<p>ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৮৮ সালে মালদ্বীপের সরকারবিরোধী অভ্য়ুত্থান দমন করেছিল ভারতীয় সেনাবাহিনী। যার নাম ছিল অপারেশন ক্যাকটাস। শুধু তা-ই নয়, বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ভারতীয় সেনারা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে উদ্ধারকাজ চালিয়েছেন।</p> <p>ভারত বরাবরই মালদ্বীপের পাশে থেকেছে। কারণ, ভারতীয় মূল ভূখণ্ড থেকে মাত্র ৩০০ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে মালদ্বীপ। ভারতের লাক্ষাদ্বীপ থেকে মাত্র ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে। ভারত মহাসাগরের ওপর অবস্থিত ছোট্ট এই দ্বীপ কৌশলগতভাবে ভারতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই রাস্তাই হলো একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যপথ। অন্যদিকে, ভূরাজনৈতিক দিক থেকেও এই অঞ্চলটি ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।</p> <p><strong><span style="background-color:#ecf0f1;">আরো পড়ুন : </span><a href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2024/01/14/1354756"><span style="color:#3498db;"><span style="background-color:#ecf0f1;">মালদ্বীপের সঙ্গে চাপান-উতোর প্রসঙ্গে যা বললেন জয়শঙ্কর</span></span></a></strong></p> <p>এসব কারণে দীর্ঘদিন ধরেই মালদ্বীপে বিভিন্ন দিক থেকে বিনিয়োগ করেছে ভারত। সময়-অসময়ে মালদ্বীপের পাশে দাঁড়িয়েছে। মালদ্বীপও ভারতকে ‘বড় দাদা’র মতো দেখেছে। সমুদ্র দ্বীপটিতে ভারত একটি ছোট সেনাঘাঁটিও বানিয়েছে। সেখানে ৭০ জন ভারতীয় সেনা আছেন। ভারত মহাসাগরে পেট্রলিং করেন এই সেনা সদস্যরা। এর মধ্যে ২৪ জন সেনা সদস্য আছেন একটি হেলিকপ্টারের কাজে। ২৫ জন একটি ডরনিয়ার সামরিক বিমানের দায়িত্বে। ২৬ জন আরেকটি হেলিকপ্টারের দায়িত্বে। দুজন প্রকৌশলী। এই দুইটি হেলিকপ্টার এবং ডরনিয়ার বিমানের সাহায্যে ভারত ওই অঞ্চলে নিজের সামরিক অবস্থান তৈরি করেছে।</p> <p><strong><span style="background-color:#ecf0f1;">আরো পড়ুন : </span><a href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2023/11/18/1337454"><span style="color:#3498db;"><span style="background-color:#ecf0f1;">ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে সেনা প্রত্যাহার করতে বলল মালদ্বীপ</span></span></a></strong></p> <p>এদিকে মালদ্বীপের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজু এই সম্পর্কটি ছিন্ন করতে চাইছেন। তার কারণ নতুন এই প্রেসিডেন্ট চীনপন্থী। অতি সম্প্রতি চীনে গিয়ে শি চিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে এসেছেন তিনি। সেখান থেকে ফিরেই ভারতীয় সেনাবাহিনী সরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতকে সেনা সরিয়ে নিতে হবে।</p> <p><strong><span style="background-color:#ecf0f1;">আরো পড়ুন : </span><a href="https://www.kalerkantho.com/online/world/2023/11/19/1337709"><span style="color:#3498db;"><span style="background-color:#ecf0f1;">ভারতীয় সেনাদের কেন বের করে দিতে চান মালদ্বীপের নতুন প্রেসিডেন্ট?</span></span></a></strong></p> <p>অন্যদিকে চীনের সঙ্গে বেশ কয়েকটি নতুন চুক্তি করে এসেছেন মুইজু। বিশ্বব্যাংকের হিসাব বলছে, মালদ্বীপের মোট ধারের ২০ শতাংশ চীনের কাছে। অর্থাৎ মালদ্বীপে বিরাট পরিমাণ বিনিয়োগ ইতিমধ্যে করে ফেলেছে চীন। এবার তার পরিমাণ আরো বাড়বে।</p> <p>ঠিক এই জায়গাতেই ভারতের চিন্তা। ভারতে ‘প্রতিবেশী প্রথম’ পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম দেশ মালদ্বীপ। সেখান থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার অর্থ ভূরাজনৈতিকভাবে ভারত মহাসাগরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া এবং একই সঙ্গে সেই কৌশলগত জায়গা চীনের হাতে তুলে দেওয়া। কূটনৈতিকভাবে ভারত নিশ্চয় চেষ্টা করবে আলোচনার মাধ্যমে এই পরিস্থিতির সুরাহা করতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা কতটা সফল হবে, তা নিয়ে কূটনৈতিক মহলে যথেষ্ট প্রশ্ন আছে।</p> <p>ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাবেক লেফটন্যান্ট জেনারেল উৎপল ভট্টাচার্য ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, ‘মালদ্বীপ থেকে সেনা প্রত্যাহার ভারতের জন্য বড় ক্ষতি। তার চেয়েও বড় কথা, চীন সেখানে আধিপত্য কায়েম করলে ভারতের দুয়ারে হুমকি তৈরি হবে। ফলে কূটনৈতিক সমাধানের রাস্তা খোঁজা অত্যন্ত জরুরি।’</p>