<p>"আপনার রক্তচাপ সঠিকভাবে মাপুন, নিয়ন্ত্রণ করুন, দীর্ঘায়ু লাভ করুন’’- হচ্ছে এ বছর বিশ্ব হাইপারটেনশন এর মূল উপপাদ্য বিষয়।</p> <p>বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে, বিশ্বজুড়ে ৩০ থেকে ৭০ বছর বয়সী ১.২৮ বিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হাইপারটেনশন রয়েছে, যাদের দুই-তৃতীয়াংশ নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশে বাস করে। অ-সংক্রামক রোগের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক লক্ষ্যের একটি হলো ২০১০ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে হাইপারটেনশনের হার ৩৩% কমানো।</p> <p><strong>হাইপারটেনশন কী?</strong><br /> নামের থেকেই বোঝা যায়—যখন রক্তনালীর ওপর রক্তের চাপ বেশি থাকে। দুইদিন ধরে রক্তচাপ পরিমাপের মাধ্যমে হাইপারটেনশন নির্ণয় করা হয়। যদি সিস্টোলিক রক্তচাপ  ≥১৪০ mmHg এবং/অথবা ডায়াস্টোলিক রক্তচাপ ≥৯০ mmHg হয়, তবে হাইপারটেনশন ধরা হয়। <br /> হাইপারটেনশনের দুই ধরণ রয়েছে:<br /> ১) প্রাথমিক বা এসেনশিয়াল হাইপারটেনশন, যা ধীরে ধীরে বহু বছর ধরে তৈরি হয়।<br /> ২) সেকেন্ডারি হাইপারটেনশন, যা থাইরয়েডের সমস্যা, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার, কিডনি রোগ বা জন্মগত হৃদরোগের মতো অন্যান্য শারীরিক অবস্থার কারণে হয়।</p> <p><strong>উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকির কারণগুলো:</strong><br /> বয়স, বংশগত প্রভাব, অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা, শারীরিক নিষ্ক্রিয়তা, উচ্চ লবণযুক্ত খাবার, অতিরিক্ত অ্যালকোহল বা তামাকের ব্যবহার, ডায়াবেটিস বা কিডনি রোগের মতো বিদ্যমান স্বাস্থ্য সমস্যা, দীর্ঘস্থায়ী মানসিক চাপ এবং গর্ভাবস্থা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।</p> <p><strong>উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলো হতে পারে:</strong><br /> প্রচণ্ড মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা, ডাবল ভিশন বা চোখের দৃষ্টির সমস্যা, বুকের ব্যথা, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, নাক দিয়ে রক্ত পড়া, বিভ্রান্তি, শ্বাসকষ্ট এবং উদ্বেগ। এ ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। অধিকাংশ মানুষের জন্য লক্ষ্য হলো রক্তচাপ ১৪০/৯০ mmHg এর নিচে রাখা।</p> <p><br /> <strong>অনিয়ন্ত্রিত হাইপারটেনশনের ফলে জটিলতা হতে পারে, যেমন:</strong><br /> হৃদরোগ, স্ট্রোক, হার্ট ফেলিওর, কিডনি ক্ষতি, চোখের সমস্যা এবং ডিমেনশিয়া।</p> <p><strong>প্রতিরোধ ও চিকিৎসা:</strong><br /> জীবনযাত্রার পরিবর্তন হাইপারটেনশন প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা রাখে। যাদের হাইপারটেনশন আছে, তাদের উচিত অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার, ট্রান্স ফ্যাট বা স্যাচুরেটেড ফ্যাটযুক্ত খাবার, তামাক ও অতিরিক্ত অ্যালকোহল এড়ানো। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, সক্রিয় জীবনধারা, সঠিক ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়মিত রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ আমাদের এই রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে এবং হাইপারটেনশন-সম্পর্কিত অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতা রোধ করতে পারে।</p> <p><strong>লেখক: অ্যাসোসিয়েট কনসালট্যান্ট, <a href="https://uhlbd.com/departments/cardiology"><span style="color:#3498db">ইউনাইটেড হাসপাতাল</span></a></strong></p>