তিব্বতের সংগ্রামের জন্য যে সব মানুষ নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাদের অবদানের কথা স্মরণে বিশ্বজুড়ে তিব্বতিরা ১০ মার্চ জাতীয় তিব্বত বিদ্রোহ দিবসের ৬২তম বার্ষিকী পালন করবে। তিব্বতের ইতিহাসে আর অন্য কোনো বিষয় নেই যেটি তিব্বতের জীবনকে এত নিবিড়ভাবে স্পর্শ করে। এই দিনটি তিব্বতবাসীদের সাহস, স্থিতি ও আশার প্রতীক। দিনটি নতুন প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করে।
তিব্বতি সম্প্রদায় গত বছরও বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদ ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। ভীতি প্রদর্শন এবং সরকারি নির্দেশনা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী তিব্বতিরা ১০ মার্চ তিব্বত বিদ্রোহ দিবস ২০২০ পালন করেছিল। কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসন (সিটিএ) পাঁচটি তিব্বতীয় এনজিও দ্বারা আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলের আগে তুষালগখানায় আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান করে।
তিব্বতি যুব কংগ্রেস (টিওয়াইসি), তিব্বতী মহিলা সমিতি (টিডব্লিউএ), ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি অব তিব্বত (এনডিপিটি), গু- চু-সাম এবং শিক্ষার্থীদের জন্য মুক্ত তিব্বত (এসএফটি)-ইন্ডিয়া, নামের সংগঠনগুলি এ অনুষ্ঠান ও বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করে। এ অনুষ্ঠান সফল করে তিব্বতের অভ্যন্তরে তিব্বতিরা প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা বেইজিং দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না। তারা চ্যালেঞ্জ নির্যাতনও সহ্য করতে পারবে না যা তারা গত ছয় দশক ধরে সহ্য করতে বাধ্য হচ্ছে।
তিব্বত এমন একটি অঞ্চল যা চীনের স্বায়ত্তশাসিত তিব্বত মালভূমির বেশিরভাগ অংশজুড়ে অবস্থিত। এটি তিব্বতীয়দের ঐতিহ্যবাহী স্বদেশ। পাশাপাশি কিছু অন্যান্য জাতিগোষ্ঠী যেমন মনপা, তামাং, কিয়াং, শেরপা এবং লোবা সম্প্রদায়ের লোক এবং বর্তমানে হান চীনা এবং হুইয়েরও যথেষ্ট সংখ্যক জনগোষ্ঠীর বসবাস এখানে। চীন ১৯৫০ সালে তিব্বতের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।
তিব্বতীয় বিদ্রোহ বা তিব্বতি বিদ্রোহ শুরু হয় ১৯ মার্চ, ১৯৫৯ সালে। তখন তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের রাজধানী লাসায় বিদ্রোহ শুরু হয়। ১৯৫৬ সালে খাম ও আমদো অঞ্চলে তিব্বতি গেরিলাদের এবং পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) মধ্যে সশস্ত্র সংঘাত শুরু হয়। গেরিলা যুদ্ধ পরবর্তীকালে তিব্বতের অন্যান্য অঞ্চলেও বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি ১৯৬২ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এই বিদ্রোহের বার্ষিকীটি তিব্বতবাসীরা 'তিব্বত বিদ্রোহ দিবস' হিসাবে পালন করে।
সূত্র : জাস্ট আর্থ নিউজ
মন্তব্য