<p>রাশিয়ার এক হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইউক্রেন বাহিনী। ইউক্রেনের শীর্ষ কমান্ডার এই তথ্য জানিয়েছেন। গত আড়াই বছর ধরে চলা যুদ্ধের মধ্যে ইউক্রেন এই প্রথম সবচেয়ে বড় আন্তঃসীমান্ত অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। </p> <p>কমান্ডার অলেকজান্ডার সিরস্কি বলেছেন, ইউক্রেন কুরস্ক অঞ্চলে আক্রমণাত্মক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘রাশিয়া অন্যদের জন্য যুদ্ধ এনেছিল এবং এখন আবার রাশিয়ার কাছেই ফিরে যাচ্ছে।’</p> <p>তবে রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিন এই আক্রমণকে  ‘উসকানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং রুশ বাহিনীকে তাদের ভূখণ্ড থেকে শত্রুদের লাথি মেরে তাড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।</p> <p>রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত মন্তব্যে প্রেসিডেন্ট পুতিন সোমবার বলেছেন, ‘শত্রুর সুস্পষ্ট লক্ষ্যগুলো হলো বিভেদ, কলহ, মানুষকে ভয় দেখানো, রাশিয়ান সমাজের ঐক্য ও সংহতি নষ্ট করা।’ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠকে তিনি আরো বলেন, ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ অবশ্যই আমাদের অঞ্চল থেকে শত্রুকে বিতাড়িত করা।’</p> <p>সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত হওয়া বৈঠকে তিনি বলেন, শত্রুদের আমাদের এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেওয়াই এখন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কাজ। আলোচনার টেবিলে নিজেদের অবস্থানকে একটু উন্নত করাই ইউক্রেনের এমন আক্রমণের কারণ বলে মত দেন তিনি। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ইউক্রেন এর যোগ্য জবাব পাবে।</p> <p>নিরাপত্তার স্বার্থে রাশিয়ার পশ্চিমাঞ্চল থেকে বড়সংখ্যক বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৯ হাজার রুশ অধিবাসীকে অঞ্চলটি ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিনি অনুরূপ ক্ষেপণাস্ত্রও সতর্কতা জারি করেছেন এবং লোকদের তাদের বেসমেন্টে আশ্রয় নিতে বলেছেন।</p> <p>স্থানীয় গভর্নর বলেছেন, কুরস্কের প্রায় ২৮টি গ্রাম ইউক্রেনীয় বাহিনীর দখলে। এ পর্যন্ত ১২ জন বেসামরিক নিহত হয়েছেন এবং পরিস্থিতি এখনো অত্যন্ত কঠিন। ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় এখনো দুই হাজার রুশ নাগরিক রয়ে গেছে। তাদের ভাগ্যে কী ঘটেছে তা তিনি জানেন না বলেও মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি মিসাইল থেকে নিরাপদ থাকতে জানালা ছাড়া এবং শক্ত দেয়ালের ঘরে আশ্রয় নিতে লোকদের সতর্ক করেন।</p> <p>নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্রিটিশ সামরিক সূত্র বিবিসিকে বলেছে যে ইউক্রেনের এই অভিযানের ফলে মস্কো এতটাই ক্ষুব্ধ হবে যে ইউক্রেনের বেসামরিক মানুষ ও অবকাঠামোর ওপর আক্রমণ দ্বিগুণ করতে পারে রাশিয়া। </p> <p>গত মঙ্গলবার থেকে সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে আকস্মিক হামলা চালায় ইউক্রেনের সেনারা। এদিন থেকে দুই পক্ষের তুমুল লড়াই চলছে।</p> <p><strong>পাল্টাপাল্টি দোষারোপ</strong></p> <p>জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে আগুন লাগার ঘটনায় ইউক্রেন ও রাশিয়া পরস্পরকে দোষারোপ করেছে। গত রবিবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির একটি টাওয়ারে আগুন লাগে। আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) জানায়, জাপোরিঝিয়া বিদ্যুৎকেন্দ্রটি থেকে গাঢ় ধোঁয়া নির্গত হতে দেখা গেলেও পারমাণবিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত কোনো ঝুঁকির খবর জানা যায়নি।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>