<p>উত্তর হলো বংশবিস্তারের জন্য। উদ্ভিদের বংশবিস্তার নির্ভর পরায়গনের ওপর। আর এই পরাগরেণু থাকে ফুলের ভেতর। এক ফুলের পরাগ রেণু থেকে আরেক ফুলের পরাগ রেণুর সংস্পর্শে এলেই কেবল পরাগায়ন সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু এই পরাগায়ন তো এমনি হবে না। উদ্ভিদ নিজে নড়াচড়া করতে পারে না। তাই পরাগায়নের জন্য প্রাকৃতিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করতে হয়।</p> <p>কিছু ফুলের পরায়গায়ন প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল- যেমন বায়ু ও পানি। ধান-গম-খেজুর ইত্যাদি উদ্ভিদের পরাগায়ন হয় বাতাসের মাধ্যমে। তাই এসব ফুল অতটা দর্শনধারী নয়। অন্যদিকে কিছু ফুল রাতে ফোঁটে। এগুলো পতঙ্গ-পরাগায়ী। এসব ফুল সাধারণত সাদা রঙের হয়। এবং এদের তীব্র সুগন্ধ থাকে। তাই সহজেই পতঙ্গরা আকৃষ্টি হয় এবং পরাগায়ন ঘটায়। অন্যদিকে দিনের বেলা যেসব ফুল ফোটে সেগুলো রঙিন হয়। </p> <p>দিনের বেলা পোকামাকড়, বিশেষ করে মৌমাছি, প্রজাপত, এবং অন্যান্য পরাগায়ক প্রাণীরা সক্রিয় থাকে। এই পরাগায়করা ফুলের উপর নির্ভর করে তাদের খাদ্য (নেকটার) সংগ্রহের জন্য এবং ফুলের পরাগায়নের প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।<br /> দিনে ফোটে এমন ফুলের রঙ সাধারণত উজ্জ্বল হয় যেমন হলুদ, লাল, নীল, বেগুনি ইত্যাদি। এই রঙগুলি পোকামাকড়ের জন্য খুবই আকর্ষণীয়, কারণ অনেক পোকামাকড় মানুষের চেয়ে রঙের ভিন্নতা ভালোভাবে দেখতে পায়। ফুলের রঙ শুধুমাত্র পোকামাকড়দের জন্য আকর্ষণীয় নয়, বরং এটি ফুলের জন্য পরাগায়কদের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকেত প্রদান করে, যা পরাগায়ন প্রক্রিয়াকে সহজতর করে। এজন্যই দিনের আলোতে ফোটে এমন ফুলগুলির রঙ সাধারণত উজ্জ্বল এবং দর্শনীয় হয়, যা তাদেরকে আরও বেশি চোখে পড়ার মতো করে তোলে।</p> <p>ফুলের রঙ এবং ফোটার সময়কাল প্রকৃতির একটি অনন্য উপহার, যা শুধু পরাগায়কদেরই আকর্ষণ করে না, আমাদেরকেও আনন্দিত করে। দিনকালের রঙিন ফুলগুলি এই জটিল প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ার একটি উদাহরণ, যেখানে বেঁচে থাকার এবং প্রজাতির সম্প্রসারণের জন্য বিশেষ অভিযোজন বিকশিত হয়েছে। এই অভিযোজনের ফলে, প্রকৃতির এই নৈসর্গিক সৌন্দর্য আমাদের চারপাশকে আরও মনোমুগ্ধকর করে তোলে।<br />  </p>