<p>ক্যাপসিকাম বা মিষ্টি মরিচ বাংলাদেশে কম পরিচিতি একটি সবজি। এ দেশে এর চাষ কম হয়। গ্রামাঞ্চলে কম পরিচিত হলেও শহরের বাজারে এটা বেশ জনপ্রিয়। বাজারে চার রঙের ক্যাপসিকাম পাওয়া যায়। লাল, সবুজ, হলুদ এবং কমলা—প্রতিটিই স্বাদে এবং পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ। এটা শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ায় না, আমাদের স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক উপকারী।</p> <p>ক্যাপসিকাম ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। প্রতি ১০০ গ্রাম ক্যাপসিকামে পাওয়া যায় ২ গ্রাম ফাইবার, দৈনিক প্রয়োজনের ১৫০-২০০% ভিটামিন সি থাকে এতে। এতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে  ভিটামিন এ এবং বি৬, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আয়রনও থাকে।</p> <p>শর্করার পরিমাণ মাত্র  মাত্র ৬ গ্রাম। কার্বোহাইড্রেট এবং শক্তির পরিমাণ মাত্র ৩০ ক্যালরি। তাই ওজন কমাতে সাহায্য করে ও অতিরিক্ত শর্করাজনিত রোগ থেকে সহজেই মুক্ত থাকা যায়। </p> <p>আগেই বলেছি, ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এটা আমাদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে। এটি ঠাণ্ডা, জ্বর এবং ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে কার্যকর।</p> <p>ভিটামিন সি কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়। ফলে ত্বক করে মসৃণ এবং চুলের স্বাস্থ্য উন্নত করে। এ ছাড়া ক্যাপসিকামের ভিটামিন এ ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।</p> <p>লাল এবং হলুদ ক্যাপসিকামে লুটেইন এবং জিয়াজ্যানথিন নামের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। এটা চোখের মাকুলার ডিজেনারেশন রোধ করে এবং দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে। </p> <p>ক্যাপসিকামে ক্যালরি কম এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি থাকে। এতে উপস্থিত লাইকোপেন এবং পটাশিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।</p> <p>ক্যাপসিকামে ক্যারোটিনয়েড থাকে। ক্যারোটিনয়েড ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি রোধ করে এবং ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক। বিশেষ করে লাল ক্যাপসিকাম স্তন, প্রস্টেট এবং পাকস্থলীর ক্যান্সার থেকে রক্ষা করে।</p> <p>ক্যাপসিকামের ফাইবার হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।</p> <p>কম ক্যালরি এবং উচ্চ ফাইবারযুক্ত ক্যাপসিকাম ওজন কমাতে সহায়ক। এটি দীর্ঘ সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে। তাও ক্ষুধাও কম লাগে।</p> <p>ভিটামিন বি৬ মস্তিষ্কের কার্যক্রম উন্নত করে এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখে। এটি মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে কার্যকর।</p> <p><strong>যেভাবে খাবেন</strong><br /> ক্যাপসিকামের পুষ্টিগুণ বজায় রাখার জন্য অতিরিক্ত সেদ্ধ না করাই ভালো। কাঁচা ক্যাপসিকাম সালাদ, স্যান্ডউইচ বা সালাদ তৈরিতে ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া ভাজা, গ্রিল করা বা ঝলসানো ক্যাপসিকাম খাবারের সাথে পরিবেশন করা যেতে পারে।</p> <p><strong>সতর্কতা</strong><br /> ক্যাপসিকাম অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে পেটের সমস্যা যেমন, অ্যাসিডিটি বা অস্বস্তি হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে খাওয়াই ভালো।</p>