ভারতে তাণ্ডব চালাচ্ছে করোনাভাইরাসের ওমিক্রন ধরন। এখনই ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা আট হাজার ছাড়িয়ে গেছে। করোনার এই অতি সংক্রামক ধরনকে টিকা দিয়ে থামানো যাবে কি না সে নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন গবেষকরা।
ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে মেসেঞ্জার আরএনএ টিকাতেই বেশি ভরসা রাখা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
সেরাম ইনস্টিটিউটের মতোই পুণের জনপ্রিয় টিকা প্রস্ততকারক সংস্থা জেনোভা বায়োফার্মাসিউটিক্যালস। মডার্না, ফাইজারের মতোই বার্তাবহ আরএনএ (মেসেঞ্জার আরএনএ) সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়ে টিকা তৈরি করা হয়েছে।
মার্কিন ফার্মাসিউটিক্যাল কম্পানি এইচডিটি বায়োটেক কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে টিকা বানিয়েছে জেনোভা। ল্যাবরেটরিতে এই টিকার প্রি-ক্লিনিকাল ট্রায়ালে সাফল্যের পর তিন পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমতি দেয় ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালেও সাফল্যের পথে এই টিকা। সব ঠিক থাকলে খুব তাড়াতাড়ি এই টিকা নিয়ে আসার অনুমতি দেওয়া হবে।
জেনোভা কী টিকা বানিয়েছে?
টিকা বিশেষজ্ঞ ড. গঙ্গাদীপ কং বলেছেন, জেনোভার তৈরি এই মেসেঞ্জার আরএনএ টিকা বুস্টার ডোজ হিসেবেও কার্যকরী হবে। ওমিক্রনের মতো করোনার উদ্বেগজনক ধরন নিষ্ক্রিয় করতে পারবে।
মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) সিকুয়েন্সকে কাজে লাগিয়ে টিকা ক্যানডিডেট এইচজিসিও১৯ তৈরি করেছে জেনোভা। মেসেঞ্জার আরএনএ হলো কোষের বার্তাবাহক। কোন কোষে কী প্রোটিন তৈরি হচ্ছে, তার জিনগত তথ্য বা জেনেটিক কোড শরীরের নির্দিষ্ট কোষে পৌঁছে দেওয়াই এর কাজ।
আরএনএ ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিন দিয়েই এই টিকা তৈরি হয়েছে। এমআরএনএ সিকুয়েন্সকে এমনভাবে ব্যবহার করা হয়েছে, যাতে দেহকোষে ঢুকলে সেটি ভাইরাল প্রোটিনের মতো প্রোটিন তৈরি করতে কোষকে উদ্দীপিত করতে পারে।
টিকায় থাকা জিনের বিন্যাস দেখে দেহকোষও একই রকম স্পাইক প্রোটিন তৈরি করবে। তখন সেই প্রোটিনকে ঠেকাতে শরীরের ইমিউন কোষ তথা বি-কোষ ও টি-কোষ সক্রিয় হয়ে উঠবে। বি-কোষ থেকে প্লাজমা বা রক্তরসে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে।
ইন্ডিয়ান টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি গ্রুপ অব কভিড ভ্যাকসিনের চেয়ারম্যান ড. এন কে অরোরা জানান, এই টিকার নিরাপত্তা ট্রায়ালের রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখছে ওষুধ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ। টিকার ছাড়পত্র কবে নাগাদ মিলবে, তা শিগগিরই ঘোষণা করা হবে।
সূত্র: দ্য ওয়াল ব্যুরো।