<p>অপরাধ বিজ্ঞানীদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিমিনোলজিস্টসের উদ্যোগে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘পুলিশ সংস্কার কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের চতুর্থ তলার কনফারেন্স কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।</p> <p>সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোমালিয়ার দারুসসালাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ আসিফ এস. মিজান, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ড. মুহাম্মদ বিন কাসেম, অধ্যাপক সমাজবিজ্ঞান বিভাগ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।</p> <p>সভায় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দ বিষয়ভিত্তিক সংস্কার প্রস্তাব করেন। প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- ১৮৬১ সালের আইন বিডিও প্রভৃতি সমূহসহ প্রচারিত পুলিশের আইন ও বিধির পরিবর্তন, পুলিশকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের চেতনায় গড়ে তোলার জন্য রাজনৈতিক প্রভাবমুক্তকরণের লক্ষ্যে একটি জাতীয় সেফটি কমিশন অথবা পুলিশ কমিশনের অধীনে ন্যস্তকরণ, পুলিশের জবাবদিহিতা এবং পুলিশের নিজস্ব অভিযোগ নিরসনকল্পে জাতীয় কমিশনের অধীনে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন, পুলিশের সমস্যা সমাধানকল্পে কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিকারের ব্যবস্থাকরণ, দুর্নীতি প্রতিরোধে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পদের বছরভিত্তিক হিসাব যাচাইকরণ, ফোর্স ও বাহিনীর দ্বৈত চরিত্র দূরীকরণের লক্ষ্যে কাঠামোগত সংস্কার, নিয়োগ বদলি।</p> <p>এছাড়া প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে- পদায়নে পেশাগত আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি প্রণয়ন ও অনুশীলন মনিটরিং একাউন্টেবিলিটি নিশ্চিত কল্পে ঊর্ধ্বতন অধস্তন সব পর্যায়ের সদস্যদের জন্য কাঠামো তৈরি, পুলিশের দায়িত্ব পালনের জন্য পালাক্রমে ডিউটি অনুসরণ এবং স্ব স্ব পালার জন্য সুপারভাইজার নিয়োগ, পুলিশের জন্য স্থায়ী কমিশন গঠন করে সিআইএ পদ্ধতির পুলিশিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, পুলিশের আবাসন, শারীরিক মানসিক স্বাস্থ্য, প্রশিক্ষণ, পুলিশের জন্য প্রয়োজনীয় বরাদ্দ বৃদ্ধি, জনতা-পুলিশ সম্পর্ক সৃষ্টির জন্য কাঠামো তৈরি, অপরাধ-বিচার ব্যবস্থাপনার সংস্কার, কর্মপরিবেশ উন্নতকরণ, নৈতিক ও পেশাগত প্রশিক্ষণ, পুলিশ প্রধানের পথকে সংবিধিবদ্ধকরণ, কাস্টমার ক্লায়েন্ট সম্পর্কের ভিত্তিতে সেবা কাঠামো প্রস্তুতকরণ, তদন্ত নির্ভর পুলিশিং চালুর লক্ষ্যে তদন্ত পুলিশ ও জন শৃঙ্খলা পুলিশ আলাদা করণ, অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রয়োগ নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আইনিবাধ্যবাদকতা  সৃষ্টি, শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা ব্যবস্থা ইত্যাদি সংস্কার বিষয়ক অন্তর্ভুক্ত করো ইত্যাদি।</p> <p><br /> প্রধান অতিথি ড. শেখ আসিফ এস. মিজান বাংলাদেশ পুলিশকে জনবান্ধব করতে রাজনৈতিক প্রভাব দূর করা, গঠিত কমিশন সংস্কারকরণ, গঠিত কমিটিতে পুলিশ বিষয়ক একাডেমিশিয়ান বিচারপতি ও পুলিশ সদস্যদের অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করে বলেন, ‘পুলিশকে আমলা কেন্দ্রিক ব্যবস্থাপনার বাইরে এনে স্বাধীন কর্তৃপক্ষের অধীনে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন।’</p> <p>বিশেষ অতিথি প্রফেসর ড. মুহাম্মদ বিন কাসেম বলেন, ‘শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা অব্যাহত রেখে পুলিশের দৈনন্দিন সমস্যার সমাধানকল্পে স্থায়ী পুলিশ কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। পুলিশের প্রশিক্ষণ কারুকলাম উন্নতকরণ, দক্ষতা বৃদ্ধি, পুলিশ কাস্টুডি, পুলিশ রিমান্ড, পদ-সোপান হালনাগাদ করুন শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ রেখে পুলিশের আধুনিকায়নে ও সংস্কারে কাজ করা যেতে পারে।’</p> <p>বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিমিনোলজিস্টস সভাপতি মহাম্মদ শাহজাহান মতবিনিময়সভার প্রস্তাবগুলো গঠিত কমিশন সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ করেন।</p> <p>মতবিনিময়সভায় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যবৃন্দসহ, শিক্ষাবিদ গবেষক ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম দস্তগীর।</p>