<p>শীত আসলেই আমাদের মধ্যে প্রবণতা তৈরি হয় কম্বলের নিচে আটকে থাকার। ঘুম শরীরের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অতিরিক্ত ঘুম স্বাস্থ্যসম্মত নাও হতে পারে।</p> <p>ইউরোপীয় হার্ট জার্নালে প্রকাশিত এক নতুন গবেষণার ফল অনুযায়ী, প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য রাতে ছয় থেকে আট ঘণ্টার বেশি ঘুম প্রাথমিক মৃত্যু ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।</p> <p>গবেষণার ফলে বলা হয়েছে, ঘুম মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য এবং মানুষ দিনের প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় ব্যয় করে ঘুমের পেছনে। ঘুমের এই সময় আরো বৃদ্ধি পেলে তা কার্ডিওভাসকুলার রোগ (সিভিডি) এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ঘুমের ঘাটতি হলে তা শক্তি ব্যয় হ্রাস, ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণ ও পরিবর্তিত গ্লুকোজ বিপাকে অনিয়মের ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। আবার অত্যধিক ঘুমের ফলে বাড়ে সিভিডি বা মৃত্যুর ঝুঁকি।</p> <p>গবেষণা কাজটির জন্য চায়না'স ম্যাকমাস্টার অ্যান্ড পিকিং ইউনিয়ন মেডিক্যাল কলেজের চুয়াংশি ওয়াং-এর নেতৃত্বে একটি দল বিশ্বের সাতটি ভৌগোলিক অঞ্চলের ২১টি দেশের এক লাখ ১৬ হাজার ৬৩২ জন প্রাপ্তবয়স্কের ঘুমের তথ্য পরীক্ষা করে। গবেষণার শুরুতে বিশ্বব্যাংকের শ্রেণি বিন্যাস অনুযায়ী মাথাপিছু জাতীয় আয়ের ওপর ভিত্তি করে দেশগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।</p> <p>শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী চারটি আয়কর দেশ (কানাডা, সুইডেন, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত), ১২টি মধ্যম আয়ের দেশ (আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, চীন, কলম্বিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, ফিলিস্তিন, ফিলিপাইন, পোল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং তুরস্ক) এবং পাঁচটি নিম্ন আয়ের দেশ (বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, তানজানিয়া এবং জিম্বাবুয়ে)।</p> <p>গবেষণার প্রত্যেক স্তরে বিভিন্ন দেশের স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করে জনসংখ্যাতাত্ত্বিক বিষয়, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, জীবনধারা আচরণ (ঘুমের সময়, ধূমপান, মদ্যপান, শারীরিক ক্রিয়াকলাপ এবং খাদ্য), রোগের ইতিহাস, রোগের পারিবারিক ইতিহাস সম্পর্কে তথ্য পেতে মানসম্মত প্রশ্ন ব্যবহার করা হয়।</p> <p>গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিদিন আট ঘণ্টার বেশি ঘুমায় তাদের হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়েছে। এসব ব্যক্তির মৃত্যু হার বেড়েছে ৪১% পর্যন্ত। গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রতিরাতে ছয় ঘণ্টার বেশি ঘুমিয়েছে তাদের হৃদরোগ ও মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়েছে যারা রাতে ছয় ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছে তাদের তুলনায়।</p> <p>ওয়াং-এর উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষণার ফল অনুযায়ী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রতিদিন ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমই সর্বোত্তম। </p> <p>সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস</p>