<p>বুদ্ধি প্রতিবন্ধী হলেও উপযুক্ত পরিবেশ, সহনশীলতা আর বিশেষ প্রশিক্ষণ পেলে ফেরা যায় স্বাভাবিক জীবনে। অন্যদের মতো কাজ করে, করা যায় আয়-রোজগার। উত্তর চীনের ইনার মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের একটি রেস্তোরাঁ এর জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ। ওই রেস্তোরাঁয় বুদ্ধি প্রতিবন্ধীরাই তৈরি করছেন সুস্বাদু সব খাবার। এর ফলে তাদের আর বাড়তি করে পুনর্বাসনের দরকার হচ্ছে না। </p> <p>চীনের ইনার মঙ্গোলিয়া স্বায়ত্তশাসিত এলাকার রাজধানী হোহোট। গতবছর সেখানে চালু হয় সিয়াওবো ইয়াওহোং রেস্তোরাঁ। ডাম্পলিংয়ের জন্য নামকরা রেস্তোরাঁটিতে কাজ করছেন একদল বুদ্ধি প্রতিবন্ধী কর্মী। তাদের বয়স ২১ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে হলেও তাদের বুদ্ধিমত্তা সাত-আট বছরের শিশুদের সমান। তারপরও ওদের কাজে কোনো সমস্যা হচ্ছে না। রেস্তোরাঁর ক্রেতারাও তাদের সেবায় খুশি।</p> <p>রেস্তোরাঁর এক ক্রেতা বললেন, ‘সেবা প্রদানের বিচারে তারা কিন্তু খুব পেশাদার। আমার কাছে কোনো পার্থক্য ধরা পড়েনি।’</p> <p>২০২০ সালে অসুস্থতার কারণে টানা আট মাস দৃষ্টিশক্তিহীন ছিলেন ইনার মঙ্গোলিয়ার ব্যবসায়ী হোং বো। তখন তিনি প্রতিবন্ধীদের সমস্যাগুলো অনুভব করেন এবং এমন একটি রেস্তোরাঁ চালুর আইডিয়া পান।</p> <p>প্রতিবন্ধীদের চ্যালেঞ্জগুলো সম্পর্কে জানতেন বলে হোং সেভাবেই তৈরি করেন কাজের পরিবেশ। যখনই কোনো কর্মী ভালো পারফর্ম করে তখন তিনি তাদের হাই-ফাইভ দিতে ভোলেন না। এতে বেশ খুশি হয় কর্মীরা এবং ভালো কাজটি তারা বারবার করার অনুপ্রেরণা পায়।</p> <p>বাই ইয়ে নামে রেস্তোরাঁটির একজন কর্মীর মা জানালেন, ‘ওরা (প্রতিবন্ধী) যদি সারাদিন বাসায় বসে থাকতো তবে তাদের বোধশক্তি আরও খারাপের দিকে যেত। বুদ্ধি প্রতিবন্ধীদের এমনিতেই সারাজীবন এক ধরনের পুনর্বাসনের ভেতর দিয়ে যেতে হয়। কিন্তু এখানে তারা প্রতিনিয়ত বদলাচ্ছে। আমরাও অবাক হচ্ছি। বলা যায় এখানে তারা মূলত এক ধরনের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার ভেতরই আছে।’</p> <p>তবে নিজের কর্মীদের এখন আর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বলতেও রাজি নন হোং বো। বললেন, ‘তাদেরকে আমরা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ভাবছি না। তারা হলো নানা বয়সের শিশু। প্রথম দিকে যখন তারা এখানে এলো, তখন তাদের সবার কিছু নিজস্ব বৈশিষ্ট্য ছিল। এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এখন তারা সবাই সিয়াওবো ইয়াওহোং রেস্তোরাঁর কর্মী।’</p> <p>এখানকার কর্মীরাও জানালেন, এখানে কাজ করার সময় তাদের মনে হয় তারা নিজেদের ঘরেই আছেন। রেস্তোরাঁর কর্মী ছেন হাও ‘রেস্তোরাঁটিতে উষ্ণতা ছড়িয়ে আছে। পুরোটা জুড়ে আছে একরাশ উচ্ছ্বাস আর উদ্দীপনা। সব কিছু পরিবারের মতোই লাগে।’ হোং বোয়ের এই রেস্তোরাঁ এখন ভালো আয় করছে। রেস্তোরাঁটি এখন অন্যসব বুদ্ধি প্রতিবন্ধী তরুণ-তরুণীদের অভিভাবকদের মধ্যে জাগাচ্ছে নতুন আশার আলো।</p> <p>সূত্র: সিসিটিভি</p> <p><br />  </p>