<p>১৮৯৪ সাল। ফরাসি বিজ্ঞানী পিয়েরে কুরি এক অদ্ভুত কণার কথা বলেন। সেই কণাটিকে আসলে চার্জিত কণার আদলে কল্পনা করেছিলেন কুরি। তবে সেটা বৈদ্যুতিকভাবে চার্জিত নয়। সেটা আসলে চৌম্বকীয় কণা। সেই কণাটি আসলে চুম্বক এক মেরুর কথা বলে। </p> <p>চৌম্বকীয় এক মেরুটা কী?</p> <p>চার্জিত কণাদের যেকোনো একটি চার্জ থাকে। হয় ধনাত্মক চার্জ অথবা ঋণাত্মক চার্জ। সেই দুটি ধনাত্মক চার্জে চার্জিত কণা পরস্পরের কাছাকাছি এলে একে অপরকে আকর্ষণ করে। তেমনি দুটি ঋণাত্মক চার্জে চার্জিত কণা পরস্পরকে বিকর্ষণ করে। অন্যদিকে একটা ধনাত্মক চার্জে চার্জিত কণা এক ঋণাত্মক চার্জযুক্ত কণাকে আকর্ষণ করে। আকর্ষণ বা বিকর্ষণ করার সময় এদের মধ্যে বৈদ্যুতিক বল ক্রিয়া করে। এরা কুলম্বের সূত্র মেনে চলে।</p> <p>ঊনবিংশ শতাব্দীতে ব্রিটিশ বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে বিদ্যুৎ আর চুম্বককে এক সুতোই গাঁথেন। তিনি দেখালেন, চুম্বক আর বিদ্যুৎ শক্তি একই বলের এপিঠ-ওপিঠ। চুম্বকক্ষেত্রের গতি থেকে যেমন বিদ্যুৎ শক্তি পাওয়া যায়, তেমনি বিদ্যুৎক্ষেত্রকে গতিশীল থেকে এর থেকে চুম্বক শক্তি পাওয়া যায়। আর গাণিতিকভাবে এই দুই শক্তিকে এক সূত্রে পাকাপাকি গেঁথে ফেলেন স্কটিশ বিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল। এ জন্য তিনি চারটি সমীকরণ ব্যবহার করেন। এই চারটি সমীকরণ বদলে দেয় মানবসভ্যতার ইতিহাস। এই চার সমীকরণ ভবিষ্যদ্বাণী করে দৃশ্যমান আলোর বাইরেও আলো রয়েছে।  </p> <p>পরে মাইক্রোওয়েভ ও বেতার তরঙ্গের খোঁজ পান বিজ্ঞানীরা। আজকের ইলেকট্রিক্যাল আর ইলেকট্রনিকস জগৎ দাঁড়িয়েই আছে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণের ওপর। কারণ, ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণই জন্ম দেয় বিদ্যুৎগতিবিদ্যার।</p> <p>ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণ থেকে আরেকটি বিষয়ের ইঙ্গিত করে। সেটা ম্যাগনেটিক মনোপোল বা চৌম্বক এক মেরু। সেই বিষয়টাই প্রথম সামনে নিয়ে আসেন পিয়েরে কুরি। তাঁর যুক্তি ছিল, বৈদ্যুতিকভাবে চার্জিত কণারা যদি আলাদাভাবে থাকতে পারে, তাহলে চুম্বকীয় মেরুগুলো কেন নয়। </p> <p>আসলে বৈদ্যুতিক বলের জন্য যেমন কুলম্বের সূত্র আছে, চুম্বকের জন্যও রয়েছে কুলম্বের সূত্র। হিসাবটা অনেকটা একই রকম। শুধু বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে দুটি বিন্দু চার্জের কথা বলা হয়েছে, তেমনি চুম্বকের ক্ষেত্রে দুটি চৌম্বক মেরুর কথা বলা হয়েছে। </p> <p>কুলম্বের সূত্রে ভরা হয়েছে শূন্য মাধ্যমে রাখা দুটি চুম্বক মেরুর মধ্যে ক্রিয়াশীল চুম্বক বলের মান মেরু দুটির চুম্বক শক্তির গুণফলের সমানুপাতিক এবং মেরু দুটির দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। </p> <p>বিদ্যুৎ বলের সূত্রটাও অনেকটা একই রকম। কিন্তু বিদ্যুতের মতো চুম্বকের দুটি মেরু আলাদা করে পাওয়া যায় না। প্রতিটা চুম্বকেরই দুদিকে দুটি মেরুÑউত্তর আর দক্ষিণ। একটা চুম্বককে যদি কেটে আলাদা করা হয়, তবে চুম্বক দুটি আলাদা চুম্বকে পরিণত হবে। দুটো আলাদা চুম্বকেরই উত্তর আর দক্ষিণ মেরু পাওয়া যাবে। তার মানে একটা চুম্বকে যতই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র করে ভেঙে ফেলা হোক, প্রতিটা ক্ষুদ্র চুম্বকেই প্রাকৃতিকভাবে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুর জন্ম হবে। </p> <p>এই একটি ব্যাপার এখনো চুম্বক আর বিদ্যুৎকে আলাদা করে রেখেছে। কিন্তু এই চৌম্বক এক মেরুর দেখা কেন পাওয়া যাবে না, তার ব্যাখ্যা বিজ্ঞানীদের কাছে ছিল না। এ বিষয়ে সরব হন, কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরির অন্যতম কর্ণধার ব্রিটিশ বিজ্ঞানী পল ডিরাক। কোয়ান্টাম বলবিদ্যা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার চার্জযুক্ত কণিকাদের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হতো বিদ্যুৎগতিবিদ্যা দিয়ে। কিন্তু চিরায়ত বিদ্যুৎগতিবিদ্যা খুদে কণাদের আচার-আচরণ ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারে না। তাই কোয়ান্টাম বলবিদ্যার জন্ম হয়। ম্যাগনেটিক মনোপলকে ব্যাখ্যা করতে কি কোয়ান্টাম বলবিদ্যার দরকার হবে? </p> <p>চৌম্বকের এক মেরু পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না কেন, এ প্রশ্নের ব্যাখ্যা যখন চিরায়ত বিদ্যুৎগতিবিদ্যা দিতে পারছিল না, তখন পল ডিরাক ভাবলেন হয়তো কোয়ান্টাম বলবিদ্যায় এর সমাধান থাকতে পারে। সে সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার পর পল ডিরাক বললেন, প্রকৃতিতে যদি সত্যিই ম্যাগনেটিক মনোপল থাকে, তাহলে মহাবিশ্বের সকল বৈদ্যুতিক চার্জ কোয়ান্টায়িত হতে হবে। কোয়ান্টাম ম্যাকানিকসের প্রধান শর্তই হলো কণাদের চার্জিত হওয়া। বৈদ্যুতিক চার্জের উৎস যেহেতু মূল কণিকারা, তাই বৈদ্যুতিক চার্জের কোয়ান্টায়ন চরিত্র কণা পদার্থবিজ্ঞানেরই একটা অংশ। সুতরাং পল ডিরাক একটা পথ খুলে দিলে ম্যাগনেটিক মনোপল পাওয়ার সম্ভাবনার।</p> <p>এখন যে প্রশ্নটা আসতে পারে, সেটা হলো, বৈদ্যুতিক চার্জের কোয়ান্টায়িত হওয়ার ব্যাপারটা কেমন?</p> <p>এ প্রশ্নের জবাব দেয় কোয়ান্টাম তত্ত্ব। এই তত্ত্ব বলে শক্তির প্রবাহ নিরবচ্ছিন্ন ধারায় হয় না। শক্তির জন্ম, বেড়ে ওঠা, প্রবাহিত হওয়া এবং কাজ করা—সবই গুচ্ছ গুচ্ছ বা প্যাকেট আকারে। একেকটা গুচ্ছে একটা নির্দিষ্ট মানের শক্তিই জমা হয়ে থাকে। একটা শক্তি প্রবাহে অসংখ্য শক্তির প্যাকেট প্রবাহিত হয় তাই শক্তির প্রবাহকে নিরবচ্ছিন্ন মনে হয়। যখন আমরা আলোর প্রবাহ দেখি, সেটা দেখলে মনে হয়, নিরবচ্ছিন্ন আলোর প্রবাহ। আসলে আলোক রশ্মিতে অসংখ্য শক্তির প্যাকেট প্রবাহিত হয়। </p> <p>একেকটা শক্তির প্যাকেটকে আলোর কণা বা ফোটন বলে। তেমনি বিকিরণ শক্তির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। অন্য মূল কণিকাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। কণিকারা স্থির থাকে না। নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। সেসব কক্ষপথের শক্তিও নির্দিষ্ট থাকে। শক্তি অনুযায়ী কক্ষপথের ব্যাসও নির্দিষ্ট থাকে। তাই কণিকারা কিছু বিশেষ ব্যাসের কক্ষপথেই ঘুরতে পারে। যেকোনো ব্যাসের কক্ষপথে এরা থাকতে পারে না। প্রকৃতির নিয়মই এমন, চাইলেই কণারা যেকোনো কক্ষপথে ঘুরতে পারবে না। </p> <p>কণাদের নির্দিষ্ট শক্তির কক্ষপথে কিংবা শক্তিস্তরে আটকে ফেলার এই প্রক্রিয়াকে কোয়ান্টাইজেশন বা কোয়ান্টায়িত হওয়া বলে। তাই বলা যায়, পল ডিরাক ম্যাগনেটিক মনোপলকে একটা কোয়ান্টামের গ-িতে আবদ্ধ করে ফেললেন। সুতরাং চিরায়ত বিদ্যুৎগতিবিদ্যায় একে খুঁজে পাওয়া যে সম্ভব নয়, সেটাই নিশ্চিত করলেন ১৯৩১ সালে। তাই বড় বড় চুম্বকে এক মেরুত্ব খোঁজার চেষ্টা করা বৃথা।</p> <p>কিন্তু কোয়ান্টাম বলবিদ্যাও কি পেরেছে এক মেরুর খোঁজ দিতে?</p> <p>চৌম্বক এক মেরু যেহেতু কোয়ান্টাম জগতের ব্যাপার, তাই এর উৎস হবে কোনো মূল কণিকা। সেটা হবে ইলেকট্রন কিংবা কোয়ার্কের মতো চার্জিত কণাদের মতো। সেই কণাই চার্জের বদলে থাকবে একটা চৌম্বকীয় মেরু। অনেকটা এমন কথাই বলেছিলেন পিয়েরে কুরি।</p> <p>পল ডিরাক যে কোয়ান্টামের দেয়াল তুলে দিয়েছিলেন, চৌম্বক এক মেরুতে, সেই দেয়াল কেউ টপকাতে পারেননি। এমনকি এটা নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্যও হয়নি বহুদিন। গত শতাব্দীর আশির দশকে আবার গুঞ্জন তোলে ম্যাগনেটিক মনোপল। তত দিনে সুপার সিমেট্রি নামের একটা নতুন শাখার জন্ম হয়েছে পদার্থবিদ্যার জগতে। এর আগে ছিল পদার্থবিদ্যার স্ট্যান্ডার্ড মডেল। যাকে বাংলায় বলে পদার্থবিদ্যার আদর্শ মডেল। এই মডেলে মহাবিশ্বের সব কণিকাদের স্থান দেওয়া হয়েছে। সেসব কণিকার ভর, স্পিন, আচরণ, জন্মপ্রক্রিয়া ইত্যাদি ব্যাখ্যা করে এই আদর্শ মডেল। কিন্তু বাদ সাধে কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরি বা কোয়ান্টাম ক্ষেত্রতত্ত্ব। </p> <p>ক্ষেত্রতত্ত্বের বিকাশ গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার সব পুরোধা এটা নিয়ে কাজ করেছেন। শূন্যস্থানের শক্তির বিষয়টাও এসেছে এই ফিল্ড থিওরি থেকে। কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরির একটা শাখা হলো কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডাইনামিকস। চার্জিত কণাদের জন্য এই ইলেকট্রোডাইনামিকসের জন্ম। অর্থাৎ চিরায়ত বিদ্যুৎগতিবিদ্যার কোয়ান্টাম ভার্সন হলো এই কোয়ান্টাম ইলেকট্রোডাইনামিকস। যা-ই হোক, কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরি অনুযায়ী মহাবিশ্বের সব বলের পেছনে আছে একটা করে কণা আর একটা করে কোয়ান্টাম শক্তিক্ষেত্র। শক্তিক্ষেত্রের একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে স্পন্দনের কারণে জন্ম হয় একেকটি বলবাহী কণার। সেই কণাই বহন করে ওই ক্ষেত্রসংশ্লিষ্ট বল। যেমন বৈদ্যুতিক বলের জন্য আছে বিদ্যুৎক্ষেত্র। সেই ক্ষেত্রের কম্পনের ফলে জন্ম হয় ফোটন কণার। সেই ফোটন বয়ে নিয়ে যায় এক ধরনের তথ্য। দুটি চার্জিত কণার যেমন দুটি ইলেকট্রনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটলে সেই স্থানের বৈদ্যুতিক ক্ষেত্রের কম্পন ওঠে। জন্ম হয় বিদ্যুৎচুম্বকীয় বলের। সেই বল ফোটনদের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে।</p> <p>বিজ্ঞানীরা এমন আরও কিছু কোয়ান্টাম ক্ষেত্রের কথা বলেছেন। এমন আরও কিছু ক্ষেত্র আছে। যেমন হিগস ফিল্ড। এই ফিল্ডের কারণেই বস্তুকণারা ভর লাভ করে। এই ফিল্ডের সঙ্গে জড়িত আছে হিগস বোসন কণা। তেমনি মহাকর্ষ বলের জন্য আছে একটা কোয়ান্টাম ক্ষেত্র। সেই ক্ষেত্রের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গ্র্যাভিটন কণার নাম। ডার্ক ম্যাটারদের জন্যও এমন একটা ক্ষেত্র আর কণার কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু গ্র্যাভিটন কিংবা ডার্ক ফিল্ডের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ডার্ক পার্টিকেলের হদিস এখনো মেলেনি। এসব কণার স্থান হয়নি পদার্থবিদ্যার স্ট্যান্ডার্ড মডেলে। তাই নতুন সুপার সিমেট্রি তত্ত্বের অবতারণা করেন বিজ্ঞানীরা। সুপার সিমেট্রি নিয়ে এই বইয়ের আরেকটি অধ্যায়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এখন আর সে আলাপে গেলাম না।</p> <p>সুপার সিমেট্রি মডেলে পদার্থবিদ্যার স্ট্যান্ডার্ড মডেলের সকল কণার স্থান দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে অনেক নতুন কণার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন বিজ্ঞানী। স্ট্যান্ডার্ড মডেলের বেশির ভাগই কণাই অনেক হালকা। এদের মধ্যে সবচেয়ে ভারী হিগস বোসন কণা। এর চেয়ে ভারী কণার ঠাঁই স্ট্যান্ডার্ড মডেলে নেই। তাই ভারী কণাদের আচরণ ব্যাখ্যা করতে পারে না স্ট্যান্ডার্ড মডেল। অথচ সুপার সিমেট্রি দিয়ে সেসব কণার আচরণ ও বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যা করা যায়। তাই বিজ্ঞানীরা ম্যাগনেটিক মনোপল কণাদের জন্য সুপার সিমেট্রির কথা বলছেন।</p> <p>ডার্ক পার্টিকেল কিংবা ম্যাগনেটিক মনোপলের ভর অনেক অনেক বেশি। বিজ্ঞানীরা হিসাব করে দেখেছেন একটা ম্যাগনেটিক মনোপলের ভর ১০১৪ টেরা ইলেকট্রোভোল্ট। অন্যদিকে হিগস বোসনের ভর মাত্র ১৩০ গিগা ইলেকট্রভোল্ট। ১ টেরা ইলেকট্রভোল্ট ১০০০ গিগা ইলেকট্রোভোল্টের সমান!</p> <p>স্ট্যান্ডার্ড মডেলের বেশির ভাগ কণাই পাওয়া গেছে কণা ত্বরক যন্ত্রের সাহায্যে। কণা ত্বরক যন্ত্রে উচ্চ শক্তিতে ভারী কণাদের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটিয়ে এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়, সেখানে জন্ম হয় অনেক অচেনা কণারও। শক্তিশালী ডিটেক্টরের সাহায্যে সেই অচেনা কণাদের শনাক্ত করা হয়। পৃথিবীতে যত কণা ত্বরক যন্ত্র আছে, তার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ইউরোপের সার্নের লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার বা এলএইচসির। সেখানেই চেষ্টা চালানো হচ্ছে ম্যাগনেটিক মনোপলের কণা তৈরির। </p> <p>সম্প্রতি এলএইচসির বিজ্ঞানীরা ম্যাগনেটিক মনোপল তৈরির জন্য একটা প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। প্রকল্পটির নাম মনোপল অ্যান্ড এক্সোটিকস ডিটেকটর অ্যাট দ্য লার্জ হ্যাড্রন কোলাইডার বা সংক্ষেপে MoEDAL। কিন্তু এই প্রকল্প বেশি দূর এগোয়নি। এর বড় কারণ এলএইচসির শক্তি। এলএইচিতে এখন পর্যন্ত মাত্র ১০ টেরা ইলেকট্রোভোল্ট শক্তি নিয়ে কাজ করতে পারে। সেখানে ম্যাগনেটিক মনোপলের শক্তি ১০০০০০০০০০০০০০০ (একের পিঠে চৌদ্দটা শূন্য) টেরা ইলেকট্রোভোল্ট!</p> <p>তবু চেষ্টা করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। সুপার স্ট্রিং বা অতি তন্তু তত্ত্ব চৌম্বকীয় এক মেরুকে সমর্থন করে, সুপার সিমেট্রিতে তো আছেই। বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, আমাদের মহাবিশ্বের জন্মপ্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে আছে চৌম্বক এক মেরু। মহাবিস্ফোরণের পর যখন বিপুল পরিমাণ শক্তির জন্ম হয়, তার পরপরই জন্ম মৌলিক কণিকাদের, তখন চৌম্বক এক মেরুর অস্তিত্ব ছিল বলে মনে করছেন অনেক বিজ্ঞানী। </p> <p>বিজ্ঞানীরা গাণিতিকভাবে চৌম্বক এক মেরুর অস্তিত্ব নিশ্চিত করেছেন। কিন্তু বাস্তবে এখনো পাওয়া যায়নি। ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন তাঁরা। সেই দিনের অপেক্ষায় তীর্থের কাকের মতো পথ চেয়ে আছে সারা বিশ্বের বিজ্ঞানপ্রেমীরা।</p> <p><br />  </p>