<p>মরণব্যাধি এইডসের জন্য দায়ী জীবাণু এইচআইভির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় রকমের এক সম্ভাব্য বিজয়ের ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের বিজ্ঞানীরা।</p> <p>প্যারিসের গবেষণা সংস্থা ‘ইনস্তিতুত পাস্তুঁ’র গবেষকদের দাবি, তারা এইচআইভি আক্রান্ত প্রাণিকোষ পুরোপুরি ধ্বংস করে দিতে সফল হয়েছেন।</p> <p>এখন পর্যন্ত কোষ থেকে কোষে এইচআইভি সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল জাতীয় ওষুধ ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু সেগুলো দেহ থেকে ভাইরাসটি নির্মূল করতে পারে না।</p> <p>বৃহস্পতিবার চিকিৎসা বিষয়ক জার্নাল সেল মেটাবলিজম-এ প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে প্যারিসের গবেষকরা জানান, তারা এমন এক উপায় বের করেছেন যা ভাইরাস আক্রান্ত মূল কোষগুলোকে ভাইরাসসহ ধ্বংস করে ফেলবে।</p> <p>বিজ্ঞান ও গবেষণা বিষয়ক সংবাদ সংস্থা ইউরেকাঅ্যালার্টে প্রকাশিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইনস্তিতুত পাস্তুঁর এক মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে যে অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল প্রযুক্তি এইডসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় সেটি মূলত শরীরে এইচআইভি সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করে। দেহ থেকে ভাইরাস মেরে দূর করতে পারে না।</p> <p>ভাইরাসগুলো সিডি৪ টি লিমফোসাইট জাতীয় কোষের ভেতর আশ্রয় নিয়ে বেঁচে থাকে। এসব কোষ সহজে ধ্বংস হয় না, কারণ এদের মেটাবলিজম বা বিপাকীয় ক্ষমতা অতি উচ্চ। তাই এগুলোই এইচআইভির মূল লক্ষ্যবস্তু। এইচআইভি ভাইরাস এই কোষগুলোতে ঢুকে তাদের বিপুল শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নিজের সংখ্যা বৃদ্ধি করে।</p> <p>বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিপাকক্রিয়া নিরোধক প্রযুক্তির মাধ্যমে এবার গবেষকরা মৃত প্রাণীর দেহে এসব সংক্রমিত কোষ বা এইচআইভির ‘আধার’গুলোকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে সফল হয়েছেন।’</p> <p>এই গবেষণা ভবিষ্যতে আধার বা পোষক কোষগুলোকে নষ্ট করার মধ্য দিয়ে এইচআইভি পুরোপুরি নির্মূল করার নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।</p> <p>পরবর্তী ধাপ হিসেবে এবার জীবিত প্রাণীর দেহে এই বিপাকক্রিয়া নিরোধক প্রযুক্তির কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।</p> <p>আশা করা হচ্ছে, প্রাণিদেহে ভাইরাসের সংক্রমণ কম হয়ে থাকলে যে পোষক কোষগুলোতে এইচআইভি ভাইরাস লুকিয়ে থেকে শক্তি সংগ্রহ করে সেগুলোকে ধ্বংস করে দেয়া হলে ভাইরাস আর বাকি শরীরে ছড়াতে পারবে না। এবং একটা পর্যায়ে দুর্বল হতে হতে শরীর থেকে নির্মূল হয়ে যাবে।</p> <p>গবেষণাটিতে অর্থায়ন করেছে ইনস্তিতুত পাস্তুঁ, অ্যামফার (আমেরিকান ফাউন্ডেশন ফর এইডস) এবং সিডঅ্যাকশন।</p>