<p>সপ্তদশ শতাব্দীতে ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতজ্ঞ আইজ্যাক নিউটন মহাকর্ষের সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দেন বেশ দৃঢ়ভাবে। যা কি না দুটো বস্তুর মাঝে পারস্পরিক আকর্ষণ নির্দেশ করে। মহাকর্ষের এই নীতি মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু অন্য বস্তুর ওপর কিছুটা প্রভাব বিস্তারকে প্রমাণ করে। সাধারণত বড় বস্তু ছোট বস্তুকে বেশি শক্তিতে নিজের দিকে আকর্ষণ করে। আর বস্তুদ্বয় যত দূরে সরে যেতে থাকে মধ্যবর্তী দূরত্ব বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেই আকর্ষণও কমে যায়। কোনো ভরের কী ওজন হবে তা মহাকর্ষ দ্বারা নির্ধারিত হয়। </p> <p>কোনো বস্তুর ওপর মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র-প্রযুক্ত বলের মানকে ওজন বা ভার বলে। তার মানে ভরের পরিবর্তন ঘটে না কিন্তু মহাকর্ষের ফলে ওজনে তারতম্য হয়। মুক্ত অবস্থা থেকে পতিত ছোট্ট একটা বস্তু কোন দিক বরাবর পড়বে তাও মহাকর্ষ বলে দেয়। বলা বাহুল্য, এই মহাকর্ষের ফলেই আমরা মহাকাশ গবেষণা করতে পারছি। বিভিন্ন মহাজাগতিক বস্তুর মহাকর্ষ বলের সাহায্যে মহাবিশ্ব চষে বেড়াতে পারছি। </p> <p>বিশালাকার রকেটে রোবোটিক প্রোব গ্রহ, উপগ্রহের মাটিতে নেমে আমাদের কাছে ছবি, ভিডিয়ো পাঠাচ্ছে। মহাকর্ষ মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে নক্ষত্রের গতি নির্দেশ করে। এবং নক্ষত্রগুচ্ছে গ্যালাক্সিগুলো আমাদের স্থানীয় গোষ্ঠীর মতো। ১৯১৫ সালে আলবার্ট আইনস্টাইনের জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি তত্ত্ব মহাকর্ষ বিষয়ে আমাদের আরেকটু সমৃদ্ধ করে। নিউটনের তত্ত্বের চেয়ে এই তত্ত্ব আরও নিখুত এবং দ্রুতই এটা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। মহাকর্ষকে এখনো আমরা সম্পূর্ণ জানতে পারিনি। কোয়ান্টাম তত্ত্বের সাথে মহাকর্ষের মিথস্ক্রিয়া পদার্থবিজ্ঞানে আজও একটা অমিমাংসিত মামলা।<br /> মহাবিশ্ব বুঝতে গেলে মহাকর্ষ বলকে জানতে হবে, বুঝতে হবে। কারণ সমস্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানের সকল বিষয়বস্তুর গতি ও মিথস্ক্রিয়ার নামই মহাকর্ষ।</p> <p><strong>পরিমণ্ডল</strong><br /> মহাজাগতিক বস্তুগুলোতে অনুভূত মাধ্যাকর্ষীয় টানের পরিবর্তনই জোয়ারের শক্তি জোগায়। চাঁদ ঠিক এই পদ্ধতিতেই নদী, সাগরে জোয়ার-ভাটার সৃষ্টি করে। মহাকর্ষ টানের প্রভাবে দুটো গ্যালাক্সির মধ্যবর্তী যত গ্যাস বা অযাচিত বস্তু আছে সেসব সরিয়ে কাছাকাছি আসে। নক্ষত্রগুলো এই আকর্ষণে কৃষ্ণগহ্বরের খুব কাছে গিয়ে তীব্র প্রভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেতে পারে। আমরা জানি, গ্যালাক্সিগুলো ধীর গতিতে নিজেদের কাছাকাছি হয়। মাধ্যাকর্ষীয় বল বৃদ্ধির ফলে গ্যাস ও নাক্ষত্রিক পুচ্ছ ‘জোয়ার’ প্রভাবে মিলিয়ে যায়। ফলে গ্যালাক্সিগুলোকে কুণ্ডলিত দেখায়।</p> <p><strong>সম্পর্কিত বিষয়</strong><br /> চাঁদ<br /> মহাজাগতিক কাঠামো<br /> উপবৃত্ত ও কক্ষপথ<br /> আপেক্ষিকতা</p> <p><strong>বিজ্ঞানী</strong><br /> <strong>আইজ্যাক নিউটন</strong><br /> ১৬৪২-১৭২৭<br /> ইংরেজ পদার্থবিজ্ঞানী।</p> <p><strong>অ্যালবার্ট আইনস্টাইন</strong><br /> ১৮৭৯-১৯৫৫<br /> জার্মান-সুইচ-মার্কিন তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> অ্যান্ডি ফ্যাবিয়ান</p>