<p>আজ ২৩ মে মার্কিন গণিতবিদ এডওয়ার্ড লরেঞ্জের জন্মদিন। জন এডওয়ার্ড লরেন্স ১৯১৭ সালের এই দিনে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট রাজ্যের ওয়েস্ট হার্টফোর্ডে জন্মগ্রহণ করেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৩৮ সালে গণিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং পরবর্তীতে ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এম আইটি) থেকে আবহাওয়াবিদ্যায় পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, তিনি বিমানবাহিনীতে আবহাওয়াবিদ হিসেবে কাজ করেন। লরেন্স ২০০৮ সালের ১৬ই এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।জন্মদিনে তাঁ আবিষ্কার ‘বাটারফ্লাই ইফেক্ট’ নিয়ে বিস্তারিত লেখা হলো।</p> <p>গত শতাব্দীর ষাটের দশক। তখন মার্কিন আবহাওয়া দফতরে কাজ করেন গণিতবিদ এডওয়ার্ড লরেঞ্জ। কম্পিউটার টাইপের একটা আবহাওয়া পরিমাপক যন্ত্রে কিছু হিসাব-নিকাষ কষছিলেন তিনি। </p> <p>আদ্রতা, বায়ুচাপ, তাপমাত্রা ইত্যাদি পরিমাপ করে সেগুলোর হিসাব সেই যন্ত্রে ইনপুট করা হয়৷ ফলে সেখান থেকে একটা লেখচিত্র পাওয়া যায়। সেই লেখচিত্র থেকে পাওয়া যায় আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া। একদিন লরেন্স হিসাব-নিকাষ আর কম্পিউটারের দক্ষতা নিয়ে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করছিলেন। লরেন্স সাধারণ গাণিতিক সংখ্যা ইনপুট করতেন। অর্থাৎ আর্দ্রতা, বায়ুচাপ আর তাপমাত্রার মানগুলো ডাটা আকারে ইনপুট করতেন তাঁর যন্ত্রে। তারপর সমীকরণের সাহায্যে তিনি লেখচিত্র বের করতেন। কিন্তু ওই দিন আগে সমীকরণ ইনপুট করেছিলেন। তারপর মেশিনে জমে থাকা কিছু ডাটা ব্যবহার করেন। এই পরীক্ষার ফলফল তার জানা ছিল। তাই ফলাফল নিয়ে তিনি অতটা উত্তেজিত ছিলেন না। কিন্তু সত্যিই সত্যিই যখন ফলাফল বেরুলো, তখন চোখ কপালে উঠে গেল লরেঞ্জের। লেখচিত্র থেকে যে ফল তিনি আশা করেছিলেন, সেই ফল আসেনি! </p> <p>গ্রাফটা বদলে গেছে। বদলটার মধ্যেও একটা ছন্দ আছে। গ্রাফের শুরুতেই ছন্দপতন ঘটেনি। প্রথমে ঠিকঠাক মতোই চলেছে, কিছুদূর যাওয়ার পর ছন্দপতন। এলেমেলো হয়েছে গ্রাফচিত্রটা। একেবারে বিশৃংখল গ্রাফ যাকে বলে।</p> <p>লরেঞ্জ ভাবলেন হয়তো যন্ত্রে কোথাও ত্রুটি দেখা দিয়েছে। তিনি নানাভাবে যন্ত্রটাকে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করলেন। কিন্তু যন্ত্রের কোনো ত্রুটি তিনি পেলেন না। এবার তিনি মনোযোগ দিলেন ডাটার দিকে। যন্ত্রে যে ডাটা ইনপুট করা ছিল, ঠিক ঠিক ডাটা ব্যবহার হয়েছে কিনা সেদিকটাও যাচাই করতে গেলেন। সেটা করতে গিয়েই পেলেন এক ছোট্ট ত্রুটির দেখা। এ ধরনের ত্রুটি আমরা সচারাচর দেখা যায় না। </p> <p>আমরা সাধারণ অঙ্ক কষতে গিয়ে দশমিকের পর মাত্র দু-তিন ঘর ব্যবহার করি। পদার্থবিদ্যার সূক্ষ্ম হিসাবগুলোতেও দিব্যি কাজ চলে যায় এতে। কিন্তু লরেঞ্জ দেখলেন এখানেই বেঁধেছে ফ্যাকড়াটা। দেখলেন, যে ডাটা নিয়ে মেশিন কাজ করেছিল সেটা হলো ০.৫০৬১২৭। কিন্তু যন্ত্রটি আমাদের নিত্যদিনের হিসাবমতো দশমিকের পর তিন ঘর নিয়ে হিসাব কষেছিল।তারমানে যন্ত্রটি সংখ্যাটিকে ০.৫০৬ ধরে হিসাব কষেছিল। আর তাতেই গোলমাল লেগে গেছে। বিরাট পরিবর্তন হয়ে গেছে ফলাফলে পাওয়া গ্রাফটিতে।</p> <p>সূত্র: নিউ সায়েন্টিস্ট<br />  </p>
