<p>ভারতের উত্তর প্রদেশের রাজনীতি আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তবে এবারের টানাপড়েন শুধু বিরোধীদের সঙ্গে নয়, বরং খোদ বিজেপির মধ্যে। আর দ্বন্দ্বের মূল বিষয়—‘নজগুল জমি’ বা সরকারি জমিসংক্রান্ত বিল।</p> <p>এই বিলকে কেন্দ্র করে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে উপমুখ্যমন্ত্রী কেশব প্রসাদ মৌর্য ও উত্তর প্রদেশ বিজেপির সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরীর দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। বিজেপির এই দুই নেতা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর অনুগত হিসেবে পরিচিত।</p> <p>রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মূলত মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে কোণঠাসা করতেই এই বিলের বিরোধিতা করেছেন মোদি-শাহপন্থী বিজেপি নেতারা। কারণ যোগীকে সরিয়ে নিজের অনুগত ব্যক্তিকে উত্তর প্রদেশের মুখমন্ত্রী বানাতে চান মোদি ও শাহ। উল্লেখ্য, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া সরকারি জমি পুনরায় অধিগ্রহণ করতে নজগুল বিল পাস করাতে চায় যোগী সরকার। জনকল্যাণ ও উন্নয়নকাজে এসব জমি ব্যবহার করতে চায় রাজ্য সরকার।</p> <p>মন্ত্রিসভার সম্মতি সাপেক্ষে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকার বিলটি বিধানসভায় পাস করালেও বিধান পরিষদে এটি আটকে দেন বিজেপির মোদি-শাহপন্থী নেতারা। আরো পর্যালোচনার জন্য বিলটি পাঠানো হয়েছে সিলেক্ট কমিটিতে। পর্যালোচনার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে দুই মাস।</p> <p>বিজেপির সভাপতি ভূপেন্দ্র চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের বিধায়কদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পাওয়ার পর বিলটির বিরোধিতা করেছি। এ ধরনের অজনপ্রিয় আইন দলীয় স্বার্থের ক্ষতি করতে পারে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এই বিল পাস হলে বিভিন্ন শহরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। একদিকে সরকার জনগণের জন্য ঘর বানাচ্ছে, অন্যদিকে একই সরকার সরকারি জমিতে থাকা লোকজনের বাড়িঘর ভেঙে ফেলবে—এমনটা হতে পারে না।’ মোদি ও অমিত শাহর অনুগত বিজেপি নেতারা ছাড়াও এনডিএ জোটের শরিকরাও বিলটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছেন।</p> <p>বিজেপির শরিক নিশাদ পার্টির বিধায়ক অনিল কুমার ত্রিপাঠি এই বিলকে জনবিরোধী আখ্যা দিয়েছেন। জনসত্তা দলের প্রধান রঘুরাজ প্রতাপ সিংও তীব্র আপত্তি জানিয়েছেন। আপনা দল এই বিলকে ‘অপ্রয়োজনীয়’ আখ্যা দিয়েছে।</p> <p>বিলটি নিয়ে তীব্র আপত্তি জানিয়ে আসছে বিরোধী জোট ইন্ডিয়া। জোটের অন্যতম শরিক সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব এই বিলকে ‘বাড়িঘর ধ্বংসের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ভূমিদস্যুদের সুবিধার জন্য দরিদ্রদের গৃহহীন করতে চায় বিজেপি। অমানবিক এই বিল প্রত্যাহার করতে হবে।’</p> <p>সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, দি ইকোনমিক টাইমস</p>