<p>মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষের যৌথ সভায় বুধবার এক জোরাল ভাষণ দেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। নেতানিয়াহুর এই ভাষণ ‘মিথ্যায় ভরা’ বলে অভিযোগ করেছে হামাস। আজ বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। হামাস আরো বলেছে, তিনি যুদ্ধবিরতি নিয়ে যে আগ্রহী নন, তা তার এ ভাষণেই প্রকাশ পেয়েছে। </p> <p>ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বন্দিদের ইসরায়েলে ফেরত দেওয়ার তীব্র প্রচেষ্টার বিষয়ে নেতানিয়াহুর মন্তব্য একটি বিশুদ্ধ মিথ্যা এবং ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্বজনমতের কাছে এই মন্তব্য বিভ্রান্তিকর।’ গোষ্ঠীটি আরো বলেছে, ‘নেতানিয়াহুকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে গ্রেপ্তার করা উচিত। ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে সোপর্দ করাটাই ভালো হতো।’ যুদ্ধাপরাধের দায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আইসিসি।</p> <p>হামাস আরো অভিযোগ করে বলেছে, মার্কিন কংগ্রেসে যুদ্ধাপরাধী নেতানিয়াহু বক্তৃতা দিয়েছেন। যেখানে তিনি ৯ মাসেরও বেশি সময় আগে যে প্রোপাগান্ডা এবং মিথ্যা উপস্থাপন করেছিলেন, তারই পুনরাবৃত্তি করেছেন। তিনি মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের চলমান প্রচেষ্টা সত্ত্বেও যুদ্ধ শেষ করার এবং জিম্মিদের মুক্তির জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর সব প্রচেষ্টাকে শেষ করে দিয়েছেন। </p> <p>গোষ্ঠীটি আরো বলেছে, ইসরায়েল গাজায় আমাদের ফিলিস্তিনি জনগণকে নির্মূল করার লক্ষ্যে একটি নৃশংস যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছে। যেখানে বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষার জন্য ডিজাইন করা সব আন্তর্জাতিক আইন, নিয়ম এবং মানবিক চুক্তিগুলো এমনভাবে লঙ্ঘন করা হচ্ছে।   আধুনিক ইতিহাসে যার কোনো সমান্তরাল নেই।</p> <p>ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার (২৪ জুলাই) যখন যুক্তরাষ্ট্রের সংসদ কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দিচ্ছেন, তখন শত শত ফিলিস্তিনপন্থী, যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারী ক্যাপিটল ভবনের কাছে বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটে। </p> <p>নজিরবিহীন কড়া নিরাপত্তায় নেতানিয়াহুর ভাষণের আগে ক্যাপিটল হিলের চারপাশে যান চলাচল বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকাল থেকেই বিক্ষোভকারীরা ‘বিশ্বব্যাপী ইহুদিরা ইসরায়েলি রক্তাক্ত বর্বরতার নিন্দা জানায়’ এবং ‘ফ্রি প্যালেস্টাইন’ (ফিলিস্তিনমুক্ত হোক) লেখা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। নেতানিয়াহুর ভাষণের সময় বিক্ষোভকারীদের অনেকে ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন’ স্লোগান দিয়ে প্ল্যাকার্ড বহন করে যেখানে লেখা ছিল ‘নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করো’ এবং ‘ইসরায়েলের জন্য সব সাহায্য বন্ধ করো।’</p> <p>এদিকে ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি যুক্তরাষ্ট্র আমাদের পেছনেই রয়েছে, এ জন্য ধন্যবাদ।’ তিনি আরো বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের দেশকে সামরিক সহায়তা ও পরামর্শ দিয়ে আসছে দশকের পর দশক ধরে। যা অনেক জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে।’</p> <p>মার্কিন আইনপ্রণেতাদের দ্রুত সামরিক সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমাদের দ্রুত সরঞ্জাম (সামরিক) দিন।’</p> <p>এ সময় দৃঢ়কণ্ঠে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমাদের শত্রুরা আপনাদেরও শত্রু। আমাদের লড়াই আপনাদেরও লড়াই। সেই সঙ্গে আমাদের বিজয় আপনাদেরও বিজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’</p> <p> ট্রাম্পের ওপর সম্প্রতি চালানো হামলার সমালোচনা করে নেতানিয়াহু বলেন, গণতন্ত্রে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো জায়গা নেই। ক্ষমতায় থাকাকালে ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তর এবং গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি দেওয়ায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান নেতানিয়াহু।</p> <p>এ সময় দৃঢ়কণ্ঠে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের শত্রুরা আপনাদেরও শত্রু। আমাদের লড়াই আপনাদেরও লড়াই। সেই সঙ্গে আমাদের বিজয় আপনাদেরও বিজয় হিসেবে চিহ্নিত হবে। এ জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’</p> <p>সূত্র : আলজাজিরা, বিবিসি</p> <p> </p>