<p>অস্ট্রেলিয়ায় আমাদের বাসা থেকে খানিকটা দূরে একটি উঁচু পাহাড় আছে। বাসার বারান্দায় বসেই সোজাসুজি পাহাড়টি দেখা যায়। এই পাহাড়টির নাম হলো মাউন্ট টেন্যান্ট (Mount Tennant)। পাহাড়ের উচ্চতা ১৫৭৫ মিটার। মানে দেড় কিলোমিটারের চেয়ে কিছুটা বেশি। খুব একটা কম নয়। এই পাহাড়ের উপরে উঠার বেশ কয়েকটি পথ আছে। এসব ট্রেইল ধরে অনেকেই পাহাড়ের উপরে ওঠেন। চূড়ায় পৌঁছাতে তিন থেকে চার ঘন্টা সময় লাগে। শুনেছি পথটা খুব একটা মসৃণ নয়। আমি অবশ্য এখনো চেষ্টা করিনি। দূর থেকেই ছবি তুলে যাচ্ছি। </p> <p>মজার ব্যাপার হলো, এই পাহাড়টির নামকরণ হয়েছে, জন টেন্যান্ট নামে একজন অস্ট্রেলিয়ান বুশ রেঞ্জারের নামে। এখন থেকে প্রায় ২০০ বছর আগে, উনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে, জন টেন্যান্ট এই এলাকায় ডাকাতি করে বেড়াত। সেই যুগে অস্ট্রেলিয়া ছিল ব্রিটেনের পেনাল কলোনি। ব্রিটেন থেকে দাগী আসামিদের দ্বীপান্তরে অস্ট্রেলিয়া পাঠানো হতো। এখানে এসে সাজা খাটার পর অনেকে ভালো হয়ে নরমাল জীবনযাপন করত। আবার অনেকে তাদের ক্রিমিনাল চরিত্র বদলাতে পারত না। তারা চুরি-ডাকাতিসহ বিভিন্ন ধরনের ক্রাইমের সাথে জড়িত হয়ে পড়ত। অনেকে আবার দলবদ্ধ হয়ে ডাকাতি করত। এদের অনেকে বনে জঙ্গলে আত্মগোপন করে থাকতো। সুযোগমতো লোকালয়ে এসে হানা দিত। এদেরকে বলা হতো বুশ রেঞ্জার। এদের নিয়ে অনেক কাহিনী প্রচলিত রয়েছে। </p> <p>জন টেন্যান্ট ছিল এই এলাকার দুর্ধর্ষ এক বুশ রেঞ্জার। পুলিশের তাড়া খেয়ে মাঝে মাঝে সে এই পাহাড়ে এসে লুকিয়ে থাকত। পুলিশ তাকে খুঁজে পেত না। </p> <p>সেই থেকেই এই পাহাড়ের নাম হয়েছে, মাউন্ট টেন্যান্ট। ডাকাতি করেও যে বিখ্যাত হওয়া যায়, এটা তারই প্রমাণ।<br />  </p>