

মায়ামিতে ২২ বছর বয়সে মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি

মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলির লিসটনকে হারিয়ে দেওয়া ছিল বক্সিংয়ের ইতিহাসে অন্যতম অঘটন।

১৯৬৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি প্রথমবার বিশ্ব হেভিওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন সনি লিসটনকে পরাজিত করে।

লিসটনের সঙ্গে প্রথম লড়াইয়ের পরই মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি ইসলাম গ্রহণ করেন এবং তার এ নাম রাখেন। তার আগ পর্যন্ত তিনি ক্যাসিয়াস মারকেলাস ক্লে জুনিয়র নামে পরিচিত ছিলেন।

শিরোপাধারী সনি লিসটন এর প্রতিদ্বন্ধী হিসেবে মোহাম্মদ আলিকে গণ্য করলেও কেউ আশা করেনি যে তিনি জিতবেন। লড়াই এর আগে তিনি ঘোষনা দেন তিনি প্রজাপতির মত নেচে নেচে মৌমাছির মত হুল ফোটাবেন। লিসটন ছিলেন অতিরিক্ত আত্ববিশ্বাষী। কিন্তু আলির ক্ষিপ্রতা তাকে লিস্টনের ঘুষি থেকে বাচিয়ে দেয়। তার উচ্চতার কারনে তিনি তাকে বেশ কিছু ঘুষি মারতে সক্ষম হন। ৪র্থ রাউন্ডে লিস্টন সামলে উঠেন। এ সময়ে আলির চোখে ধুলো ঢোকায় তিনি ঠিকমত দেখতে পারছিলেন না। তিনি শুধু লিস্টন ঠেকিয়ে যাচ্ছিলেন। ৬ষ্ঠ রাউন্ডে আলি সামলে উঠেন, এবং ৭ম রাউন্ডে লিস্টন পরাজয় মেনে নেন।

১৯৬৫ সালের নভেম্বরে ফ্লয়েড প্যাটারসনের সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধরত মোাহম্মদ আলি

১৯৬৬ সালের মে মাসে লন্ডনে হেনরি কপারের সঙ্গে লড়াই করতে যান মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলি

কুপারের সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধরত মোহাম্মদ আলি।

১৯৬৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আর্নি টেরেলের সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধরত মোহাম্মদ আলি

কুপারের সঙ্গে মুষ্টিযুদ্ধের আগে অ্যাঙ্গেলো ডানড্রি মোহাম্মদ আলিকে তৈরি করছেন

১৯৬৭ সালে জোরা ফলেকে পরাজিত করেন মোহাম্মদ আলি।

১৯৭১ সালের মার্চে মেডিসন স্কয়ারে জো ফ্রেজিয়ারের কাছে প্রথম পরাজিত হন মোহাম্মদ আলি।

১৯৭৪ সালের অক্টোবরে জর্জ ফোরম্যান এর সাথে লড়াইয়ে নামেন মোহাম্দ আলি। এটি রাম্বেল ইন দ্য জংগল বলে পরিচিত। আলির ঘোর সমর্থকরাও এতে আলির সম্ভাবনা দেখেননি। ফোরম্যান ও নর্টন আলির সাথে প্রবল লড়াই করেন ও জর্জ তাদের ২ রাউণ্ডে পরাজিত করেন। ফোরম্যান ৪০ টির মধ্যে ৩৭ টি লড়াই নকআউটে জিতেন ৩ রাউন্ডের মধ্যে। আলি এ ব্যাপারটিকে কাজে লাগাতে চাইলেন। সবাই ভেবেছিল তিনি ক্ষিপ্রতার সাথে লড়াই করবেন, কিন্তু তিনি দূরে দূরে থাকতে লাগলেন। ফোরম্যানকে তিনি আক্রমণ করতে আমন্ত্রণ জানান। তার উদ্দেশ্য ছিল তাকে ক্লান্ত করে দেয়া। ৮ম রাউন্ডে তিনি তার সুযোগ পেয়ে গেলেন ও ফোরম্যানকে নকআউট করলেন।

১৯৭৮ সালে লিওন স্পিংকসের কাছে পরাজিত হন আলি।

১৯৮৪ সালে পার্কিনসন রোগের জন্য চিকিৎসা করা হয় মোহাম্মদ আলিকে। ১৯৯৬ সালে আটলান্টায় আলিম্পিক মশাল জ্বালান।

মুষ্টিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলির মেয়ের নাম লাইলা। ১৫ বছর বয়সেই তিনি মুষ্টিযুদ্ধ শুরু করেন। তিনি তার বাবার প্রতিদ্বন্দ্বী জো ফ্রেজিয়ারের মেয়ে জ্যাকি ফ্রেজিয়ারকে ২০০১ সালে পরাজিত করেন। এছাড়া ২০০২ সালে তিনি সুপার-মিডলওয়েট চ্যাম্পিয়ন হন।

২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিক উদ্বোধনীতে মোহাম্মদ আলি (চেয়ারে বসা)। সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে তিনি যোগ দেন।