<p>সূর্যের মতো নক্ষত্রগুলো একটা সময় পরে দৈত্যাকার নক্ষত্রে পরিণত হয়। আকারে বিশাল হওয়ার সাথে সাথে ফুলে ওঠে। ফলে নক্ষত্রের উপরিভাগের মহাকর্ষীয় টান কমে যায়। তারপর নক্ষত্রের বাইরের স্তরগুলো একটা নীহারিকার আকার দিয়ে ক্ষান্ত হয়। এমন নীহারিকা সচরাচর সুন্দর বৃত্তাকার গঠন দেয়, যা দ্বিপক্ষীয় প্রতিসাম্য হয়। নীহারিকার নামকরণে নক্ষত্রের সাবেক নামটিই রেখে দেওয়া হয়। </p> <p>উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে নীহারিকা এবং বাটারফ্লাই নীহারিকার। নীহারিকা গঠনে লাল দানব নক্ষত্রের অভ্যন্তরীণ উত্তপ্ত কোর ফাঁস হয়। এটি নীহারিকার শক্তি বাড়িয়ে দেয়। একই সাথে বিস্ময়কর বর্ণে রাঙিয়েও তোলে। উন্মুক্ত কোরটি পারমাণবিক জ্বালানি বা নিউক্লিয়ার ফুয়েলের জোগানদাতা হিসেবেই বেশি ভূমিকা রাখে। নক্ষত্রের ভেতরের এই জায়গাটি সত্যিকার অর্থে এত উত্তপ্ত হয় যে—তা ধারণার বাইরে। এর প্রভাবে শক্তিশালী বিকিরণও ঘটে সেই স্থানে। এমন চাকচিক্য বা ভয়ানক শক্তি কিন্তু বেশিক্ষণ স্থায়ী হয় না। </p> <p>নীহারিকা বিবর্ণ হয়ে ঝিমিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে সেই উত্তপ্ত অবস্থা কমতে শুরু করে। এক সময় ঠান্ডা হয়ে যায়। অস্পষ্ট, পৃথিবীর মতো আকার এবং ঘন, একটা শীতল, জড় নাক্ষত্রিক ছাই শেষে পরিণত হয় পুরো অন্ধকার অবস্থায়। এবং পরিচিতি পায় বিচ্ছিন্ন ‘শ্বেত বামন’ হিসেবে। এই বামন নক্ষত্রগুলোর ঘনত্ব এত বেশি হয় যে এর মহাকর্ষ বলের ক্ষমতা বেড়ে যায় অনেক। আর এই অতি মহাকর্ষ বলই পতনের কারণ হয়। শ্বেত বামন নক্ষত্র স্থির রাখার বিষয়টি কোয়ান্টাম মেকানিকসের এক ধরনের ‘চাপ/প্রেসার’ দিয়ে প্রকাশ করা যায়। যা ১৯২৫ সালের আগে ছিল অজানা। এই চাপের নাম ‘ইলেকট্রন ডিজেনারেসি প্রেসার’ বা ইলেট্রনের অপবর্জনজনিত চাপ। </p> <p>শ্বেত বামন নক্ষত্রগুলো প্রয়াত নক্ষত্রের অবশেষ বই আর কিছু না। যদিও এরা বেশ অস্পষ্ট, অদৃশ্য— তাই আন্তঃনাক্ষত্রিক এলাকায় খুঁজে পাওয়া দায় হয়ে যায়।</p> <p><strong>পরিমণ্ডল</strong><br /> শ্বেত বামন নক্ষত্র-তত্ত্বে অপ্রত্যাশিত একটা বৈশিষ্ট্য এই যে, ইলেক্ট্রন ডিজেনারেসি প্রেসার সব ক্ষেত্রে খাটে না। কেবল তখনই কার্যকর হয়— যখন উক্ত বামন নক্ষত্রের ভর সূর্যের ভরের ১.৪ গুণের কম হয়। এর চেয়ে বেশি ভরের নক্ষত্রের কেন্দ্র যখন শ্বেত বামন হওয়ার চেষ্টা চালায়, তখন সেই ব্যবস্থা পুরো ভেঙে পড়ে। এবং এর শেষ পরিণতি কৃষ্ণগহ্বর হিসেবেই নির্ধারিত হয়।</p> <p><strong>শ্বেত বামন সম্পর্কিত বিষয়</strong><br /> পালসার<br /> কৃষ্ণগহ্বর<br /> আণবিক মেঘ এবং নীহারিকা<br /> মেসিয়ার অবজেক্টস</p> <p><strong>জীবনী</strong><br /> সুব্রহ্মণ্যন চন্দ্রশেখর<br /> ১৯১০-১৯৯৫<br /> ভারতীয়-মার্কিন জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানী। যিনি শ্বেত বামন নিয়ে গবেষণা করেছেন।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> পল মার্ডিন<br />  </p>
