আজ বাংলাদেশে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন হলো। এখনকার বুদ্ধিজীবীরা বিচার চাইছেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সেই লোকদের, যারা একাত্তরে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার নির্দেশ দিয়েছিলো। তাহলে তো বিরাট গবেষণার কাজে সময় ব্যয় করতে হবে। কারা নির্দেশ দিয়েছিল, তারা কোথায় এখন, কেউ কি বেঁচে আছে? ক'জন বেঁচে আছে? বয়স এখন কত তাদের, বিচার পেতে পেতে কত দেরি হবে! আদৌ কি বিচার জুটবে?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অপরাধীদের মতো পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীরা তো পালিয়ে যায়নি। ওরা তো হাতের কাছেই ছিল। যুদ্ধে জেতার পর সেই একাত্তরের ডিসেম্বরেই ওদের বিচার করা হয়নি কেন? যুদ্ধাপরাধীদের কী কারণে তখন ক্ষমা করে দেওয়া হয়েছিল?
প্রায় পঞ্চাশ বছর পর হঠাৎ তাদের বিচার করার সাধ জেগেছে। সুখে থাকলে মানুষের অ-জরুরি কাজের দিকে নজর যায়। দেশে কি জরুরি কাজ নেই? দেশ তো জিহাদিদের কবলে। পাকিস্তানেও তো এত জিহাদি নেই। অন্য দেশের কে অতীতে তোমার দেশে একদা অন্যায় করেছিল, সেটা নিয়ে পড়ে থাকার বদলে এখন কারা অন্যায় করছে, তা দেখ।
এখনকার বুদ্ধিজীবীরা চোখ বড় করে অতীত দেখতে ভালোবাসেন। বর্তমানটা দেখেন চোখ বন্ধ করে। দেশে এখন দেশি যুদ্ধাপরাধীদের নাতি পুতিরা জিহাদ করছে। পাকিস্তানীদের হাত থেকে দেশ অনেক আগেই বেঁচেছে, এখন জিহাদিদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হবে। পাকিস্তানীদের হাত থেকে দেশ বাঁচানো সহজ ছিল, জিহাদিদের হাত থেকে দেশ বাঁচানো কঠিন হবে। কঠিন কাজটিতে সময় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই হাত দিন মাননীয় বুদ্ধিজীবীগণ।
-তসলিমা নাসরিনের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে
মন্তব্য