<p><strong>মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র</strong><br /> স্টোনহেঞ্জ দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা স্থাপত্য। কোনো রাজ-রাজড়াদের দুর্গ কিংবা সমাধিস্তম্ভ নয়। এর সঙ্গে ধনরত্নের ইতিহাসও জড়িয়ে নেই। ব্রিটিশরাজ একে সংরক্ষিত হিসেবে ঘোষণা করার আগ পর্যন্ত এটা সাধারণ মানুষ ব্যবহার করতে পেরেছে নানাভাবে। তাই বিভিন্ন যুগে এর ব্যবহারের ধরন বদলেছে।</p> <p><a href="https://www.kalerkantho.com/online/science/2024/09/03/1421671">আরো পড়ুন : স্টোনহেঞ্জ : স্থাপত্যের বিস্ময় : পর্ব ৫</a></p> <p>শুরুতে এটা ঠিক কী উদ্দেশ্য নিয়ে এটা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, তা জানা সম্ভব হয়নি। তবে সমাধিস্থল, তীর্থস্থান এমনকি গো-চারণভূমি হিসেবেও এর ব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তবে গবেষকদের সবচেয়ে আশা দেখিয়েছে অন্য একটা সম্ভাবনা।</p> <p>বিজ্ঞানীরা এটাকে দেখছেন মানমন্দির গবেষণার কেন্দ্র হিসেবে। অর্থাৎ স্টোনহেঞ্জ আসলে এককালের মানমন্দির। তাই বলে এখনকার মানমন্দিরের সঙ্গে তুলনা করলে চলবে না।</p> <p>এখন মানমন্দিরে বিশাল বিশাক টেলিস্কোপ থাকে, দূরনক্ষত্রের নাড়ি-নক্ষত্রের খোঁজ যেমন জানা যায় মাননন্দির থেকে, তেমনি পৃথিবী, সৌরজগৎ, গ্যালাক্সি এমনকি মহাবিশ্বের জন্ম-মৃত্যু রহস্যের কূলকিনারা করা হয় মানমন্দির থেকে। সেকালের মানুষের জন্য এসব কল্পনা করাও দুঃসাধ্য ছিল। তবু তারা মহাকাশচর্চা করত।</p> <p>আকাশের তারা দেখে দিক নির্ণয় করত নাবিকরা, দূর যাত্রার পথিকরাও। সূর্য-তারা, গ্রহ, চাঁদের উদয়-অস্ত, আকাশে তাদের অবস্থান জানা তাদের জরুরি ছিল, আবহাওয়া ঋতু পরিবর্তনের খবর আকাশের তারা দেখেই তার পেত। কিন্তু বিশাল আকাশে তার সমুদ্রে খেই হারানো খুব সহজ৷</p> <p>তাই তারা স্টোনহেঞ্জের পাথরগুলোর সাপেক্ষে কোন তারা কখন কোথায় থাকবে, সেটা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সারসেনগুলোর সঙ্গে তারাদের কৌণিক ব্যবধান, আবহাওয়া সময় সম্পর্কে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ধারণা দিত। কৃষিকাজের জন্য স্টোনহেঞ্জ মানমন্দির হিসেবে সেকালের মানমন্দির মহা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল।</p> <p>এ ছাড়া দিনের বেলাতেও বৃত্তাকারে সাজানো সারসেনগুলো মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল। সেকালের মানুষ ঘড়ি কী জিনিস জানত না। কিন্তু সময় নামের জিনিসটা, যেটা ক্রমাগত বয়েই চলেছে, সেটা সম্পর্কে সচেতন ছিল। সেই সময় নির্ণয়ের জন্য একমাত্র ব্যবস্থা ছিল সৌরঘড়ি।</p> <p>মানমন্দিরের পাশাপাশি স্টোনহেঞ্জ সৌরঘড়ি হিসেবেও ব্যবহার হতো। সারসেনগুলোর ছায়ার আকৃতি, সেই ছায়ার কোনটা কোন দিকে হেলে পড়ছে, এসব দেখে মোটামুটি সময়ের হিসাব বের করে ফেলত।</p> <p>এই স্মার্ট ওয়াচ, জিপিএস আর মোবাইল ফোনের যুগেও কিন্তু বিশেষ বিশেষ জায়গায় সৌর ঘড়ির প্রচলন আছে। ঢাকার আগারগাঁওয়ে জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরে একখানা সৌরঘড়ি আছে। আগ্রহীরা সেটা দেখে আসতে পারবেন, তাহলে কিছুটা বুঝতে পারবেন স্টোনহেঞ্জকে কিভাবে সৌরঘড়ি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।</p> <p>চলবে...<br /> সূত্র : অল অ্যাবাউট হিস্ট্রি</p>