<p>উচ্চসংখ্যার বেসামরিক প্রাণহানির জন্য পশ্চিমা চাপের মুখে ইসরায়েল দাবি করেছে, হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জিততে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্য মিত্ররা তাদের পাশে আছে। ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ইলিয়ন লেভি গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভানের সঙ্গে ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সাক্ষাৎ নিয়ে কথা বলছিলেন ইসরায়েলি মুখপাত্র। সুলিভান গতকাল ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এদিকে গাজায় ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলা যথারীতি অব্যাহত রয়েছে।</p> <p>ইসরায়েলি সরকারের মুখপাত্র ইলিয়ন লেভি বলেছেন, হামাসকে ধ্বংস করতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল পুরোপুরি জোটবদ্ধ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ বন্ধে কোনো চাপ দিয়েছে কি না—এমন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর না দিয়ে লেভি বলেন, ‘৭ অক্টোবরের পরেও যে হামাস টিকে আছে, সেটাই এখানে একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। হামাস এখন বিপজ্জনক টাইমবোমা হয়ে গেছে। এটি নিষ্ক্রিয় করতে হবে, নয়তো তা ইসরায়েলে আবার বিস্ফোরিত হবে।</p> <p>ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত বৃহস্পতিবার জেক সুলিভানকে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছেন, হামাসের বিরুদ্ধে জয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে। তার আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী  ইওয়াভ গ্যালান্ত সুলিভানকে বলেছিলেন, গাজা যুদ্ধ আরো কয়েক মাস চলতে পারে। সুলিভান ইসরায়েলের অভিযানের পরিকল্পনা জানতে ও বেসামরিক প্রাণহানি কমাতে হামলার মাত্রা সীমিত করার আহ্বান জানাতে গিয়েছিলেন। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইসরায়েল তাঁদের আভাস দিয়েছে বর্তমানের তীব্র হামলা আর দু-তিন সপ্তাহের মধ্যেই শেষ করে সুনির্দিষ্ট সীমিত হামলা চালাবে ইসরায়েলি বাহিনী। নির্বিচার হামলা চালানোর বিষয়ে বাইডেনের অভিযোগও অস্বীকার করেছে ইসরায়েল।</p> <p><strong>আব্বাস-সুলিভান সাক্ষাৎ</strong></p> <p>ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে গতকাল সাক্ষাৎ করেছেন জেক সুলিভান। এ সময় গাজাকে ফিলিস্তিনের অবিচ্ছেদ্য অংশ বলে মন্তব্য করেছেন আব্বাস। তিনি সুলিভানকে বলেছেন, গাজার যুদ্ধ অবশ্যই বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে তিনি পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলের আক্রমণ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট আব্বাসের সঙ্গে দেখা করার জন্য ইসরায়েল থেকে দখলকৃত পশ্চিম তীরে যাওয়ার আগে সুলিভান মন্তব্য করেন, আব্বাসের নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) শাসনব্যবস্থার সংস্কার প্রয়োজন। উল্লেখ্য, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ইঙ্গিত দিয়েছেন, হামাসের সম্ভাব্য পতনের পর গাজার শাসনে তিনি পশ্চিমা সমর্থিত ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকেও দেখতে চান না।</p> <p><strong>বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতা নিয়ে সোচ্চার বিশ্ব</strong></p> <p>ফিলিস্তিন অধ্যুষিত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীদের সহিংসতার বিষয়ে ইসরায়েলকে পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্যসহ বেশ কয়েকটি অংশীদার দেশ। এক যৌথ বিবৃতিতে দেশগুলো ইসরায়েলকে অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনকারীদের রেকর্ডমাত্রার সহিংসতা মোকাবেলায় অবিলম্বে এবং দৃঢ় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের প্রকাশ করা যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সংঘটিত বসতি স্থাপনকারীদের চরমপন্থী সহিংসতার এই বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য।’ বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, অংশীদার দেশগুলো মনে করে, অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ আন্তর্জাতিক আইনে অবৈধ। বিবৃতিতে অংশ নেওয়া অন্য দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ফ্রান্স।</p> <p><strong>যুদ্ধ বন্ধে বাইডেনকে এরদোয়ানের তাগিদ</strong></p> <p>তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে ফোনে বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার ঐতিহাসিক দায়িত্ব যুক্তরাষ্ট্রের। এই কথোপকথনের বিষয়ে এক বিবৃতিতে এরদোয়ানের কার্যালয় বলেছে, তিনি বাইডেনকে বলেছেন, মার্কিন সরকার ইসরায়েলকে নিঃশর্ত সমর্থন দেওয়া বন্ধ করলে দ্রুত যুদ্ধবিরতি সম্ভব হতে পারে। তুরস্কের নেতা আরো বলেন, ইসরায়েলি হামলা দীর্ঘায়িত হলে নেতিবাচক  বৈশ্বিক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। </p> <p>সূত্র : বিবিসি, এএফপি</p>