<p>বিখ্যাত চিত্রশিল্পীদের পটে আঁকা ছবিতে মূল অবদান ক্রোমিয়ামের। রঞ্জক ও ছাপার কাজেও এই অবস্থান্তর মৌলটি ব্যবহৃত হয়। ক্রোমিয়াম নিজে হলুদ বর্ণের। এর উদাহরণ বলা যায় বিশুদ্ধ লেড ক্রোমেট। রুবি ও পান্নার রঙ লাল ও সবুজ; এর কারণ ক্রোমিয়ামের অবিশুদ্ধতা। সামান্য ক্রোমিয়াম অক্সাইড বর্ণহীন স্বচ্ছ ক্রিস্টাল অবস্থায় থাকে। </p> <p>১৭৯৪ সালে ক্রোকইট আকরিক নিয়ে পরীক্ষা শুরু করেন ফ্রেঞ্চ রসায়নবিদ লুই নিকোলাস ভাকুলিন। হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের সাথে বিক্রিয়ায় পান ক্রোমিয়াম ট্রাইঅক্সাইড। চার বছর পর নতুন একটি বিষয় নজরে আসে ভাকুলিনের। দেখেন কাঠের চুলায় অক্সাইড চালনা করলে ধাতব ক্রোমিয়াম পাওয়া যায়। রুবি ও পান্নাতে এভাবেই ক্রোমিয়ামের অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়। লুই নিকোলাস এই পদ্ধতি অবলম্বন করে কিছুদিন পর বেরিলিয়ামও আবিষ্কার করেন। লোহার সঙ্গে ক্রোমিয়ামের সংকর স্টেইনলেস স্টিল তৈরিতে ব্যাপক ব্যবহার হচ্ছে। ক্রোমিয়ামের ক্ষয়বিরোধী ধর্ম লোহাকে বাতাসে জারিত হতে বাধা দেয়। তাই মরিচাও পড়ে না।</p> <p>কাটলারি স্টেইনলেস স্টিলে ১৮ শতাংশ পর্যন্ত ক্রোমিয়াম থাকে। সামুদ্রিক যান বিবেচনায় এর পরিমাণ বেশিও হয়। যাহোক, ক্রোমিয়ামের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবহার এর প্লেটিং। অর্থাৎ ক্রোমিয়ামের আবরণ দ্বারা ক্ষয় হয় এমন বস্তুর সুরক্ষা নিশ্চিতকরণ। ক্রোমিয়ামের মাধ্যমে প্লেটিং-এর প্রক্রিয়াটি ১৯২০-এর দিকে বেশ সাড়া ফেলে। বেড়ে যায় ইলেকট্রোপ্লেটিং-এর বাণিজ্যকরণ। সাধারণ মানুষের মূল্যবান ধাতব জিনিস সুরক্ষায় ক্রোমিয়াম আস্থার প্রতীক হয়ে ওঠে। </p> <p><strong>দশা</strong><br /> রাসায়নিক সংকেত: Ar<br /> পারমাণবিক সংখ্যা: ২৪<br /> নামকরণ: গ্রিক ক্রোমা (বর্ণ, রং)।</p> <p><strong>বিক্রিয়া</strong><br /> চামড়া ট্যানিংয়ের অন্যতম লক্ষ্য পানি প্রতিরোধী করে চামড়ার মেয়াদ বাড়ানো। ১৯ শতকের মাঝ থেকে ক্রোমিয়াম সালফেটের দ্রবণ ট্যানিংশিল্পে ব্যবহার হয়ে আসছে চামড়ার পানি প্রতিরোধ দক্ষতা বাড়ানোর কাজে। অজৈব ক্রোমিয়াম কমপ্লেক্স ও চামড়ার কোলাজেনের মিথস্ক্রিয়ায় রসায়ন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ট্যানারির বর্জ্য ক্রোমেট লবণ হতে পারে আলসারের কারণ। বাংলাদেশের প্রধান ট্যানারিগুলোর বর্জ্য সরাসরি নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়। ফলে লবণ মানবদেহে আসার সম্ভাবনা কম নয়। ক্রোমিয়ামের অনান্য যৌগগুলো আরও বেশি বিপজ্জনক। পরিবেশের ভারসাম্যের জন্য হুমকিও বটে।</p> <p><strong>সম্পর্কিত মৌল</strong><br /> আয়রন (Fe 26)<br /> কপার (Cu 29)</p> <p><strong>বিজ্ঞানী</strong><br /> লুই নিকোলাস ভাকুলিন<br /> ১৭৬৩-১৮২৯<br /> ফ্রেঞ্চ রসায়নবিদ, ১৭৯৮ সালে ক্রোমিয়ামের সন্ধান পান।</p> <p><strong>কলিন জি. ফিঙ্ক</strong><br /> ১৮৮১-১৯৫৩<br /> মার্কিন রসায়নবিদ, কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রোম প্লেটিংয়ের সফল পরীক্ষা করেন।</p> <p><strong>বর্ণনা</strong><br /> হিউ অ্যাল্ডারসে-উইলিয়ামস</p> <p>সূত্র: থার্টি সেকেন্ড অব এলিমেন্ট/এরিক স্কেরি<br />  </p>