<p>আমাদের আশপাশে এমন কিছু মানুষ আছে, যাদের ত্বক অন্যদের ছেয়ে আলাদা। তাদের ত্বকে সাদা ছোপ ছোপ রং দেখা যায়। ত্বকের রঙের এমন তারতম্যকে শ্বেতি বা ধবল রোগ বলা হয়। এটি ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ।</p> <p>আমাদের মাঝে অনেকেই মনে করেন, এই শ্বেতি রোগ ছোঁয়াচে এবং অভিশপ্ত। তাই তারা এমন রোগীদের থেকে যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেন। সাধারণ মানুষ যেহেতু শ্বেতি রোগীদেরকে এমন চোখে দেখেন, তাই তারা নিজেদের নিয়ে সব সময় এক ধরনের হীনমন্যতায় ভোগেন। এই প্রতিবেদনে আমরা জানব কেন এই রোগ হয় এবং কাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="তেল-শ্যাম্পু ছাড়াও চুলের যত্ন নেবে যে তিন ফল" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/02/04/1738668373-8ccb53c42492011a082bd4bd377fea20.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>তেল-শ্যাম্পু ছাড়াও চুলের যত্ন নেবে যে তিন ফল</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2025/02/04/1476839" target="_blank"> </a></div> </div> <p><strong>শ্বেতি রোগ কেন হয়?</strong></p> <p>ত্বকের রোগগুলোর মধ্যে শ্বেতি রোগ অন্যতম। এই রোগে আক্রান্ত হলে আক্রান্ত স্থানটি সাদা হয়ে ত্বকের স্বাভাবিক রং নষ্ট হয়ে যায়। আমাদের ত্বকে মেলানোসাইট নামক একটি কোষ আছে, যার কাজ হচ্ছে মেলানিন উৎপাদন করা। এই মেলানিনের কারণেই আমাদের ত্বকের রঙে ফর্সা, বাদামি কিংবা অন্যান্য তারতম্য দেখা যায়।</p> <p style="text-align:center"><img alt="সংগৃহীত ছবি" height="462" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2025/02/05/my1199/মোহাইমিন/বিশ্ব ক্যান্সার দিবস (15).jpg" width="770" /></p> <p>যখন ত্বকের কোনো অংশের মেলানোসাইট কোষ ধ্বংস হয়ে যায়, তখন সেখানে মেলানিন উৎপন্ন হতে পারে না এবং মেলানিনের অভাবেই ওই অংশটি অনেকটা সাদা হয়ে যায়।</p> <p>যুক্তরাজ্যের ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক শতাংশ শ্বেতি রোগে আক্রান্ত। জনসংখ্যাবিষয়ক অনলাইন ডেটাবেজ ‘ওয়ার্ল্ড পপুলেশন রিভিউ’ (ডব্লিউপিআর) অনুযায়ী, বিশ্বের মোট জনসংখ্যা ৮০০ কোটিরও বেশি। সে হিসেবে শ্বেতি রোগীর সংখ্যা আট কোটির বেশি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মাইকেল জ্যাকসনের অপ্রকাশিত ১২টি গানের ক্যাসেট উদ্ধার" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2024/12/15/1734249863-6091fc2a1907849b32e5bba360e19b46.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মাইকেল জ্যাকসনের অপ্রকাশিত ১২টি গানের ক্যাসেট উদ্ধার</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/entertainment/2024/12/15/1457712" target="_blank"> </a></div> </div> <p>মাইকেল জ্যাকসন ১৯৬০ সালে জন্ম নিলেও ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি সময়ে এসে শ্বেতি রোগে আক্রান্ত হন। তিনি ২০০৯ সালের ২৫শে জুন মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এই রোগ তার সঙ্গী ছিল। তাকে স্মরণের উদ্দেশ্যেই দিনটিকে ‘ওয়ার্ল্ড ভিটিলিগো ডে’ হিসেবে পালন করা হচ্ছে।</p> <p><strong>শ্বেতি রোগের কারণ</strong></p> <p>ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যানুযায়ী, শরীরে মেলানিনের উৎপাদন কেন বন্ধ হয়ে যায় এবং কেন শ্বেতি রোগ হয়, সেই বিষয়টি এখনো অজানা। তবে কয়েকটি বিষয়কে এই রোগের কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়।</p> <p>প্রথমত, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিজের শরীরের বিভিন্ন সুস্থ কোষকে (মেলানোসাইট) ভুল করে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া মনে করে। ইমিউন সিস্টেম তখন শরীরকে সুরক্ষিত করতে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে অ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে মেলানোসাইট কোষকে ধ্বংস করে।</p> <p>আরেকটি কারণ হচ্ছে জিনগত পরিবর্তন। শরীরের ডিএনএ-তে (জেনেটিক মিউটেশন) কোনো পরিবর্তন এলে তা মেলানোসাইটসের কার্যকলাপকে প্রভাবিত করতে পারে।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="যে উপায়ে শরীরের অতিরিক্ত প্রোটিন কমাবেন" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/02/04/1738652456-055248e1d25b93e35052f5aaf9c56b27.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>যে উপায়ে শরীরের অতিরিক্ত প্রোটিন কমাবেন</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/lifestyle/2025/02/04/1476753" target="_blank"> </a></div> </div> <p>ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক বলছে, ৩০ টিরও বেশি জিন রয়েছে, যা ভিটিলিগো বা শ্বেতি রোগ হওয়ার ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে।</p> <p>স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তাও এই রোগের অন্যতম কারণ। কেউ ক্রমাগত মানসিক বা শারীরিক চাপে থাকলে মেলানোসাইট কোষগুলোর মেলানিন উৎপাদনের পরিমাণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে, কোনো শারীরিক আঘাতের পর অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে এটির বেশ ঝুঁকি থাকে।</p> <p style="text-align:center"><img alt="সংগৃহীত ছবি" height="480" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/share/photo/shares/online/2025/02/05/my1199/মোহাইমিন/বিশ্ব ক্যান্সার দিবস (16).jpg" width="800" /></p> <p>এ ছাড়া, অতিবেগুনী রশ্মির বিকিরণ এবং বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে থাকার কারণেও শরীরের মেলানোসাইট কোষগুলোর ক্রিয়াকলাপে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। বংশগত কারণেও শ্বেতি রোগ হতে পারে। দেখা গেছে, শতকরা ৩০ শতাংশ রোগী বংশানুক্রমে এতে আক্রান্ত হয়।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="প্রাণঘাতী ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়যোগ্য" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/02/02/1738490503-e548d8a655136992d441c15188120c70.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>প্রাণঘাতী ক্যান্সার প্রতিরোধ ও নিরাময়যোগ্য</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/prescription/2025/02/02/1475957" target="_blank"> </a></div> </div> <p>তবে কারণ যাই হোক, এটি কোনো সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগ নয় বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা সংস্থা এনএইচএস ও ক্লিভক্যান্ড ক্লিনিক।</p> <p><strong>কাদের ঝুঁকি বেশি</strong></p> <p>শ্বেতি রোগ জাতি, লিঙ্গ, বর্ণ নির্বিশেষে যে কারো যেকোনো বয়সে হতে পারে। তবে যাদের ত্বক কালো বা বাদামি, অর্থাৎ গাঢ় রং, তাদের ক্ষেত্রে ত্বকের ছোপ ছোপ সাদা অংশ বেশি দৃশ্যমান। এক্ষেত্রে সাধারণত ৩০ বছর বয়সের আগেই রংহীন বা সাদা ত্বক (ম্যাকিউলস) সুস্পষ্ট হয়ে যায়।</p> <p>তবে, ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিক বলছে, কেউ যদি আগে থেকেই অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত থাকে, তাদের ক্ষেত্রে শ্বেতি রোগ হওয়ার উচ্চ ঝুঁকি থাকে। যেমন - হরমোন উৎপাদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এডিসন’স ডিজিজ, এনিমিয়া বা রক্তশূন্যতা, টাইপ-১ ডায়াবেটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, থাইরয়েড, ইত্যাদি।</p> <div class="d-flex justify-content-center"> <div class="col-12 col-md-10 position-relative"><strong>আরো পড়ুন</strong> <div class="card"> <div class="row"> <div class="col-4 col-md-3"><img alt="মারণরোগ ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়" height="66" src="https://asset.kalerkantho.com/public/news_images/2025/02/04/1738658346-31d21a393f1c382024c8fd40439db254.jpg" width="100" /></div> <div class="col-8 col-md-9"> <p>মারণরোগ ক্যান্সার প্রতিরোধের উপায়</p> </div> </div> </div> <a class="stretched-link" href="https://www.kalerkantho.com/online/prescription/2025/02/04/1476771" target="_blank"> </a></div> </div> <p>এ ছাড়া সন্তান জন্মদানের পর শরীরের কোনো হরমোনাল পরিবর্তন হলে, কারো লিভার বা কিডনিতে সমস্যা থাকলে এবং মেলানোমা (ত্বকের ক্যান্সার) হলে শ্বেতি রোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে এনএইচএস।</p> <p>সূত্র : বিবিসি বাংলা</p>