<p>মোমবাতি জ্বলে তাপ ও আলো তৈরি হয়। মোমবাতির জ্বলন আমাদের কাছে খুবই  সাধারণ ঘটনা মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক কার্যকারণ। </p> <p>মোমবাতি তৈরি করা হয় মোম দিয়ে। মোমের মধ্যে রয়েছে হাইড্রোকার্বন নামে একপ্রকার রাসায়নিক পদার্থ। হাইড্রোজন ও কার্বন এই দুটি মৌলিক পদার্থের সংযোগে গঠিত হয় হাইড্রোকার্বন। মোমবাতির ভেতরে সুতার তৈরি একটি সলতে থাকে। এতে আগুন ধরিয়ে মোমবাতি কে জ্বালানো হয়। তবে এর জ্বালানিটা হলো মোম। </p> <p>মোমবাতিতে আগুন দেবার সাথে সাথে কী হবে? প্রথমে কঠিন মোম গলে গিয়ে তরল হবে। তারপর তরল মোম রুপান্তিরত হবে বাষ্পতে— যে বাষ্প জ্বলতে পারে। </p> <p>কিন্তু মোমের বাষ্প জ্বলে কেন? </p> <p>মোমের বাষ্প মূলত দাহ্য বাতাসের সংমিশ্রনে তৈরি। হাইড্রোজন কে দাহ্য বাতাস বলা হয়। দাহ্য বাতাস বা দাহ্য পদার্থগুলো  আগুনের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে জ্বলে উঠে। মোমবাতির সলতের মাথায় ওই তরল মোম উঠে আসে ম্যাজিকের মতো। তবে এটি আসলে ম্যাজিক নয়। পদার্থ বিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ক্যাপিলারি অ্যাকশন। এর ফলে কোনো তরলের সংকীর্ণ পথে প্রবাহিত হওয়ার ক্ষমতা।<br /> মোমবাতির হাইড্রোকার্বনের দাহ্য বাষ্প পোড়ার ফলেই ওতে আগুন জ্বলে। বাতাসের অক্সিজেনের সাথে তরল মোম থেকে তৈরি মোমবাতির বাষ্পের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে। তখন মোমবাতি থেকে আলো ও তাপ দুটোই পাওয়া যায়। </p> <p>সত্যিই কী মোমের বাষ্প পোড়ার ফলেই মোমবাতির আগুন পাওয়া যায়? </p> <p>জলন্ত মোমবাতি ফুঁ দিয়ে নিভিয়ে দিন। তার সঙ্গে সঙ্গে একটা জ্বলন্ত দেশলাই এর কাঠি সলতের এক ইঞ্জি ওপরে ধরলে সেটা আবার দপ করে জ্বলে উঠবে। কারণ তখন মোমবাতির পলতের ওপরের দাহ্য বাষ্পে আগুন ধরে যায়। সেইসঙ্গে সলতেও আগুন জ্বলে উঠে। এতেই প্রমাণ হয় মোমের বাষ্প পোড়ার ফলেই মোমবাতির আগুন পাওয়া যায়। </p> <p>আবার মোমবাতির আগুনের শিখায় কাচের প্লেট ধরলে দেখা যাবে প্লেটের গায়ে কালো রঙের দাগ। মোমের ভেতরে যে কার্বনের রয়েছে তার প্রমাণ পাওয়া যায় এর মাধ্যমে। মোমের ভেতরের হাইড্রোজেন বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে পুড়ে পানি তৈরি করে।  সেই সাথে কার্বন আর অক্সিজেনের বিক্রিয়া তে কার্বন- ডাই- অক্সাইড গ্যাস ও তৈরি হয়। </p> <p>সূত্র: রসায়ন বিজ্ঞান/ পার্থসারথি চক্রবর্তী<br />  </p>