<p>পাকিস্তানে খেলতে গেলেও বাংলাদেশি ক্রিকেটারদের মন পড়েছিল বাংলাদেশে। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সমর্থন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্রিকেটার দেওয়া পোস্ট।</p> <p>মেহেদী হাসান মিরাজও ছিলেন তাদের দলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের পোস্টে জানিয়েছিলেন, রক্ত ঝরা বন্ধ হোক, আর কোনো মায়ের যেন বুক খালি না হয়। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অনেক রক্ত ঝরার সঙ্গে খালি হয়েছে মায়ের বুকও। অনেকে আবার পিতাকে হারিয়েছেন।</p> <p>পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট চলাকালীন সময় তেমনি এক ঘটনা দেখে খুবই বিচলিত হয়েছিলেন মিরাজ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এক ভিডিওতে দেখেন, একটা ছেলে তার বাবাকে হারিয়ে কান্না করছে। ছেলেটির বাবা ছিলেন একজন রিকশাচালক। ভিডিও দেখে বাংলাদেশি অলরাউন্ডার নিয়ত করেন সেই রিকশাচালকের পরিবারের জন্য কিছু করবেন তিনি।</p> <p>পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের পর রিকশাচালকের পরিবারের পাশে থাকার ঘোষণাও দেন মিরাজ। ব্যাটে-বলে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে সিরিজসেরার প্রাইজ মানি পরিবারটিকে দেওয়ার ঘোষণা দেন তিনি। সিরিজসেরা না হলেও যে পরিবারটির পাশে থাকতেন তিনি তা বিসিবির প্রকাশিত এক ভিডিওতে জানা গেছে।</p> <p>আজ বিসিবির প্রকাশিত ভিডিওতে মিরাজ বলেছেন, ‘প্রথম টেস্ট যখন চলছিল শেষ দিকের রাতের বেলা আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ছেলে কান্না করতে দেখেছিলাম। ছেলেটা আমার ছেলের বয়সের। সে কান্না করছে যে আমার বাবা মারা গিয়েছে, নামাজ পড়তে গিয়েছে, গুলি খেয়ে মারা গিয়েছে, আমি রক্ত দেখেছি। আমার বাবা ফিরে আসে না। ওই কথাগুলো আমার এখনো কানে বাজে। আমার খারাপ লেগেছিল।’</p> <p>এর পরেই পরিবারটির জন্য কিছু করবেন বলে নিয়ত করেন মিরাজ। বাংলাদেশি অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘তখনই আমি নিয়ত করেছিলাম। ম্যান অব দ্য সিরিজ হবো কি না, সেটা তো আর জানতাম না। তবে দেশে এসে ওদের কিছু সাহায্য করব, সেটা তখনই নিয়ত করেছিলাম। যেহেতু ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছি, সেটাই আমি উৎসর্গ করে দিয়েছি।’</p> <p>পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষকে ২-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করার সিরিজে ১৫৫ রান ও ১০ উইকেট নিয়ে দুর্দান্ত অবদান রেখেছেন মিরাজ। যার স্বীকৃতি হিসেবে সিরিজসেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। পুরস্কার নেওয়ার সময় তিনি ঘোষণা দেন, ‘প্রথমবার বিদেশের মাটিতে সিরিজসেরার পুরস্কার পেয়েছি। তাই আমি ভীষণ খুশি। সম্প্রতি আমাদের দেশ কঠিন সমস্যার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যারা নিহত হয়েছেন তাদের উৎসর্গ করছি সিরিজসেরার পুরস্কার। সেই সময় একজন রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন। কিছুদিন পর মারা গেছেন। পুরস্কারের অর্থ তার পরিবারকে দান করতে চাই।’</p>