<p>মানুষের যৌবন ধরে রাখার ইচ্ছা প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত। বিভিন্ন গবেষণায় এই প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এই বিষয়ে একটি নতুন আশার আলো দেখিয়েছেন। গবেষকরা নতুন একটি ওষুধ আবিষ্কার করেছেন। সেটা ইঁদুরের উপর পরীক্ষা করে ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে। তাঁরা আশা করছেন, এই ওষুধটি মানুষের ক্ষেত্রেও কার্যকর হতে পারে।</p> <p>গবেষণায় ব্যবহৃত ইঁদুরগুলোকে ‘সুপারমডেল গ্র্যানি’ বলে ডাকা হচ্ছে। এই ইঁদুরগুলি পরীক্ষার পর আরও স্বাস্থ্যবান ও শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল এবং তাদের মধ্যে ক্যানসার কোষের পরিমাণও কম ছিল। আগে গবেষণাগারে প্রাণীদের যৌবন ধরে রাখার জন্য খাদ্য গ্রহণ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেখা হয়েছি। ফল পাওয়া গিয়েছিল ইতিবাচক।</p> <p>বর্তমান গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা যৌবন ধরে রাখার প্রক্রিয়াটি মাইক্রোস্কোপিক স্তরে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন। ইম্পিরিয়াল কলেজ অব লন্ডন এবং সিঙ্গাপুরের ডিউক-এনইউএস স্কুল অব সায়েন্স-এর গবেষকরা `ইন্টারলিউকিন-১১' নামে একটি প্রোটিন নিয়ে গবেষণা করছেন। এই প্রোটিন বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শরীরে বৃদ্ধি পায় এবং প্রদাহ বৃদ্ধি করে, যা বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে।</p> <p>গবেষণায় দুই ধরনের পরীক্ষা করা হয়েছে। প্রথমটিতে ইঁদুরের জিন পরিবর্তন করা হয়েছে যাতে তারা এই প্রোটিন উৎপাদন করতে না পারে। দ্বিতীয়টিতে ৭৫ সপ্তাহ বয়স পার করা ইঁদুরদের একটি ওষুধ দেওয়া হয়েছে, যা তাদের শরীর থেকে প্রোটিনটি অপসারণ করে। দেখা যায়, এই প্রোটিনটি না থাকা ইঁদুররা ক্যানসারের মতো রোগ থেকে সুরক্ষিত ছিল।</p> <p>এখন প্রশ্ন হল, মানুষের ক্ষেত্রে কি একই ফল পাওয়া যাবে? ইন্টারলিউকিন-১১ প্রাথমিক শারীরিক গঠনের সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কিন্তু পরবর্তীতে এটি বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। ওষুধটি একটি অ্যান্টিবডি যা লাং ফাইব্রোসিস রোগীদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় এবং নিরাপদ বলে বিবেচিত হয়।</p> <p>তবুও, এই প্রক্রিয়াটি আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন, যাতে মানুষের ক্ষেত্রে এটি কোনও জটিলতা সৃষ্টি না করে। গবেষকরা এই প্রক্রিয়াটিকে আরও গভীরভাবে বুঝতে চাইছেন এবং এর উন্নয়নের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।</p> <p>এটি মানুষের বার্ধক্য প্রতিরোধের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হতে পারে, যা ভবিষ্যতে আমাদের জীবনের মানোন্নয়নে সহায়ক হতে পারে।<br />  </p>