<p>আমার স্বপ্ন ডাক্তার হব। ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বরিশাল জেলার আগৈরঝাড়া উপজেলার কাঠিরা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ ৫ পাই। কলেজে ভর্তির টাকা ছিল না। মানুষের সহযোগিতায় আগৈলঝাড়া সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হই। কলেজে ভর্তি হতে পারলেও বই কেনার কোনো সম্বল ছিল না। এ অবস্থায় বসুন্ধরা গ্রুপের সহযোগিতায় কালের কণ্ঠ আগৈলঝাড়া শুভসংঘের মাধ্যমে আমি বই পেয়েছি। আমি এখন হতাশামুক্ত, ডাক্তার হওয়ার নতুন করে স্বপ্ন দেখছি।  </p> <p>মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকালে আগৈলঝাড়া শুভসংঘের অস্থায়ী কার্যালয়ে বসে বই হাতে পেয়ে অশ্রুসজল চোখে কথাগুলো বলছিলেন আগৈলঝাড়া সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শান্তা হালদার। তিনি আগৈলঝাড়ার গৈলা ইউনিয়নের পশ্চিম কাঠিরা গ্রামের কাজলী হালদার ও সঞ্জয় হালদারের মেয়ে। </p> <div style="text-align:center"> <figure class="image" style="display:inline-block"><img alt="" height="600" src="https://cdn.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/2023/April/Agailjhara, Barishal. 12.04.23(3) copy.jpg" width="1000" /> <figcaption>শ্রাবন্তীও বই পেয়ে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে চান</figcaption> </figure> </div> <p>শান্তা হালদার বলছিলেন, কলেজে ভর্তি হতে পারলেও হতাশায় পড়ে যাই। কিভাবে কিনব বই, আর কলেজের বেতন দেবে কে? বাবা আমার মা ও আমাকে ফেলে চলে যায়। মামাবাড়িতে থেকে মানুষের জমিতে ও বাসায় কাজ করে আমার লেখাপড়াসহ পরিবারের খরচ চালাতেন মা, পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমি লেখাপড়ার পাশাপাশি বিভিন্ন কাজ ও ছোট বাচ্চাদের প্রাইভেট পড়িয়ে মায়ের ওষুধ, আমার পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ জোগাই। মানুষের সহযোগিতায় আমি কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু বইয়ের অভাবে আর আগাচ্ছিল না।</p> <p>শান্তার মা বলেন, আমাদের সংসারে অভাব ছিল। আমার বাবার বাড়ি গরিব বলে স্বামী আমাকে ও আমার দুই বছরের মেয়ে শান্তাকে রেখে চলে যায়। মেয়ের পরীক্ষা শুরুর আগে আমি অসুস্থ হই। এখন আর কোনো কাজ করতে পারছি না। মেয়ের আয়ের টাকা দিয়ে আমার ওষুধ ও খাবার কিনতে হয়। ওর পড়ালেখা বন্ধই হয়ে যাচ্ছিল। এমন সময় বসুন্ধরা গ্রুপ আমার মেয়েকে বই দিয়ে আমাদের উপকার করেছে। আমরা এই উপকারের কথা কোনো দিন ভুলব না। বসুন্ধরা গ্রুপ আমার মেয়ের পাসে থাকলে সে হয়তো লেখাপড়া করে ডাক্তার হতে পারব। </p> <p>এ সময় আগৈলঝাড়ার পশ্চিম সুজনকাঠি গ্রামের আব্দুস সাত্তার সর্দারের মেয়ে সরকারি শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রি কলেজে মানবিক শাখার শিক্ষার্থী শ্রাবন্তীকেও বসুন্ধরা গ্রুপের পক্ষ থেকে বই দেওয়া হয়। এ সময় শ্রাবন্তী বলেন, আমি কলেজে ভর্তি হতে পারলেও আমার হতদরিদ্র পিতা বই কিনে দিতে পারছিলেন না। বসুন্ধরা গ্রুপ আমাকে নতুন বই কিনে দেয়। বই পেয়ে আমার খুব ভালো লাগছে। </p> <p>বই বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন আগৈলঝাড়া প্রেস ক্লাব সভাপতি ও উপজেলা শুভসংঘের উপদেষ্টা সরদার হারুন রানা, আগৈলঝাড়া উপজেলা শুভসংঘের উপদেষ্টা ও কালের কণ্ঠ'র আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি এস এম ওমর আলী সানি, আগৈলঝাড়া উপজেলা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মো. সাইফুল মৃধা, আগৈলঝাড়া উপজেলা শুভসংঘের সভাপতি মো. শাহ আলোম রাঢ়ী, সহ-সভাপতি আয়কর আইনজীবী  সমিরন রায়, সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন শাহ, সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব খান, সদস্য চয়ন হালদার, রুদ্র বাড়ৈ প্রমুখ।</p>