<p>চার দিন ধরে বৃষ্টির ফলে ভারতের ক্রিপুরায় বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। প্রায় সব নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ক্ষতিগ্রস্ত ১৭ লাখ মানুষ। বন্যা ও ভূমিধসের ফলে অন্তত ২২ জন মারা গেছে। বৃহস্পতিবারই বৃষ্টির কারণে ধস নেমে একই সঙ্গে দুই পরিবারের সাতজনের মৃত্যু হয়েছে।</p> <p>রাজস্বসচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে জানিয়েছেন, ১৭ লাখ মানুষ এই বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সাড়ে ৪০০ ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। সেখানে ৬৫ হাজার ৪০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। এখনো পর্যন্ত বিদ্যুতের ৮৪৪টি খুঁটি ভেঙে গেছে, ১৫১টি ট্রান্সফর্মার, দুটি সাবস্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে রাজ্যের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই।</p> <p>তিনি আরো বলেছেন, ত্রিপুরা রাজ্যে দুই হাজার ৩২টি ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এক হাজার ৯৫২টি জায়গায় রাস্তা ভেঙে গেছে, ১৫৩টি ড্রেজার কাজ করছে। ২০০ প্রকৌশলী দিন-রাত কাজ করে চলেছেন। এক লাখ ২০ বাজার হেক্টর ধানের জমি ও পাঁচ হাজার হেক্টর সবজি ক্ষেত প্লাবিত হয়েছে।</p> <p>এ ছাড়া রাজ্যের সব স্কুল অনির্দিষ্টকালের জন্য ছুটি দেওয়া হয়েছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরাসহ  বিভিন্ন উপদ্রুত এলাকায় টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।</p> <p><strong>বিমানবাহিনীর সাহায্য</strong><br /> ভারতীয় বিমান বাহিনী দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ ও বিপর্যয় মোকাবেলা কর্মীদের পৌঁছানোর কাজ করছে। বিমানবাহিনীর দুইটি সি-১৩০ বিমান ও একটি এএন-৩২ বিমানকে কাজে লাগানো হয়েছে। এই বিমানে করেই আগরতলায় কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী এনডিআরএফের চারটি দলকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তা ছাড়া প্রচুর ত্রাণসামগ্রীও নিয়ে গেছে বিমানগুলো।</p> <p>স্বরাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনীর ২৬টি দল বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণের কাজ করছে। রাজ্য সরকারের অনুরোধ মেনে উপদ্রুত এলাকা থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে কেন্দ্রীয় সরকার দুটি হেলিকপ্টার দিয়েছে।</p> <p><strong>আগরতলাতেও বন্যা</strong><br /> এদিকে আগরতলা শহরের বিভিন্ন এলাকাও প্লাবিত হয়েছে। কোথাও হাঁটু, কোথাও কোমর সমান পানি জমেছে। শহরের ৩০ হাজার মানুষকে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।</p> <p>মেয়র দীপক মজুমদার বলেছেন, নদীর পানি প্রবেশের ফলে শহর প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে বৃষ্টি না হলে এই পানি এবার নেমে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।</p> <p><strong>আরো বৃষ্টির আশঙ্কা</strong><br /> রাজস্বসচিব ব্রিজেশ পাণ্ডে আবহাওয়াবিদ পার্থ রায়কে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, শুক্রবারও প্রবল বৃষ্টির আশঙ্কা আছে। তাই দক্ষিণ ত্রিপুরা, সিপাহীজলা, গোমতী ও ধলাই জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।</p> <p>তিনি আরো জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ ত্রিপুরার বকাফায় ৪৯৩.৬ মিলিমিটার, সিপাহীজলা জেলায় সোনামুড়ায় ২৯৩.৪,  আগরতলায় ২৩৩ এবং গোমতী জেলার উদয়পুরে ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।</p> <p>সূত্র : ডয়চে ভেলে, আনন্দবাজার পত্রিকা</p>