<p>ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্য পদ দেওয়ার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে। এর ফলে সাধারণ পরিষদ জাতিসংঘের ভেতরে ফিলিস্তিনের অধিকারসীমা আরো বাড়াল এবং সদস্য হিসেবে তাদের অন্তর্ভুক্তির দাবিকে আরো জোরালো করল।</p> <p>ফিলিস্তিন ২০১২ সাল থেকেই জাতিসংঘের অ-সদস্য পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাচ্ছে। কিন্তু এর ফলে তারা পূর্ণ সদস্যের সুযোগ-সুবিধা পায় না। কিন্তু এই সদস্য পদের বিষয়টি শুধু নির্ধারণ করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। সম্প্রতি তাদের পূর্ণ সদস্য হওয়ার এক দফা চেষ্টায় ভেটো দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। তবে শুক্রবার সাধারণ অধিবেশনে যে ভোট হয়েছে সেটাকে দেখা হচ্ছে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্য পদপ্রাপ্তির পক্ষে সমর্থন হিসেবে।</p> <p>ভোটের আগে জাতিসংঘে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের দূত রিয়াদ এইচ মানসুর বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই, আমরা স্বাধীনতা চাই, একটা হ্যাঁ ভোট ফিলিস্তিনের অস্তিত্বের ভোট, এটা কোনো রাষ্ট্রের বিপক্ষে নয়।’</p> <p>সাধারণ পরিষদে বেশ বড় ব্যবধানেই ভোটের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে নতুন ‘অধিকার ও সুবিধা’ দিয়েছে জাতিসংঘ এবং একই সঙ্গে জাতিসংঘের ১৯৪তম সদস্য হিসেবে ফিলিস্তিনের অন্তর্ভুক্তির দাবিকে পুনরায় বিবেচনা করতে বলা হয়েছে।</p> <p>আরব ও ফিলিস্তিনের আনীত এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৪৩টি, আর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে ৯টি রাষ্ট্র। যাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল ছাড়াও আছে আর্জেন্টিনা, হাঙ্গেরি, মাইক্রোনেশিয়া, পালাউ, পাপুয়া নিউ গিনি ও চেক প্রজাতন্ত্র। এ ছাড়া ২৫টি রাষ্ট্র ভোট প্রদানে বিরত থাকে।</p> <p>এদিকে জাতিসংঘের এই প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। তিনি বলেছেন, এটা নিরাপত্তা পরিষদে আবারও ভোটের জন্য যে চেষ্টা তাদের, সেটাকে সমর্থন করবে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিন জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য পদ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবে।’</p> <p>অন্যদিকে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের দূত গিলাদ এরদান বলেছেন, সংস্থাটি একটি ‘সন্ত্রাসী রাষ্ট্রকে’ তাদের সঙ্গে স্বাগত জানাল। অধিবেশনে বক্তৃতার সময় তিনি জাতিসংঘের সনদের একটি কপি ছিঁড়ে ফেলেন এবং অভিযোগ করেন, জাতিসংঘের সদস্যরা আসলে এই কাজটিই করলেন ফিলিস্তিনের পক্ষে প্রস্তাব পাস করে।</p> <p>নিজের বক্তব্যে গিলাদ বলেন, ‘আপনাদের অনেকেই ইহুদীবিদ্বেষী, ফিলিস্তিনিরা যে শান্তিপ্রিয় নয় এটাতে আপনাদের কিছু যায়-আসে না, জাতিসংঘের সনদকে অবজ্ঞা করে ফিলিস্তিনকে সদস্য সুবিধা দেওয়ার মানে আপনারা নিজের হাতে জাতিসংঘের সনদ ধ্বংস করলেন।’</p> <p>জাতিসংঘ এই প্রস্তাবটি পাস করল, যখন বিভিন্ন ইউরোপীয় রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা করার খবর সামনে আসে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান জোসেপ বোরেল বৃহস্পতিবার স্প্যানিশ গণমাধ্যম আরটিভিইকে বলেছেন, স্পেন আসছে ২১ মে এটি করবে। এর আগে তিনি কোনো তারিখ না জানালেও বলেন, মাল্টা, আয়ারল্যান্ড ও স্লোভেনিয়াও একই পথে হাঁটছে।</p> <p>শুক্রবার জাতিসংঘের প্রস্তাবে ফিলিস্তিনকে বাড়তি সুবিধা প্রদান করা হয়, যাতে তারা পুরোপুরি কোনো বিতর্কে অংশ নিতে পারে, এজেন্ডা প্রস্তাব করতে পারে এবং কমিটি নির্বাচনে তাদের প্রতিনিধি রাখতে পারে। তবে কোনো ভোট দেওয়ার অধিকার এখনো পাচ্ছে না তারা, সেটা প্রদানের ক্ষমতা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের নেই, এটা কেবল অনুমোদন দিতে পারে নিরাপত্তা পরিষদ।</p> <p>সূত্র : বিবিসি</p>