<p>বল দখলে দুই দলই ছিল সমান সমান। কিন্তু কাজের কাজটা কেউই করতে পারেনি। প্রথমার্ধে নিজেদের অনেকটা গুটিয়ে রাখা ব্রাজিল দ্বিতীয়ার্ধে মুহুর্মুহু আক্রমণ চালালেও গোল পায়নি। বিরপীতে ক্রোয়েট ফুটবলাররা ডিফেন্সেই কাটিয়েছে বেশিরভাগ সময়। তাই গোলশূন্য দুই অর্ধের পর ব্রাজিল-ক্রোয়েশিয়া ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেই অতিরিক্ত সময়ের ১৫তম মিনিটে চোখ ধাঁধানো গোলে ব্রাজিলকে এগিয়ে দেন নেইমার। ছুঁয়ে ফেলেন পেলের রেকর্ড।</p> <p>আল রাইয়ানের এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচের পঞ্চম মিনিটে গোলের জন্য প্রথম শট নেয় ব্রাজিল। ভিনিসিউস জুনিয়রের শট সহজেই ঠেকান ক্রোয়াট গোলরক্ষক লিভাকভিচ। ১৩তম মিনিটে নিজেদের প্রথম ভালো সুযোগ পায় ক্রোয়েশিয়া। বল পায়ে নিজেদের অর্ধ থেকে প্রায় ডি-বক্স পর্যন্ত চলে যান ইয়োসিপ ইউরানোভিচ। কিন্তু বক্সের ভেতর বল পেয়েও মিলিতাওকে কাটিয়ে শট নিতে পারেননি ইভান পেরিসিচ।</p> <p>২০তম মিনিটে পেনাল্টি স্পটের কাছে ভিনিসিউসের শট ব্লক করেন বোর্না সোসা। কয়েক সেকেন্ড পর নেইমারের দুর্বল শট ঠেকিয়ে দেন ক্রোয়েট গোলকিপার। ৩০তম মিনিটে পেরিসিচের দূরপাল্লার শট যায় ক্রসবারের অনেক উপর দিয়ে। ৪২তম মিনিটে সুবিধাজনক জায়গায় ফ্রি কিক পায় ব্রাজিল। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নিয়ে হতাশ করেন নেইমার। গোলশূন্যভাবেই শেষ হয় প্রধমার্ধ।</p> <p>বিরতির পর তীব্র আক্রমণ শুরু করে ব্রাজিল। বক্সের ভেতর দারুণ জায়গায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। ক্রোয়েট দূর্গে মুহুর্মুহু আক্রমণ চালাতে থাকে ব্রাজিল। কিন্তু সাফল্য আসছিল না। ৪৮তম মিনিটে পেনাল্টি স্পটের কাছ থেকে নেইমারের শট ঠেকান ইয়োস্কো গাভারদিওল। এই সময় ইউরানোভিচের হাতে বল লাগলেও ভিএআরের দ্বারা পরীক্ষা করে দেখা যায়, সেটি 'দুর্ঘটনা বশতঃ' হয়েছে। তাই পেনাল্টি পায়নি ব্রাজিল।</p> <p>৫৫তম মিনিটে আবার সুযোগ পান নেইমার। রিচার্লিসনের কাছ থেকে বল পেয়ে জোড়ালো শট নিতে পারেননি। ৬৬তম মিনিটে লুকাস পাকেতার অবিশ্বাস্য মিস করেন। ডি বক্সে বল ফাঁকায় পেয়েও সামনে থাকা গোলকিপারকে পরাস্ত করতে পারেননি! ১০ মিনিট পর এগিয়ে গিয়ে নেইমারের শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান গোলরক্ষক। ৮০তম মিনিটে ডি বক্সে বল পেয়েও গোলরক্ষক বরাবর শট নেন পাকেতা। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে।</p> <p>১০৬তম মিনিটে দুই সতীর্থের সঙ্গে দেওয়া-নেওয়া করে বক্সে ঢুকে পড়েন নেইমার। অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা ক্রোয়েশিয়ার গোলকিপার দমিনিক লিভাকোভিকে কাটিয়ে নেইমার যখন খুব কাছ থেকে দুরন্ত শটে বল জালে পাঠিয়ে দেন ব্রাজিল সুপারস্টার। এটি ছিল জাতীয় দলের হয়ে নেইমারের ৭৭তম গোল। যার দ্বারা তিনি তার স্বদেশি কিংবদন্তি পেলেকে ছুঁয়ে ফেললেন। সাথে সাথে ব্রাজিল শিবিরে উল্লাসের ঢেউ ওঠে। সেমিফাইনাল অনেকে নিশ্চিত বলেই ধরে নেয়। কিন্তু সেই উল্লাস থেমে যায় কয়েক মিনিট বাদেই।</p>