<article> <p style="text-align: justify;">শিশুর অস্থিরতা কমাতে ব্যর্থ হয়ে অনেক মা-বাবারই নাজেহাল অবস্থা হয়। একদণ্ড স্থির হয়ে না বসা, কোনো কাজে মনোযোগ না দেওয়া, স্কুল থেকে অভিযোগ আসা, কারো বাসায় গেলে জিনিস ভেঙে ফেলা বা প্রতিনিয়ত ছোটখাটো চোট পাওয়া হাইপার অ্যাক্টিভ চাইল্ডের বিশেষত্ব। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক<b> ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী, শিশুস্বাস্থ্য</b> বিভাগ, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল</p> <p style="text-align: justify;">ডাক্তারি পরিভাষায় এই আচরণগত সমস্যার নাম ‘এডিএইচডি’ অর্থাৎ ‘অ্যাটেনশন ডিফিসিট হাইপার অ্যাক্টিভ ডিস-অর্ডার’। এটির বিশেষত্ব হচ্ছে অমনোযোগ, অতিরিক্ত দুষ্টামি ও অস্থিরতা।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এসব শিশু কোনো কাজেই ধৈর্য ধরে রাখতে পারে না। এক কাজ শেষ না করেই আরেক কাজ নিয়ে মেতে ওঠে।</p> <p style="text-align: justify;"><b>কারণ</b></p> <p style="text-align: justify;">সমস্যাটির জন্য জেনেটিক ধাতকে দায়ী করা হয়। কখনো বা বিভিন্ন ‘নিউরো কেমিক্যাল ফ্যাক্টর’কে সংকট সূত্র বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">এডিএইচডির আধিক্যতা মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের প্রায় চার থেকে ছয় গুণের মতো বেশি দেখা যায়। প্রায় অর্ধেকের বেশি ক্ষেত্রে শিশুর বয়স চার বছর হওয়ার আগেই সমস্যাটি প্রকাশ পেয়ে থাকে।</p> <p style="text-align: justify;"><b>চিকিৎসা</b></p> <p style="text-align: justify;">শিশুর জন্য একটি দৈনিক রুটিন তৈরি করে দিতে হবে, যা সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করবে। যখনই সে রুটিন মেনে চলছে, তখনই তাকে উৎসাহ বা পুরস্কার দিতে হবে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">রুটিন তৈরির সময় খেয়াল রাখতে হবে, যেন তা ভালোভাবে বোঝা যায়। রুটিন মানতে শিশুকে বাধ্য করলেও তার প্রতি দরদ বজায় রাখতে হবে। ক্ষণে ক্ষণে তাগাদা দেওয়া কিংবা তাকে অতিষ্ঠ করে তোলা, ক্লান্ত করে তোলা মোটেও ঠিক নয়। খেলার পরে, কাজের মাঝে বিশ্রাম নেওয়ার সময় দিতে হবে। বিশেষ করে ঘুমানোর আগের সময়টি তার যেন নিরুপদ্রবে কাটে সে ব্যবস্থা করতে হবে।</p> </article> <article> <p style="text-align: justify;">সাংঘাতিক রকমের ডানপিটে শিশুকে নিয়ে গাড়িতে করে দূরের যাত্রায় যাওয়ার সময় সতর্ক থাকতে হবে। ঘরের দামি ভঙ্গুর ও বিপজ্জনক জিনিসপত্র শিশুর নাগালের বাইরে রাখতে হবে। টেলিভিশনে মারদাঙ্গা দৃশ্য কিংবা উত্তেজনাপূর্ণ খেলা ইত্যাদি দেখা থেকে বিরত রাখতে হবে। পড়াশোনায় ভালো ফল অর্জন করলে প্রশংসা করতে হবে এবং পুরস্কৃত করার মাধ্যমে উৎসাহ দিতে হবে। অতিমাত্রায় সমস্যা দেখা দিলে শিশু চিকিৎসায় বিহেভিয়ার থেরাপিই মুখ্য। ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করার ক্ষেত্রে শিশুর মা-বাবা, স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে পরামর্শ করতে পারেন চিকিৎসক।</p> </article>