<article> <p>আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিকে তিনি বিদায় জানিয়েছেন আগেই। অন্য দুই সংস্করণের মধ্যে শারীরিক কারণে টেস্ট খেলার ঝুঁকি নেওয়ার কথা তাঁর ভাবনায় উঁকি দেওয়ার কোনো কারণ নেই। সে ক্ষেত্রে বাকি থাকে কেবল ওয়ানডে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাদা বলের এই সংস্করণে তামিম ইকবালকে আবার ব্যাটিংয়ে নামতে দেখার সম্ভাবনাও ঝুলে আছে অনেক ‘যদি-কিন্তু’র ওপর।</p> <p>একবার অবসর নিয়ে তা আবার ভেঙে গত সেপ্টেম্বরে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে ফেরার পর যে জট লেগেছে, তা খোলার কোনো লক্ষণ আপাতত নেই। তাই দ্রুতই তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরতে দেখার সম্ভাবনা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়ে আসছে। তবে বিসিবির দুই জ্যেষ্ঠ পরিচালকের সঙ্গে বসে এই বছর আর না খেলার কথা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বলে যে খবর, তাতে অদূর ভবিষ্যতে ফেরার পরিকল্পনা আছে বলেও ধরে নেওয়া যায়। সে ক্ষেত্রে মাঝের সময়টা এড়িয়ে চলা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম থেকে শুরু করে নানা জায়গায় জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই।</p> <p>গত ১ মার্চ তাঁর নেতৃত্বে ফরচুন বরিশাল প্রথমবারের মতো বিপিএল জেতার পর সংবাদ সম্মেলনে তামিম নিজের জাতীয় দলে ফেরার জন্য ‘অনেক কিছু ঠিক হওয়ার’ শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন। যেটিকে ভালো চোখে দেখছেন না অনেকেই। বিসিবি পরিচালক এবং গতকাল থেকে শুরু হওয়া ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর কোচ খালেদ মাহমুদ এঁদের অন্যতম। বাংলাদেশ দলের এই সাবেক অধিনায়ক সংবাদমাধ্যমকে বলছিলেন, ‘আমরা সবাই চাই, তামিম ফিরে আসুক।</p> </article> <p>খেলতে চাইলে অবশ্যই খেলবে। কিন্তু শর্ত দিয়ে খেলবে, এই কথাটি শুনতে যেন কেমন শোনায়। আমি জাতীয় দলের হয়ে খেলব। দেশ, জাতীয় দল—এসব অনেক আগে, অনেক ঊর্ধ্বে। এখানে আসলে শর্ত থাকবে কি থাকবে না, এই কথাটি শুনতেই খারাপ শোনায়।’ মাহমুদ এই বিষয়ে মুখ খোলার অনেক আগেই অবশ্য একটি বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন তামিম, ‘পরিবর্তন আর ঠিক করা, এই শব্দ দুটোর মধ্যে পার্থক্য আছে। আমি কিন্তু বলিনি যে আমাকে ফেরানোর জন্য সব সিস্টেম পরিবর্তন করতে হবে। আমি বলেছি, আমাকে ফিরতে হলে অনেক কিছু ঠিক হতে হবে।’</p> <p>যা যা ঠিক হওয়া জরুরি বলে তামিম মনে করেন, এর একটি জাতীয় দলের হেড কোচ হিসেবে চন্দিকা হাতুরাসিংহেকে বাদ দেওয়া কি না, আলোচনা আছে তা নিয়েও। হাতুরাসিংহে থাকলে তিনি ফিরবেন না, তা কতটুকু সত্য? এমন প্রশ্নে তামিমের ছোট্ট জবাবেও চাইলে উত্তর খুঁজে নেওয়া সম্ভব, ‘আমার ফেরাটা একটু কঠিনই।’ তবে তাঁকে ফেরানোর জন্য একটি পক্ষ ভীষণ তৎপর। বোর্ড সভাপতি এবং ক্রীড়ামন্ত্রী নাজমুল হাসান থেকে শুরু করে বিসিবি পরিচালকদের একাংশের সেই সদিচ্ছা বেশ প্রকাশ্যও। কিন্তু আরেক পক্ষের নীরবতায় তামিমের কাছে নিজেকে ‘অনাহুত’ও মনে হতে পারে। সেই পক্ষটি জাতীয় দলের টিম ম্যানেজমেন্ট। দলে তামিমকে সত্যিই প্রয়োজন কি না, সেটি জানান দেওয়ার মতো আলামত এখন পর্যন্ত নেই। না হেড কোচের, না নতুন অধিনায়কের। টিভি সাক্ষাৎকারে তাঁদের দিকেও ইঙ্গিত করা বক্তব্য আছে তামিমের, ‘দলে যদি আমার কোনো প্রয়োজন থাকে বা দলের যাঁরা দায়িত্বে থাকেন, তাঁরা যদি আমার সঙ্গে কথা বলেন, তাহলে অনেক সময় সিদ্ধান্ত বদলাতেও পারে। আবার না-ও পারে।’</p> <p>গত বছর জুলাইয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ওয়ানডের পরদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে তামিমের অবসর ঘোষণা আর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তা প্রত্যাহারের পর হাতুরাসিংহে তাঁর সঙ্গে কখনোই কোনোভাবে যোগাযোগ করেছেন বলে খবর নেই। অথচ দলে কাউকে প্রয়োজন মনে করলে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার উদাহরণও আছে। চোটে পড়া পেসার এবাদত হোসেনের সঙ্গে যেটি রক্ষা করছে টিম ম্যানেজমেন্ট। নিজের ক্ষেত্রে তেমন কিছু ঘটেনি বলে দলে তিনি সাদরে গৃহীত হবেন না বলে ধরে নেওয়ার কারণ আছে তামিমেরও।</p>