<p>২০১৯ সালের  বিশ্বকাপ ক্রিকেটের স্বাগতিক দেশ যৌথভাবে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস। বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এই আয়োজন নিয়ে খোদ ব্রিটেনে কোনো সাড়াশব্দ না থাকলেও বাংলাদেশে আদম ব্যবসায়ীরা সরব হয়ে উঠেছেন। তৈরি করছেন আদম ব্যবসার ফাঁদ।</p> <p>কিছু কিছু ইমিগ্রেশন কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিজ্ঞাপণ দিয়ে তাদের প্রচারণা চালিয়েছেন। অনলাইনে টিকেটের আবেদন করলেই লটারীতে টিকেট পাওয়া গেলে তারা যাবতীয় ব্যবস্থা করে দেবে ব্রিটেনে আসার। সাধারণ মানুষ অনেকে ধরে নিয়েছেন আমেরিকা যাওয়ার ডিবি লটারীর মতো কোন বিষয়। লটারীতে টিকেট লাগলেই  ইংল্যান্ড! বিশেষ করে বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এই প্রবণতা লক্ষনীয়। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা আছে,  ব্যাংক একাউন্ট থেকে শুরু করে সবই তারা ম্যানেজ করে দিবে। তাই স্বপ্নের লন্ডনে আসার আশায়, এই ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকেই।  যদিও ইতিমধ্যে অনেকেই এইসব  প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আবেদন করেছেন টিকেটের জন্য। </p> <p>সাধারণ নিয়মে আইসিসির ওয়েবসাইটে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। এই রেজিস্ট্রেশনের কাজটি অনেকেই জানেন না। অনেকের আবার নিজের কোনো ইমেইলও নেই। পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠানগুলো  প্রত্যেক আবেদনকারীর নতুন একটা ইমেইল এড্রেস খুলে দিয়ে তাদের কাছেই এর পাসওয়ার্ড রেখে দেয়, যাতে করে আইসিসির সব যোগাযোগ তাদের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। আর এখানেই প্রতারণার মূল ফাঁদ। </p> <p>জানা গেছে, আইসিসি কর্তৃপক্ষ কয়েক ধাপে অনলাইনে ক্রিকেট ম্যাচগুলোর টিকেট লটারি করে। ক্রিকেট ফ্রেন্ডস এন্ড ফ্যামেলি নামে প্রথমে দুই দফা টিকেট ছাড়ে যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট খেলোয়ার, কোচসহ ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের মাঝে লটারি করা হয়। সর্বশেষ লটারি করা হয় সাধারণ দর্শকদের জন্য।  সেখানে যে কেউ তার পছন্দের টিমের খেলা দেখার জন্য বিজয়ী হতে পারেন। কিন্তু তার মানে এই নয় যে খেলার টিকেট পেলেই আপনি বিমানের টিকেট কেটে খেলা দেখতে ইংল্যান্ড বা ওয়েলসে চলে আসলেন। এর মানে খেলা দেখতে আসতে হলেও আপনাকে ভিসা নিয়ে ব্রিটেনে আসতে হবে। সাধারণ  ভ্রমণ ভিসার মতোই যাবতীয় শর্তাবলী পূরণ করে আপনাকে আবেদন করতে হবে। শুধুমাত্র ভ্রমণের কারণ হিসাবে যুগ হবে বিশ্বকাপ ক্রিকেট দেখার বিষয়টি। </p> <p>কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে মনঃপুত হলে ভিসা প্রদান করতে পারে। বা না ও করতে পারে। ইংল্যান্ডে বা ব্রিটেনে যে কেউ চাইলেই, খেলার টিকেট ছাড়াও ভ্রমণ ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।  সেই ক্ষেত্রে,  ভ্রমণের কারণ, বাংলাদেশে তার সামাজিক অর্থনৈতিক অবস্থানের ওপর নির্ভর করে। পাশাপাশি যে বিষয়টি বিশেষভাবে বিশ্লেষন করে কর্তৃপক্ষ, সেটি হচ্ছে- নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে ভিসা আবেদনকারী ব্যক্তির দেশে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনার ওপর।  </p> <p>এ বিষয়ে লন্ডনের ইমিগ্রেশন আইনজীবী ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী বলেন, "যারা বিশ্বকাপ ক্রিকেট  দেখতে আসতে চান তাঁদের স্বাভাবিক নিয়মে আবেদন করেই আসতে হবে। যদি বাংলাদেশ থেকে খুব বেশী পরিমাণ আবেদন হয়, সেই ক্ষেত্রে হয়তো তারা ইন্টারভিউ এর ব্যবস্থা করতে পারে। সবচেয়ে বড় কথা, যিনি টিকেট জিতলেন তিনি আদৌ ক্রিকেট প্রেমী কী না, তার অতীতে দেশের বাইরে খেলা দেখার রেকর্ড  আছে কী না- এই সব বিষয় হোম অফিসের বিবেচনায় থাকবে। তাই এই ধরনের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রতারিত না হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।<br />    <br /> তিনি আরো বলেন, তাই যারা বিভিন্ন পরামর্শ দাতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে টিকেটের জন্য আবেদন করেছেন, তাদের চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। টিকেট পেলেও কোনো অবস্থায়ই অগ্রীম টাকা-পয়সা লেনদেন করা যাবে না। </p> <p>উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে  ৩০ মে থেকে শুরু হয়ে ১৫ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০টি দেশ অংশ নিবে।</p>